ত্রিকোণ প্রেমের জেরে খুন। খুনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার গুয়াহাটির একটি পাঁচতারা হোটেলে এই খুন হয়। অভিযুক্তরা বিমান করে উড়ে কলকাতা উড়ে যাওয়ার আগেই বিমানবন্দরে তাদের গ্রেফতার করল পুলিশ।
৪৪ বছর বয়সি সন্দীপ কুমার কাম্বলেকে সোমবার বিকেলে গুয়াহাটি বিমানবন্দরের কাছে আজারা হোটেলে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। অভিযুক্ত অঞ্জলি শ (২৫) এবং তাঁর প্রেমিক বিকাশ কুমার শ (২৩)-র রাতে কলকাতাগামী একটি বিমানে ওঠার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ করার ফলে বিমানবন্দরে পৌঁছনোর আগেই তাদের গ্রেফতার করা হয়।
পুনের গাড়ি ব্যবসায়ী কাম্বলেকে প্রথমে হোটেলের কর্মীরা তাঁর ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। সে সময় তাঁর নাক থেকে প্রচুর রক্ত বের হচ্ছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, কলকাতা বিমানবন্দরের একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করে অঞ্জলি। গত বছর বিমানবন্দরে কাম্বলের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব হয়। তার পর তাঁরা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
কিন্তু এই সম্পর্ক ক্রমশ জটিল হতে শুরু করে। কারণ অঞ্জলি ইতিমধ্যে বিকাশের সঙ্গে সম্পর্কে ছিল। তিনি অঞ্জলিকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিচ্ছিল। জিজ্ঞাসাবাদের সময় অঞ্জলি বলেন, কাম্বলের ফোনে তাঁদের কিছু অন্তরঙ্গ ছবি ছিল। যা বিষয়টি আরও জটিল করে তোলে।
সেই ছবিগুলি নিয়ে অঞ্জলি কাম্বলেকে দেখা করার জন্য বলে। তাঁরা আগে কলকাতা বিমানবন্দরে দেখা করার পরিকল্পনা করেছিলেন, কিন্তু কাম্বলে পরে তা গুয়াহাটিতে সরিয়ে নিয়ে যান। সেখানে তিনি একটি পাঁচতারা হোটেলের ঘর বুক করেন। সব বিষয়টি আগে থেকে বিকাশ জানত। সেই অঞ্জলির সঙ্গে গুয়াহাটি রওনা দেয়।
বিকাশ ও অঞ্জলি একসঙ্গে গুয়াহাটি গেলেও সেখানে পৌঁছনোর পর আলাদা হয়ে যান। বিকাশ কাম্বলেকে না জানিয়ে একই হোটেলে নিজের জন্য একটি ঘর বুক করেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, অঞ্জলি ও কাম্বলে শহরে দেখা করেন এবং একসঙ্গে হোটেলে চেক ইন করেন। অন্যদিকে, বিকাশও আলাদাভাবে গুয়াহাটি এসে পৌঁছন।
তাদের সাক্ষাতের সময় হঠাৎ হাজির হন বিকাশ। তা দেখে কাম্বলে উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং দুজনের মধ্যে বচসা শুরু হয়। বচসা থেকে হাতাহাতি। হাতাহাতির ফলে কাম্বলে আহত হন। যা দেখে অঞ্জলি ও বিকাশ পালিয়ে যান। তাঁরা কাম্বলের দুটি মোবাইল ফোনও নিয়ে যান-যে ফোনে কাম্বলে-অঞ্জলির অন্তরঙ্গ ছবি ছিল বলে অভিযোগ।
পরের দিন বিকাশের কাছ থেকে একটি ফোন আসে হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছে। সেই ফোনে মৃত্যুর ইঙ্গিত দিয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেন তিনি। হোটেল কর্তৃপক্ষ গুয়াহাটি শহর পুলিশকে জানায়। পুলিশ অবিলম্বে হোটেল রেজিস্টার, সিসিটিভি ফুটেজ এবং বিমানবন্দরের যাত্রীদের তালিকা দেখে দুই সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করে। রাত ৯টা ১৫ মিনিটে কলকাতা যাওয়ার ফ্লাইটে ওঠার আগেই হোটেলের কাছে অঞ্জলি ও বিকাশকে গ্রেফতার করা হয়।