বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > আবার কি এনআরসি শুরু হতে চলেছে?‌ সুপ্রিম কোর্টে শুনানি রয়েছে অক্টোবর মাসে

আবার কি এনআরসি শুরু হতে চলেছে?‌ সুপ্রিম কোর্টে শুনানি রয়েছে অক্টোবর মাসে

সুপ্রিম কোর্ট। (ছবি, সৌজন্যে পিটিআই)

এই বিধানে বলা হয়েছে, এঁদের ভারতের নাগরিক হিসাবে একই অধিকার এবং বাধ্যবাধকতা থাকবে। কিন্তু ১০ বছরের জন্য সংসদ বা বিধানসভায় ভোট দেওয়ার অধিকার থাকবে না। গত বছরের ১৭ অক্টোবর দেশের সর্বোচ্চ আদালতে অসমের নাগরিকত্ব আইনকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন পূর্ব পাকিস্তান থেকে আগত অধিবাসীরা। 

এনআরসি মামলায় কেন্দ্র এবং অসম সরকারকে পূর্ব পাকিস্তানের নাগরিকদের সমস্ত ডিজিটাল আইন এবং নথিপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। শুধু তাই নয়, আগামী ৩ অক্টোবর ছাড়াও শুনানির দিন থেকে এক সপ্তাহ আগে অর্থাৎ ১০ অক্টোবর তারিখের মধ্যে এই মামলায় যুক্ত প্রত্যেক আইনজীবীকে মামলায় অংশগ্রহণ করার জন্য সমস্ত যুক্তি আদালতে দাখিল করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ। এদিন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে মামলার শুনানি চলে। যা নিয়ে চর্চা তুঙ্গে উঠেছে। ১৭ অক্টোবর মামলার শুনানি।

এদিকে আদালত আবেদনকারীদের পাশাপাশি কেন্দ্র এবং অসম সরকারের তরফ থেকে উপস্থিত অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানি এবং সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতাকে এই মামলা সংক্রান্ত সমস্ত নথি ও আইনের ডিজিটাল রেকর্ড সংগ্রহ করে আদালতে প্রস্তুত করতে নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশ দিতে গিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলেছেন, ‘‌এই কাজের শিরোনাম হবে ‘নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫৫–এর ধারা ৬এ’। এই বিষয়ে নিযুক্ত নোডাল কাউন্সেলরা ২০২৩ সালের ২২ অগস্ট সুপ্রিম কোর্টের জারি করা এই সংক্রান্ত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতির (সাংবিধানিক বেঞ্চের সামনে লিখিত জমা এবং সংকলন ফাইল করার জন্য নির্দেশিকা) সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এখনও পর্যন্ত দায়ের করা সমস্ত সংকলনগুলি নিয়ে আসবেন।’‌

অন্যদিকে বিচারপতি এএস বোপান্না, এমএম সুন্দ্রেশ, জেবি পারদিওয়ালা এবং মনোজ মিশ্রের সমন্বয়ে গঠিত এই সাংবিধানিক বেঞ্চ আরও বলেছে যে, চূড়ান্ত নথিটি ধারা ৬এ’‌র বিরোধী এবং সমর্থনকারিদের উপর ভিত্তি করে সংকলন এবং নথিপত্রগুলিকে বিভক্ত করা হবে। এদিন কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করে যে, ১৯৮৫ সালের অসম চুক্তির ভিত্তিতে ৭ ডিসেম্বর, ১৯৮৫–এ ধারা ৬এ প্রবর্তিত হয়েছিল। তখন কেন্দ্র, অসম সরকার এবং সমস্ত অসম ছাত্র ইউনিয়নের মধ্যে একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়েছিল। মামলার আবেদনকারীরা বেশ কয়েকটি প্রশ্ন তোলেন।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ আবেদনকারীদের দাবি, এই আইনটি ভারতের সংবিধানের অধীনে সমতার অধিকার (অনুচ্ছেদ ১৪), জীবনের অধিকার (অনুচ্ছেদ ২১) এবং সংখ্যালঘু অধিকার (অনুচ্ছেদ ২৯) –কে লঙ্ঘন করেছে। কারণ, এটি অসমকে অন্য রাজ্যের সীমান্ত থেকে পৃথক করছে। তাই অন্যান্য রাজ্যের মতো অসমে প্রবেশকারী অবৈধ অভিবাসীদের নিয়মিত বাসিন্দা করার জন্য একটি বাড়তি তারিখ ‘‌কাট অফ ডেটের’‌ জন্য আবেদন করা হয়। আগে পূর্ব পাকিস্তান থেকে আগত যে সমস্ত নাগরিকরা যাঁরা ২৫ মার্চ ১৯৭১ সালের আগে অসমে প্রবেশ করেছিলেন, শুধুমাত্র তাঁদেরই অসমের নাগরিক হওয়ার অনুমতি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌আর গুরুত্ব দিই না…’‌ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য অভিষেকের

ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ব্যক্তি এবং সংস্থার তরফে ১৯৮৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের ধারা ৬এ হিসেবে প্রবর্তিত আইনটিকে বেশ কয়েকবার চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২০০৯ সালের প্রথম এই মামলাটি সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মামলাকারী। ধারা ৬এ হল, অসমের জন্য তৈরি একটি বিশেষ বিধান যেখানে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তি যাঁরা ১ জানুয়ারী ১৯৬৬ থেকে ২৫ মার্চ, ১৯৭১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ (পূর্ব পাকিস্তান) থেকে এদেশে প্রবেশ করেছেন। আর যাঁরা বিদেশি হিসাবে শনাক্ত হওয়ার পরে রাজ্যে বসবাস করছেন, এমন ব্যক্তিদের অনুমতি দেওয়া হবে। সেজন্য প্রথমে তাঁদের এনআরসিতে নিবন্ধীকরণ করতে হবে। এই বিধানে বলা হয়েছে, এঁদের ভারতের নাগরিক হিসাবে একই অধিকার এবং বাধ্যবাধকতা থাকবে। কিন্তু ১০ বছরের জন্য সংসদ বা বিধানসভায় ভোট দেওয়ার অধিকার থাকবে না। গত বছরের ১৭ অক্টোবর দেশের সর্বোচ্চ আদালতে অসমের নাগরিকত্ব আইনকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন পূর্ব পাকিস্তান থেকে আগত অধিবাসীরা। এবার তার মধ্যে একটি মামলার শুনানি শীঘ্রই হতে চলেছে।

বন্ধ করুন