মঙ্গলবার ভোরে চিকমাগালুর জেলার গুনাসাগর গ্রামে রেলওয়ে লাইনের ধারে পাওয়া গেল কর্নাটকের বিধান পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান এস এল ধর্মেগৌড়ার দেহ। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। মিলেছে সুইসাইড নোট। কিন্তু আত্মহত্যার কারণ নিয়ে ইতিমধ্যেই পারদ চড়ছে রাজ্য রাজনীতিতে। জেডিএস নেতার মৃত্যু আসলে রাজনৈতিক হত্যা বলে মনে করছেন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী।
৬৫ বছরের গৌড়ার সঙ্গে বিধান পরিষদে অভব্য আচরণ করেন একাংশ। তার জেরেই এই আত্মহত্যা বলে মনে করছে তাঁর দল। পুলিশ জানিয়েছে যে সোমবার বিকালে নিজের নিরাপত্তারক্ষী ও এসকর্টকে পাশ কাটিয়ে ড্রাইভারের সঙ্গে গাড়ি করে গুনাসাগরে আসেন তিনি। এরপর ড্রাইভারকে বলেন কিছু দূরে অপেক্ষা করতে কারণ তাঁর কারও সঙ্গে দেখা করার আছে। শেষ ফোন করেন হেমন্ত বলে এক বন্ধুকে যার কাছে ট্রেনের সময়সূচী জেনে নেন তিনি। রাতেও যখন তিনি বাড়ি ফেরেননি, তখন পুলিশে খবর দেয় বাড়ির লোক। মোবাইলের সিগন্যাল ট্র্যাক করে মানকেনহালি রেলওয়ে স্টেশনের কাছে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। শরীর থেকে ট্রেনের অভিঘাতে ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল মাথা ও একটি হাত। এরপর পোস্টমর্টম করার পর দেহটিকে কবর দেওয়া হয়।
কুমারস্বামীর দাবি যেভাবে গৌড়ার সঙ্গে কিছু লোক পরিষদে আচরণ করেছিলেন, তাতেই অপমানিত বোধ করেন তিনি। এটি সুইসাইড নয় বরং রাজনৈতিক খুন, বলে দাবি তাঁর। একদিনের বিধান পরিষদের অধিবেশনে বিজেপি ও জেডিএস একসঙ্গে পরিষদের চেয়ারম্যান প্রতাপচন্দ্র শেট্টিকে সরানোর চেষ্টা। চেয়ারম্যান কংগ্রেসের নেতা। সেই সময় চেয়ারে ছিলেন ধর্মেগৌড়া। তাঁর ওপর চড়াও হয় কিছু কংগ্রেস সদস্য। পরে প্রক্রিয়াগত ত্রুটির অজুহাত দেখিয়ে প্রস্তাবটি খারিজ করে দেন চেয়ারম্যান। তবে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খারিজ করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদারামাইয়া। গৌড়ার পরিবার তাঁর ঘনিষ্ঠ ছিল বলেই দাবি করেন তিনি। ওই অধিবেশনের পৌরহিত্য করতে গৌড়ার ওপর কারা চাপ দিয়েছিলে, সেই প্রশ্ন করেন তিনি।
রাজস্বমন্ত্রী অশোকের দাবি যে সুইসাইড নোটে পুরো ঘটনার কথা লিখে গিয়েছেন গৌড়া। তদন্ত হলেই পুরো বিষয়টি প্রকাশ্যে আসবে বলে তাঁর দাবি। কুমারস্বামী ঘনিষ্ঠ এই নেতা রাজনৈতিক পরিবারের অংশ ছিলেন। তাঁর বাবা ছিলেন তিন বারের বিধায়ক। গৌড়া একবার বিধায়ক হয়েছিলেন। তাঁর ভাই ভজেগৌড়াও বিধান পরিষদের সদস্য। ভাইয়ের দাবি ব্যক্তিগত বা আর্থিক কোনও সমস্যা ছিল না তাঁর দাদার। কিন্তু বিধান পরিষদে হওয়া ঘটনাটি গভীর প্রভাব ফেলেছিল তাঁর মনে। ভজের দাবি যে তাঁরা বলেছিলেন ধর্মগৌড়াকে ওই ঘটনাটি নিয়ে না ভাবতে। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। পুলিশ মৃত্যুর তদন্ত করছে কিন্তু এখনও নোটে কী তিনি লিখে গিয়েছেন, সেটা জানানো হয়নি।