রাজ্যের ১০০ দিনের বকেয়া টাকা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। চিঠিতে কংগ্রেস নেতা লিখেছেন, ২০২২ সাল থেকে বাংলার ১০০ দিনের কাজের টাকা দেয়নি মোদী সরকার। এর ফলে কয়েক লক্ষ জব কার্ড হোল্ডাররা বিপাকে পডেছেন। জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে তাদের পরিযায়ী শ্রমিক হতে হচ্ছে।
১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রাখার বিরুদ্ধে লাগাতার দাবি জানিয়ে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও একাধিকবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। দিল্লিতে গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই দাবিতে সরব হয়েছেন। বঞ্চিতদের চিঠি নিয়ে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে দরবারও করতে যান তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং দলের সাংসদ বিধায়করা। পরে রাজভবনের সামনে ধর্নায়ও বসেন অভিষেক।
এই বঞ্চনার অভিযোগে গত সপ্তাহ থেকে রেড রোডে ধর্না শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ধর্না শুরুর আগে একশো দিনের কাজের জন্য পাওনা টাকা থেকে বাংলা যে বঞ্চিত হচ্ছে, সে কথা স্বীকার করে নেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এখানে কলকাতায় ধরনা দিয়ে কোনও লাভ নেই। কেউ দেখতে আসবে না।’ তিনি যোগ করেন, এই দাবি নিয়ে দিল্লিতে ধরনা দিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে সমর্থন জানিয়ে হাজির থাকবে কংগ্রেসও। তবে এই পাওনা আদায়ের দাবিতে রাজ্য কেন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছে না সেই প্রশ্নও তুলে ধরেন কংগ্রেস সাংসদ।
সম্প্রতি ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গে আসনে রাহুল। সেই সময় একশো দিনের কাজের জব কার্ড হোল্ডারদের একটি প্রতিনিধি দল তাঁর সঙ্গে দেখা করে।
সেই কথা চিঠিতে উল্লেখ করে রাহুল লিখেছেন, তহবিল না আসার ফলে মনরেগার শ্রমিক সংখ্যাও ক্রমশ কমছে। চিঠিতে তিনি পরিসংখ্যান দিয়ে লিখেছেন, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে রাজ্য মনরেগা শ্রমিক সংখ্যা ছিল ৭৫ লক্ষ। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র আট হাজারে। কাজ না থাকার ফলে বাধ্য হয়ে শ্রমিকরা ভিন রাজ্যে চলে যাচ্ছেন।
প্রশ্ন হল, আসন সমঝোতা নিয়ে দূরত্ব তৈরি হয়েছে কংগ্রেস-তৃণমূলের রাহুল গান্ধীর এই চিঠির পর কি সেই দূরত্ব কমবে? রাজ্যের বকেয়া টাকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইন্ডিয়া জোট শরিক কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী প্রথমবার বকেয়া টাকা নিয়ে চিঠি লিখলেন প্রধানমন্ত্রীকে। সম্পর্কের শীতলতার মাঝে তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।