দীর্ঘদিন আগেই রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদ পাওয়ার মুখে দাঁড়িয়েছিল ভারত। কিন্তু তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু বলেছিলেন যে ভারতের আগে চিনকে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ দেওয়া উচিত। এমনই দাবি করলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। নেহরুর ‘চিন ফার্স্ট’ নীতির কারণে এখনও রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য না হলেও অচিরেই ভারত সেই মর্যাদা পাবে বলে আত্মবিশ্বাসের সুরে জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। সেইসঙ্গে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যাতে অন্যান্য দেশ নাক না গলায় সেই বার্তাও দিয়েছেন। স্পষ্ট বলেছেন যে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যেন ‘মর্যাদা’ দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদ নিয়ে জয়শংকর
মঙ্গলবার আমদাবাদে গুজরাট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের অনুষ্ঠানে জয়শংকর বলেন, '১৯৫০ সালে চিন নিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নেহরুকে সতর্ক করেছিলেন (তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) সর্দার প্যাটেল। নেহরুকে প্যাটেল বলেছিলেন যে আগে এই প্রথমবার আমাদের দু'দিকেই (পাকিস্তান এবং চিন) একটি পরিস্থিতি উদ্ভূত হয়েছে। যা আগে কখনও হয়নি। সেইসঙ্গে নেহরুকে প্যাটেল বলেছিলেন যে চিনারা যা বলছেন, তাতে তাঁর ভরসা নেই। কারণ ওঁদের উদ্দেশ্যটা অন্য কিছু ছিল এবং আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।'
জয়শংকর আরও বলেন, ‘নেহরুর অবস্থান সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল। উনি প্যাটেলকে বলেছিলেন যে আপনি অহেতুক চিনাদের নিয়ে সন্দেহ করছেন। তাছাড়া হিমালয়ের ওপার থেকে আমাদের উপর হামলা চালানো অসম্ভব। কয়েক বছর পরে রাষ্ট্রসংঘ নিয়ে একটা আলোচনা চলছিল যে সেইসময় ভারতকে স্থায়ী সদস্যপদ দেওয়া হবে কিনা। সেইসময় নেহরু বলেছিলেন যে আমরা স্থায়ী সদস্যপদ পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু চিন যাতে আগে স্থায়ী সদস্যপদ পায়, সেটা প্রথমে আমাদের নিশ্চিত করতে পারে। আজ আমরা ইন্ডিয়া ফার্স্ট বলছি। একটা সময় ছিল, যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী চিন ফার্স্ট বলতেন।’
আরও পড়ুন: CGHS latest update: DA বেড়েছে, এবার ১ মাসের মধ্যে সরকারি কর্মীদের এই কাজটা করতেই হবে, জানাল কেন্দ্র
তবে জয়শংকর আশাবাদী যে শীঘ্রই রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ পেয়ে যাবে ভারত। তিনি বলেন, '(রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে) ভারতের স্থায়ী সদস্যপদ পাওয়া উচিত ভারতের। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে প্রতি বছর সেই দাবিটা বাড়ছে। আমরা নিশ্চিতভাবে (রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদ) পাব। কিন্তু কঠোর পরিশ্রম ছাড়া বড় কোনও কিছু অর্জন করা যায়নি। এইবার আমাদেরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।'
সম্মান দিতে হবে, স্পষ্ট বার্তা জয়শংকরের
জয়শংকর বলেন, '(অরবিন্দ' কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির ঘটনা নিয়ে) রাষ্ট্রসংঘের কেউ একজন জিজ্ঞাসা করছিলেন। উনি কিছু একটা বলেছিলেন। অন্যান্য ক্ষেত্রে আমি সত্যি খোলাখুলি বলতে চাই যে এগুলো খুব পুরনো স্বভাব, খুব বাজে স্বভাব। বিভিন্ন দেশের মধ্যে মর্যাদা আছে। আমরা সার্বভৌম দেশ। একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমাদের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। একে অপরের রাজনীতির বিষয়ে আমাদের মন্তব্য করা উচিত নয়।'