অসমে ভারত ও বাংলাদেশকে আলাদা করেছে কুশিয়ারা নদী। তবে এই নদীটি দুটি দেশকে বিভক্ত করলেও একটি বিশেষ দিনে নদীর দুই পাড়ে জড়ো হয়ে থাকেন অসংখ্য দুদেশের অসংখ্য মানুষ। আর সেটি দেবীর বিসর্জন। এবারও সেই নদীতে বিসর্জনের চেনা ছবি ধরা পরল। অসমের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত এই নদীটির দুই পাড়ে বিসর্জনের জন্য মঙ্গলবার জড়ো হতে দেখা গেল দুই দেশের প্রচুর মানুষকে।
আরও পড়ুন: দশমীতে বিসর্জনের সুর বাজলেও মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড়, গঙ্গার ঘাটেও মানুষের ঢল
অসমের করিমগঞ্জ শহরে কুশিয়ারা নদীর কালীবাড়ি ঘাট এবং বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের জকিগঞ্জ কুশিয়ারায় এদিন ৯০টির বেশি প্রতিমা বিসর্জন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সীমান্তের দুই প্রান্তের হাজার হাজার মানুষ বিসর্জন দেখতে এদিন নদীর তীরে ভিড় জমান । এদিন বিসর্জনের সময় উপস্থিত ছিলেন উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ। বিসর্জন উপলক্ষে দিন তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং ভারতের এই অংশের মানুষের একটি অভিন্ন সংস্কৃতি এবং ভাষা রয়েছে। কুশিয়ারা নদীতে দুর্গা প্রতিমার বিসর্জনের সময় এটি স্পষ্টভাবে সামনে আসে। আমরা বাণিজ্য, অর্থনীতি এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে আরও সহযোগিতা কামনা করি।’
জানা গিয়েছে, সন্ধ্যা পর্যন্ত করিমগঞ্জ শহরের ৮০টিরও বেশি দুর্গা প্রতিমা কুশিয়ারার কালীবাড়ি ঘাটে বিসর্জন করা হয়েছে। আরও প্রতিমা বিসর্জন করা হবে বলে জানিয়েছেন, করিমগঞ্জের পুলিশ সুপার পার্থ প্রতিম দাস। তিনি বিসর্জনের সময় নিরাপত্তা খতিয়ে দেখেন। তিনি জানান, বিএসএফের সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণভাবে বিসর্জন সম্ভব হয়েছে। এদিন নদীতে বিএসএফ এবং বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি জওয়ানদের যৌথ পাহারায় সমস্ত নৌকায় নিজ নিজ দেশের পতাকা থাকতে দেখা যায়।
এদিন বিসর্জনের সময় বাংলাদেশের তরফে লাউড স্পিকারের মাধ্যমে পুজো কমিটির নাম ও স্থান ঘোষণা করা হচ্ছিল। এছাড়া, অসমের বরাক উপত্যকা এবং দিমা হাসাও জেলায় পুজো শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে।মঙ্গলবার শিলচর শহরের বরাক নদীর সদর ঘাটে প্রায় ২৭০টি দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন করা হয়েছে। শিলচরের সদরঘাটে আজ ও আগামীকাল আরও প্রতিমা বিসর্জন করা হবে বলে এক আধিকারিক জানিয়েছেন। অন্যদিকে, এ রাজ্যের ইছামতি নদীর পাড়েও একই ছবি দেখা যায়। এবার বাংলার বসিরহাটের টাকি এবং বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলা থেকে প্রতিবছর ইছামতি নদীর তীরে প্রতিমা নিরঞ্জনকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার মানুষের ভিড় হয়। এবারও সে রকমটাই দেখা গেল।