চিন ও আমেরিকার সম্পর্ক সাম্প্রতিককালে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। তবে বর্তমান বিশ্বের দুই সুপারপাওয়ারের মধ্যে জমে থাকা বরফ গলাতে গতকাল মিলিত হন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। অনেক বিষয়ে আলোচনা হয় জো বাইডেন এবং শি জিনপিংয়ের। সেই বৈঠকে তাইওয়ান ইস্যুতে জিনপিং কড়া অবস্থান নেন। তবে উচ্চ পর্যায়ে সামরিক আলোচনায় সহমত হয়েছেন দুই নেতাই। এই আবহে চিন ও আমেরিকার সম্পর্কের চিড় কিছুটা মেরামত করা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছিল। তবে সেই বৈঠক শেষ হতে না হতেই জিনপিংকে 'একনায়ক' আখ্যা দিয়ে বসলেন বাইডেন। (আরও পড়ুন: 'তদন্তের সম্ভাবনা ওড়াচ্ছি না...', নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে এবার কোন সুর জয়শংকরের গলায়)
গতকাল বাইডেন এই নিয়ে বলেন, 'দেখুন, আমি বলতে চাইছি যে তিনি (চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং) একজন স্বৈরশাসক। তিনি এই অর্থে একনায়ক, যে তিনি একা নিজের দেশ চালাচ্ছেন, একটি কমিউনিস্ট দেশ। আমাদের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা ভাবে সরকার গঠন হয় সেখানে।' এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, বৈঠকে তাইওয়ান নিয়ে বাইডেনকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন জিনপিং। দাবি করা হয়, জিনপিং নাকি গতকাল বাইডেনকে বলেন, 'তাইওয়ানকে অস্ত্র সরবরাহ করা বন্ধ করতে হবে আমেরিকাকে। চিনের শান্তিপূর্ণ একীকরণকে বাধা দেওয়া যাবে না। চিনের একীকরণ হবেই। এটা কেউ ঠেকাতে পারবে না।'
এদিকে তাইওয়ান নিয়ে আমেরিকাকে কড়া বার্তা দিলেও কিছুটা 'সুর নরম' করেছে চিন। উচ্চ পর্যায়ে সামরিক আলোচনা শুরু করার বিষয়ে দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানই সহমত হয়েছেন। এদিকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে কাজ করার জন্য দুই দেশ যৌথ ভাবে ওয়ার্কির গ্রুপ গঠনের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে আগামী বছরই ফের দুই দেশের মধ্যে সরাসরি যাত্রীবাহী বিমান পরিষেবা চালু করা হতে পারে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বৈঠকে। এদিকে বৈঠকে নাকি শি জিনপিং বাইডেনকে বলেন, 'আমেরিকাকে শীর্ষস্থান থেকে সরানোর কোনও অভিপ্রায় চিনের নেই। তবে আমেরিকা যদি চিনকে দমানোর চেষ্টা করে, তা উচিত হবে না।' এদিকে জিনপিং বলেন, 'সাম্রাজ্যবাদের পথে চিন হাঁটবে না। দেশ শক্তিশালী হচ্ছে। তাই আমরা বিশৃঙ্খলার পথ অনুসরণ করব না।'
এদিকে আমেরিকার আরোপিত নিষেধাজ্ঞার জেরে যে চিন বিরক্ত, গতকালকের বৈঠকে বাইডেনকে তা স্পষ্ট ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন জিনপিং। শি বলেছেন, 'চিনের রফতানি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, বিনিয়োগের ওপর নজরদারি চালানো হচ্ছে, একতরফা ভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। চিনের জন্যে এসব ক্ষতিকারক হচ্ছে। চিনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতকে দমানোর চেষ্টা চলছে। চিনা মানুষদের উন্নয়নের অধিকারকে খর্ব করা হচ্ছে এতে।'