ঘুষ মামলায় আরও চাপে পড়ে গেলেন মহুয়া মৈত্র। শিল্পগোষ্ঠী হিরানন্দানির সিইও দর্শন হিরানন্দানির দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বদনাম করতে আদানি গ্রুপকে 'টার্গেট' করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ। আদানি গোষ্ঠীকে চাপে ফেলার মতো প্রশ্ন তৈরি করে দেওয়ার জন্য তাঁকে সংসদের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন। পরিবর্তে তাঁর থেকে মহুয়া বিলাসবহুল জিনিসপত্র নিতেন বলে দাবি করলেন হিরানন্দানি। যে হিরানন্দানিই সংসদে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রশ্ন করার জন্য কৃষ্ণনগরের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদকে অর্থ ও উপহার দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও হিরানন্দানির যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মহুয়া। তাঁর পালটা দাবি, হিরানন্দানির মাথায় 'বন্দুক' রেখে তাঁদের ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন মোদী। সেজন্য এথিক্স কমিটি বা সিবিআই তলব না করলেও নিজেই একটি বয়ান প্রকাশ করেছেন।
যে বয়ানের কথা বলেছেন মহুয়া, তা বৃহস্পতিবার রাতের দিকে সামনে এসেছে। স্বাক্ষর করা ওই হলফনামায় হিরানন্দানি দাবি করেছেন, সবথেকে কম সময় জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে দ্রুত পরিচিতি পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আক্রমণ করার পথ বেছে নেন মহুয়া। কিন্তু স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কারণে নীতি সংক্রান্ত বিষয়, প্রশাসনিক বিষয় বা ব্যক্তিগত আচার-আচরণের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আক্রণের কোনও সুযোগ পাচ্ছিলেন না বিরোধীরা। সেজন্য আদানি গোষ্ঠীর মাধ্যমে মহুয়া প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আক্রমণের পন্থা বেছে নেন বলে দাবি করেছেন হিরানন্দানি।
হিরানন্দানি দাবি করেছেন, ২০১৭ সালে বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে মহুয়ার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। সেইসময় বিধায়ক ছিলেন মহুয়া। পরবর্তীতে তাঁর সঙ্গে একাধিকবার দেখা হতে পারে। তারইমধ্যে ২০১৯ সালে সাংসদ হন মহুয়া। তিনি জানতেন যে হিরানন্দানি গোষ্ঠীর পরিবর্তে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ থাকা ধর্মা এলএনজির সঙ্গে চুক্তি করেছে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন। আদানি গ্রুপকে অস্বস্তিতে ফেলার জন্য কয়েকটি প্রশ্ন তৈরি করেছিলেন। যে প্রশ্নগুলি সংসদে করতেন। সেই বিষয়ে সাহায্য করার জন্য তাঁকে সংসদের লগইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন। সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন বলেও দাবি করেছেন হিরানন্দানি।
ওই হলফনামায় দাবি করেছেন, ক্রমশ মহুয়ার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো হতে থাকে। শশী থারুর, পিনাকি মিশ্রের মতো বিরোধী নেতাদের তাঁর সম্পর্ক খুব ভালো ছিল। সেই পরিস্থিতিতে তাঁর থেকে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া করতে থাকেন মহুয়া। কখনও কখনও মনে হত যে তাঁর অহেতুক সুবিধা নিচ্ছেন তৃণমূল সাংসদ। তাঁর উপর চাপও তৈরি করতে থাকেন। মহুয়ার কথা মতো চলতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু এখন বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হওয়ায় তিনি নিজে থেকেই মুখ খুলেছেন বলে দাবি করেছেন হিরানন্দানি।
আরও পড়ুন: Mahua Moitra: নিশিকান্ত আর প্রাক্তন বয়ফ্রেন্ডকে ডেকে পাঠাল এথিক্স কমিটি, মহুয়া কি অস্বস্তিতে?
যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মহুয়া। তৃণমূল সাংসদের দাবি, হিরানন্দানির 'মাথায় বন্দুক' ঠেকিয়ে হুমকি দিয়েছেন মোদী। তাঁদের ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। প্রতিটি রাজ্যে হিরানন্দানিদের প্রচুর বিনিয়োগ আছে। যেনতেন প্রকারেণ বিজেপি তাঁকে ফাঁসাতে চাইছে বলে দাবি করেছেন তৃণমূল সাংসদ।