ভারত ছেড়ে অন্য দেশের নাগরিকরত্ব নিচ্ছেন অনেকেই। আশ্চর্য হলেও সত্যি ২০১১ থেকে ২০২২, এই এক দশকে প্রায় ৭০,০০০ ভারতীয় দেশের বিভিন্ন রিজিওনাল পাসপোর্ট অফিসে তাদের পাসপোর্ট জমা দিয়ে দেশান্তরি হয়েছেন। উল্লেখ্য মূলত পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম ভারতের গোয়া, পঞ্জাব, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, দিল্লি এবং চণ্ডীগড় এবং দক্ষিণ ভারতের কেরালা ও তামিলনাডু রাজ্যে এই ধরনের ঘটনা তুলনায় অনেকটাই বেশি। মোট দেশত্যাগের ৯০ শতাংশ এই রাজ্যগুলি থেকেই পরিলক্ষিত হয়েছে।
এক দশকের মধ্যে দেশ যাওয়া ব্যক্তিদের ৬৯,৩০৩টি পাসপোর্টের মধ্যে ৪০ শতাংশই গোয়ার অধিবাসী ছিলেন। তথ্যের অধিকার আইন(আরটিআই) অনুসারে একটি আবেদনে বিদেশ মন্ত্র এই তথ্য প্রকাশ করে। ২০১১ সাল থেকে আরপিওতে ৬৯,৩০৩টি পাসপোর্ট জমা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে, এক্ষেত্রে গুরুত্বপুর্ণ আরও একটি তথ্য হল, এই ৭০,০০০ ব্যক্তি ছাড়াও আরও বহু সংখ্যক মানুষ ভারতের নাগরিকত্ব ছেড়ে ভিন দেশে বসবাস করছেন। প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলিধরনের এপ্রসঙ্গে জানান, ২০১১ থেকে গত বছরের ৩১ অক্টোবরের পর্যন্ত ১৬.২১ লক্ষেরও বেশি ভারতীয় তাদের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন।
ভারতীয় নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫ অনুসারে ভারতীয় বংশোদ্ভূত কোনও ব্যক্তি দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে পারেন না। অনেক ক্ষেত্রে কাজের সূত্রে বা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে অন্য দেশে পাড়ি জমাতে হয় অনেককেই। তাঁরা স্থায়ী ভাবে সে দেশে থাকতে চাইলে সেই দেশের নিয়ম অনুসারে নাগরিকত্বে আবেদনও করতে পারেন। সেই আবেদন পত্র মঞ্জুর হয়ে গেলেই কিন্তু তাকে অবিলম্বে ভারতের নাগরিকত্ব ছাড়তে হবে।
পরিসংখ্যান বলছে, জমা দেওয়া ৬৯,৩০৩টি পাসপোর্টের মধ্যে গোয়া সর্বাধিক সংখ্যার জন্য দায়ী - ২৮,০৩৮ টি পাসপোর্ট গোয়ার, যা মোট পরিসংখ্যানের ৪০.৪৫ শতাংশ। পঞ্জাবের ক্ষেত্রে (চন্ডীগড় সহ) ৯,৫৫৭ টি পাসপোর্ট জমা পড়েছে। গোয়া থেকে পর্তুগাল বা ইউরোপে যাওয়ার চল ছিল বরাবরই, পঞ্জাব থেকেও আমেরিকা-কানাডা যাওয়ার চল ছিল। কিন্তু, এমন ব্যাপক দেশ ত্যাগের কারণ অন্বেষণ চলছে।
ভারতে আরপিওতে সমর্পণ করা পাসপোর্টগুলির পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে 20১১ সালে মাত্র ২৩৯টি পাসপোর্ট সমর্পণ করা হয়েছিল। কিন্তু পরের দুই বছরে, এই সংখ্যাটাই বেড়েছে বেড়ে হয় যথাক্রমে ১১৪৯২ এবং ২৩,৫১১টি। উল্লেখ্য ২০১৪ সালে আরপিওতে জমা দেওয়া পাসপোর্টের ৯০ শতাংশই ছিল গোয়ার অধিবাসীদের। বছর বছর ভারতের পাসপোর্ট সমর্পণের সংখ্যা বৃদ্ধি ও দেশের নাগরিকত্ব ত্যাগের পেছনে কি সত্যিই কোনও আশঙ্কা করার মত কারণ রয়েছে, তা চর্চার বিষয়।