কবি লিখেছিলেন 'অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো'। আর হয়তো এই ঘটনারই চাক্ষুষ সাক্ষী থাকলেন মহারাষ্ট্রের রায়গড়ের ধ্বংসস্তূপে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলা উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা । চারিদিকে আর্তনাদ, রক্ত, ধ্বংসলীলার সাক্ষী থাকা কংক্রিটের স্তূপের মধ্যে থেকে চার বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করলেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) কর্মীরা, বাড়ি ভেঙে পড়ার প্রায় ১৯ ঘণ্টা পর।
স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, মহম্মদ জাভেদ বাঙ্গি নামে ওই শিশুটিকে মঙ্গলবার দুপুর ১ টা ১৫ নাগাদ কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁর বড়সড় কোনও আঘাত লাগেনি।
কিন্তু তাকে কীভাবে উদ্ধার করা হল? উদ্ধারকারী দলের এক সদস্য বলেন, ‘আমরা দেখতে পাই, শিশুটি একটি ভাঙা ছাদের চাঙড়ের তলায় বসে আছে। মুহূর্তের মধ্যে ওকে পাজাকোলা করে বের করে নিয়ে আসি এবং অ্যাম্বুলেন্সে চাপিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যখন শিশুটির মায়ের পরিচয় জানতে চায়, তখন আমাদের সত্যিই কিছু বলার ছিল না। কারণ গতকালই (সোমবার) ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে ওর মায়ের নিথর দেহ উদ্ধার করেছি।’
সোমবার সন্ধ্যা ছ'টা নাগাদ রায়গড় জেলার কাজলপুর এলাকার 'তারিক গার্ডেন’ নামে বহুতলটি ভেঙে পড়ে। ধ্বংসস্তূপের তলায় আটকে পড়েন অনেকে। সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বুধবার বিকেল পর্যন্ত মোট ১৬ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তারইমধ্যে এনডিআরএফের কমান্ড্যান্ট অলোক কুমার বলেন, 'আমরা যখন স্নিফার ডগের সাহায্যে শিশুটির খোঁজ পাই, তখন আমাদের দ্বিগুণ সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছিল। কারণ কংক্রিটের চাদর সরাতে গিয়ে শিশুটির মাথায় পাথর পড়ে যেতে পারত। আপাতত সে সুস্থ আছে, এটাই আমাদের সাফল্য।'
তবে শিশুটির উদ্ধারকাজের সেরা মুহূর্ত ব্যাখ্যা করেছেন স্থানীয় উদ্ধারকারী দলের প্রধান বলেন, ‘ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকে আমাদের দেখতে পেয়ে হেসে ওঠে এবং সেই অপূর্ব দৃশ্যের বর্ণনা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব।'