পাকিস্তানে টিভি স্টুডিও পরিণত হল বক্সিং রিংয়ে। অবশ্য বক্সিংয়ের মতো শুখু ঘুষি নয়, সঙ্গে পড়ল কিল, চড়ও। জানা গিয়েছে, লাইভ টিভিতে যে দু'জনকে মারপিট করতে দেখা যায় তাঁরা হলেন পাকিস্তান মুসলিম লিগ নওয়াজ এবং পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতা। দুই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বর এহেন কাণ্ড সোশ্যল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই।
রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানের এক্সপ্রেস টিভি-তে জাভেদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় 'কাল তক' নামক অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। সেখানেই প্যানেলে ছিলেন পাকিস্তান মুসলিম লিগ নওয়াজের সেনেটর আফনান উল্লাহ খান এবং ইমরান খানের আইনজীবী শের আফজাল খান। এই দুই নেতাই অভিযোগ করতে শুরু করেন যে অপর দলের শীর্ষ নেতারা নিজেদের স্বার্থে অন্যদের 'বুট চাটেন'। এর থেকেই শুরু হয় বচসা। এরপর শুরু হয় হাতাহাতি, মারামারি। লাইভ টিভিতে এই পুরো ঘটনাই দেখা যায়। পরে সেই দৃশ্যর ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তান মুসলিম লিগ নওয়াজের সেনেটর আফনান উল্লাহ খান অভিযোগ করেন, ইমরান খান নাকি ক্ষমতা ধরে রাখতে সেনার শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে ব্যাকচ্যানেল বৈঠক করেছিলেন। তাছাড়াও ইমরানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন আফনান। এরপরই ইমরানের আইনজীবী আচমকা উঠে আফনানকে মারতে যান। পাকিস্তান মুসলিম লিগ নওয়াজের সেনেটর আফনান উল্লাহ খানের মাথায় চাটি মারেন পিটিআই নেতা শের আফজাল খান। এরপরই পালটা হাত চালাতে শুরু করেন পাক সংসদ সদস্য। উঠে পড়ে ইমরানের দলের নেতাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন তিনি। আর এই সবই লাইভ টিভিতে সম্প্রচারিত হতে থাকে। ক্যামেরার সামনেই পিটিআই নেতাকে লাথি মারেন পাক সেনেটর। একে অপরের পরিবার তুলে গালি দিতে থাকেন।
দুই বর্ষীয়ান নেতাকে শান্ত করতে এরপর টিভি চ্যানেলের ক্রু সদস্যরা ছুটে যান। এই ঘটনার বেশ কয়েক ঘণ্টা পরে আফনান নিজের বক্তব্য পেশ করেন। তিনি দাবি করেন, হিংসায় তিনি বিশ্বাস করেন না। তবে তিনি নিজেকে 'নওয়াজ শরিফের সৈনিক' বলে আখ্যা দেন। তিনি নিজের পোস্টে লেখেন, 'একটি টিভি শো চলাকালীন আমার ওপর আক্রমণ করেন আফজাল খান। আমি অহিংসায় বিশঅবাসী তবে নমওয়াজ শরিফের সৈনিক। যা ঘটেছে তা যেন পিটিআইয়ের জন্য একটা শিক্ষা হয়ে থাকে। বিশেষ করে ইমরান খানের জন্য। এরপরে তাদের বড় কালো চশমা পরে থাকতে হবে।' এদিকে এই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন ইমরানের আইনজীবীও। তিনি বলেন, 'যদি এক্সপ্রেস টিভির সৎ সাহস থাকে তাহলে পুরো বিষয়টা সামনে আনা হোক। এই মারপিটের আগে ৫ থেকে ৬ মিনিট ধরে যে আলোচনা এবং বিতর্ক হয়, তা সম্প্রচার করা হোক। সেই রেকর্ডিংটা কেন প্রকাশ করা হচ্ছে না? যদি জাভেদ চৌধুরী (সঞ্চালক) পুরো ভিডিয়োটা প্রকাশ করেন, তাহলেই স্পষ্ট হবে আমি কেন সেই নেতাকে মেরেছিলাম।'