ঘড়ির কাঁটা তখন বলছে, ৯টা বেজে ১৫ মিনিট বাজে। ওড়িশা উপকূলে ল্যান্ডফল শুরু হল ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের। নির্ধারিত সময়ের আগেই ওড়িশার বালেশ্বরের দক্ষিণে তাণ্ডব শুরু করে ইাস। উত্তাল হয়ে ওঠে সমুদ্র। তছনছ হতে থাকে বালেশ্বর ও পার্শ্ববর্তী এলাকা। বালেশ্বর, কেন্দ্রাপাড়া, ময়ূরভঞ্জ, পারাদ্বীপে সমুদ্রে বিশাল জলোচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যায়৷ ভিতরকণিকা ও ভদ্রকেও সমুদ্রের অশান্ত ছবি দেখা যায়৷ এহেন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে স্বভাবতই বাড়ি থেকে না বেরোনোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সরকারের তরফে। তবে এরই মাঝে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন এক ব্যক্তি। তা দেখে সাংবাদিক তাঁকে প্রশ্ন করেন, ঝড়ের মাঝে রাস্তায় কেন? এই প্রশ্নের যে জবাব সেই ব্যক্তি দেন, তা এখন সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল।
এক নিউজ চ্যানেলের সাংবাদিক ওড়িশায় ঝড়ের সময় লাইভ টেলিকাস্টে ছিলেন। ইয়াসের তাণ্ডবের ছবি তুলে ধরছেন সেই সাংবাদিক। এই সময়ে রাস্তায় এক ব্যক্তিকে দেখে সাংবাদিক তাঁর দিকে এগিয়ে প্রশ্ন করেন, এই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করে কেন তিনি রাস্তায় বেরিয়েছেন। এর জবাবে সেই ব্যক্তি বলল, 'আপনারা বাইরে আছেন বলেই আমি বেরোলাম।' অবাক সাংবাদিক বললেন, 'আমরা তো খবর সম্প্রচার করছি।' এর জবাবে ফের ছক্কা হাকিয়ে সেই ব্যক্তি বললেন, 'সেই জন্যই তো আমিও বেরিয়েছি৷ না হলে আপনারা খবর পাবেন কী ভাবে, কার সঙ্গে কথা বলবেন?' এরপরই এই কথোপকথনটি ভাইরাল হয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের জেরে ওড়িশার বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ বহু রাস্তার ক্ষতি হয়েছে৷ বিদ্যুৎ সংযোগ নেই বহু এলাকার৷ এই অবস্থায় সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা মেরামতি এবং ৮০ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী৷ পাশাপাশি ইয়াসের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত ১২৮টি গ্রামের গ্রামবাসীদের আগামী ৭ দিনের ত্রাণ দেওয়ার ঘওষণাও করেন তিনি।
এদিকে উপকূলবর্তী বাসিন্দাদের ঝড়ের আগেই অনত্র সরাতে পেরেছে সরকার। ঝড়ের আগেই সরকারি প্রস্তুতির কারণে অনেকটাই এড়ানো গিয়েছে ক্ষয়ক্ষতি। সঠিক সময়ে মানুষকে সুরক্ষিত আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সেভাবে প্রাণহানি হয়নি। এই তৎপরতার জন্য নবীন পট্টনায়েক পঞ্চায়েত প্রতিনিধি, জেলা প্রশাসন, পুলিশ, চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন৷