করোনাভাইরাসের রক্তচক্ষুতে আসতে আসতে সব রাজ্যকেই লকডাউনের পথে হাঁটতে হবে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্য লকডাউন জারি করতে শুরু করেছে। বাংলা কার্যত ১৫ দিনের লকডাউনে হাঁটল। দিল্লিতে এখন পঞ্চম সপ্তাহের লকডাউন চলছে। আর তার জেরে অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে দিল্লির হাজার পরিযায়ী শ্রমিক। কারণ দিল্লির সরকার এই লকডাউনে যে সাহায্য করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা পালন করেনি। এমনই সব অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকারের বিরুদ্ধে।
এই বিরাট সমস্যা নিয়ে শুক্রবার চিঠি লিখেছে স্ট্র্যানডেড ওয়ার্কার্স অ্যাকশন নেটওয়ার্ক নামক সংস্থা। সেই চিঠি পাঠানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কাছে। এই সংস্থা পরিযায়ী শ্রমিকদের সাহায্য করে থাকে। তাঁরা চিঠিতে লিখেছেন, ‘পরিযায়ী শ্রমিকদের অর্থনৈতিক অবস্থা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। তাঁরা বেকার হয়ে পড়েছেন। কাজ হারিয়ে আজ অসহায় অবস্থা। তাঁদের কোনও সঞ্চয় নেই রেশন কেনার জন্য। দিল্লির সরকার তাঁদের সাহায্য করবে বলেছিল। কিন্তু সেই সাহায্য না পেয়ে তাঁদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হযেছে বলে মনে করছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা।’
এই সংস্থার পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, তাঁদের দেওয়া হেল্পলাইন নম্বরে ফোনের বন্যা বয়ে গিয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকরা ফোন করে জানিয়েছে তাঁদের কাছে ১০০ টাকাও পুরো নেই। তিনদিনে এরকম প্রায় ১২০০ পরিযায়ী শ্রমিকের কাছ থেকে ফোন মিলেছে। এমন ৮২ শতাংশ পরিযায়ী শ্রমিকের ফোন মিলেছে যাঁদের রেশন নেই। ওষুধ কেনার টাকা নেই। বাড়ি ভাড়া দেওয়ার টাকাও নেই। সুপ্রিম কোর্টে নির্দেশ উল্লেখ করে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়েছেন, অবিলম্বে কমিউনিটি কিচেন খোলা হোক। বাড়ি ভাড়াতেও সাহায্য করার অনুরোধ করেছেন তাঁরা।
এই সংস্থার আধিকারিক অনিন্দিতা অধিকারী বলেন, ‘দিল্লির সরকার গতকাল বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তবে যাদের রেশন কার্ড আছে তাদের জন্য। এই পরিযায়ী শ্রমিকদের ৬২ শতাংশের কোনও রেশন কার্ড নেই। দিল্লিতেও নেই। নিজের রাজ্যেও নেই। এদেরকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হোক। যাতে তারা খেয়ে বাঁচেন।’ রেশন দিতে না পারলে নগদ টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হোক বলেও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।