ভারতের বৃহত্তম তেল সরবরাহকারী হল রাশিয়া। সৌদি আরব এবং ইরাকও এখন রাশিয়ার থেকে পিছিয়ে। অক্টোবরের এই পরিসংখ্যান নিয়ে পশ্চিমী দেশগুলি যে কিছুটা অসন্তুষ্ট হতে পারে, তা ধরাই যায়। তবে ভারত যে অন্য দেশের ভাবনা নিয়ে বিচলিত নয়, তা স্পষ্ট এই রিপোর্টে।
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মস্কোর উপর বাণিজ্যিক বয়কটের ডাক দেয় পশ্চিমী বিশ্ব। ক্রেমলিনের সদস্যদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে জোগান কমায় বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বাড়তে থাকে। এই সুযোগেই রাশিয়া থেকে তেল কেনার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। গ্রাহক কম থাকায় কম দামেই তেল দিতে শুরু করে ভ্লাদিমির পুতিনের সরকার। আরও পড়ুন: Ethanol in Petrol: ১০ লিটার পেট্রোলে ২ লিটার ইথানল মেশাতে চাইছে কেন্দ্র
এনার্জি কার্গো ট্র্যাকার Vortexa-র প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী ৩১ মার্চ ২০২২ পর্যন্ত ভারতের দ্বারা আমদানি সমস্ত তেলের মাত্র ০.২ শতাংশ রাশিয়া থেকে আসত। এদিকে অক্টোবরেই সেটা তুঙ্গে পৌঁছে যায়। গত মাসে ভারতকে প্রতিদিন ৯,৩৫,৫৫৬ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করেছে মস্কো। এখন ভারতের মোট আমদানিকৃত ক্রুড অয়েলের ২২%-ই আসে রাশিয়া থেকে।
এই বিষয়ে একাধিকবার নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে নয়াদিল্লি। তারা জানিয়েছে, ভারত সরকার রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য রক্ষা করতে বাধ্য। কারণ দেশবাসীর স্বার্থে সবচেয়ে সস্তায় ক্রুড অয়েল সংগ্রহ করা সরকারের কর্তব্য। আর সেই স্বার্থে অন্য দেশের ভাবনায় প্রভাবিত হওয়া যাবে না।
গত সপ্তাহে আবু ধাবিতে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি বলেন, 'আমাদের একটি নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে। আমাদের দেশের জনসংখ্যা ১৩৪ কোটি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই, আমাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, তাঁদের যেন পর্যাপ্ত শক্তি সরবরাহ করা হয়, সেটা পেট্রোল-ডিজেল যা-ই হোক না কেন।'
গত মাসে ওয়াশিংটনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও একই কথা বলেন তিনি। মার্কিন জ্বালানি সচিব জেনিফার গ্রানহোমের সঙ্গে বৈঠক করেন হরদীপ সিং পুরি। এরপর তিনি বলেন, আমাদের নীতি স্পষ্ট, জ্বালানির নিশ্চয়তা এবং সাশ্রয়কে অগ্রাধিকার দিতে আমরা যেখান থেকে কিনলে সুবিধা হবে সেখান থেকেই কিনব। এই জাতীয় আলোচনা সাধারণ মানুষকে যেন প্রভাবিত না করে। আরও পড়ুন: বাড়ছে অপরিশোধিত তেলের দাম, কলকাতায় পেট্রোল ও ডিজেলের দাম কত?
তিনি বলেন, 'অনেক সময়েই লোকে বুঝতে পারে না যে কীভাবে অপরিশোধিত তেলের কেনাবেচা হয়। তেল কেনার সময়ে যদি এত দূর থেকেই কিনতে হয় যে জাহাজের আইসব্রেকারের ভাড়াটুকুও দিতে হবে, সেক্ষেত্রে কিনে কোনও লাভ নেই। যতটা সম্ভব কাছাকাছি স্থান থেকে কেনাটাই আদর্শ।'