চরম একটি অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে রবিবার। শুক্রবার গভীর রাতে একটি ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়। সেই আগুনে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। দেশের প্রধান বিরোধী দলে বিএনপি দাবি করেছে এর পিছনে অন্তর্ঘাত রয়েছে। ভোটের দিনও গণ্ডোগোল হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দেশের বৃহত্তম বিরোধী দল নিবার্চন অংশগ্রহণ না করার ফলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি জটিল হয়ে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে। যদিও শাসকদল সর্বতভাবে চেষ্টা করছে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে প্রমাণ করতে যে নির্বাচন সার্বিক এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠানিত হচ্ছে। ভারত-সহ বেশ কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিদের ডাকা হয়েছে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার জন্য। এসব সত্বেও বর্তমান সরকারের আমলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অবক্ষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আমেরিকা। ভোটের দিন তারা রাজনৈতিক হিংসা আশঙ্কা করছে।
(পড়ুন। বাংলাদেশে ট্রেনে আগুনকে ‘অন্তর্ঘাত’ বলল বিএনপি, রাষ্ট্রসংঘকে দিয়ে তদন্ত দাবি)
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার অধীনে ভোট পরিচালানার দাবি তোলে। তা না হওয়ায় তারা ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছে। এই দাবির প্রতি সরকারের কঠোর মনোভাব ব্যাপক গ্রেফতার ও হিংসার দিকে নিয়ে গিয়েছে, যা নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে।
আল জাজিরার একটি প্রতিবেদন অনুসারে, বিরোধী দল নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামি লিগ সক্রিয়ভাবে ‘ডামি’ প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়। নির্বাচনকে ন্যায়সঙ্গত হিসাবে উপস্থাপন করার লক্ষ্যে একটি কৌশল। এই পদ্ধতিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘প্রতিযোগীতামূলক মেক-আপ’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন, এর মধ্যে রয়েছে আওয়ামি লিগ এই ‘ডামি’ প্রার্থীদের সামনে রেখে নিজেদের জয়ের রাস্তাও অনুকূল করেছে।
বিএনপি ভোটে অংশ না নেওয়ার ফলে আওয়ামি লিগ কৌশলগত পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা সমর্থকদের অন্যান্য দলের বেশ কয়েকজনকে প্রার্থীকে সমর্থন করার জন্য অনুরোধ করেছে। শাসকদল আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক এবং অংশগ্রহণমূলক হিসাবে প্রমাণ করা। ভোটারদের ভোট দানে উৎসাহিত করা।
বাংলাদেশের সংবাদপত্র ডেইলি স্টারের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, আওয়ামি লিগ তার সমর্থকদের বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় জোটভুক্ত দল এবং ‘ডামি’ প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল। এমনকি বিরোধী প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার কথা বলছে শাসকদল। তাদের এই কৌশলগত অবস্থান সংসদে দূর্বল বিরোধী ব্লক তৈরি করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।