খুচরো দুধের দাম গত তিন বছরে প্রায় ২২ শতাংশ বেড়েছে। কেবলমাত্র শেষ এক বছরেই প্রায় দশ শতাংশ বেড়েছে দুধের দাম। এবার আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা উত্তরভারতের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে। আগামী তিন-চার মাসে খুচরো দুধের দাম আরও বাড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞমহল। সম্প্রতি উত্তরভারতে ভারী বৃষ্টি ও পশু খাদ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে এই আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।
গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি এবং মাছের খাদ্যের প্রধান উপাদান ডি-অয়েলড রাইস ব্রান (DORB) -এর দাম গত কয়েক সপ্তাহে প্রতি টন ১৫,০০০ থেকে ১৮,৫০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ভুট্টা, একটি প্রধান পশুখাদ্য শস্য। এটি তামিলনাড়ুর ইরোডে প্রতি টন ২৪,৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক মাসে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
'শুধুমাত্র ডি-অয়েলড ধানের খড়ের দাম বৃদ্ধি নয়, শস্যেও দামও রেকর্ড পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে। ভুট্টা, জোয়ার, বাজরার দামও বেড়েছে বেশি বৃষ্টিপাতের কারণে। যদিও ভুট্টায় আর্দ্রতার আদর্শ পরিমাণ প্রায় ১৪ শতাংশ, তা বেড়ে ১৮ শতাংশে পৌঁছেছে। অতি আর্দ্রতার ফলে শস্যের ছত্রাক দ্বারা সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে।' বলেছেন কৃষি পুষ্টি কোং প্রাইভেট লিমিটেডের সিইও মহারাজান শক্তিভেলাউথম। এটি একটি পশু খাদ্য কোম্পানি। তিনি আরও বলেন, 'অতিরিক্ত চাহিদা এবং যোগান না থাকা, এরই সাথে কৃষকরা প্রত্যাশার তুলনায় কম MSP (ন্যূনতম সহায়ক মূল্য) পাওয়ার কারণে ভুট্টার দাম বেড়েছে।'
জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে উত্তরাঞ্চলের রাজ্যগুলি অতিবৃষ্টির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। পাঞ্জাব এবং হরিয়ানায় জমিতে থাকা ধানের ফসল অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে ধানের খড় সরবরাহও প্রভাবিত হয়েছে, যা পশুখাদ্যের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই দুটি রাজ্যে পয়লা জুন থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ধরে স্বাভাবিকের তুলনায় ৯০-৯৬ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে৷
যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ফসলের ক্ষতি করে ও তা শেষ পর্যন্ত খাদ্য ও পশুখাদ্যের দামকে প্রভাবিত করে, বলেছেন মিস্টার মিল্কম্যানের সিইও সমর্থ সেটিয়া। বন্যার কারণে ইতিমধ্যেই ফসলের দাম বৃদ্ধি।পেয়েছে। খাদ্য ও পশুখাদ্যের দাম যেমন বেড়েছে তার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে দুধের দামও। এরফলে আগামী কয়েক মাসে দুধের দাম বৃদ্ধি পাবে বলেই আশঙ্কা বিশিষ্ট মহলের। বিগত দেড় বছরে ইতিমধ্যে ১৫-১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে দুধের দাম। মাত্রাছাড়া দাম বৃদ্ধির ফলে দুধের চাহিদা কমবে বলেই মনে করা হচ্ছে।