বাংলাদেশের থেকে আরও ২৫ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু সেই ঋণের আর্জি কার্যত খারিজ করে দিল বাংলাদেশ। সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বাংলাদেশে ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর কাজি ছাইদুর রহমান জানিয়েছেন, আপাতত ঋণ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে না।
একাধিক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, চূড়ান্ত আর্থিক সংকটের কারণে গত বছর ঋণ চেয়ে বাংলাদেশের দ্বারস্থ হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। সেইসময় ২০ কোটি ডলারের ঋণ দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। তিন মাসের মধ্যে সেই ঋণ পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু সেই সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হয় শ্রীলঙ্কা। সেই পরিস্থিতিতে ঋণ পরিশোধের জন্য আরও এক বছরের সময় দেয় বাংলাদেশ সরকার। তারইমধ্যে আবার ঋণ চাওয়ায় শ্রীলঙ্কার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন শেখ হাসিনারা।
শ্রীলঙ্কায় কী অবস্থা?
গত কয়েকদিন ধরে চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েছেন শ্রীলঙ্কার মানুষ। আকাল দেখা দিয়েছে অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রীর। দিনের অধিকাংশ সময় থাকছে না বিদ্যুৎ। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীয় দাম লাগামছাড়া হয়ে গিয়েছে। ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে এতটা ভয়ঙ্কর অবস্থার মুখে পড়তে হয়নি ২.২ কোটি জনসংখ্যা বিশিষ্ট দেশকে।
সেই পরিস্থিতিতে প্রবল বিক্ষোভ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার রাতে পরিস্থিতি কার্যত রাজাপক্ষে সরকারের হাতের বাইরে চলে যায়। পদত্যাগের দাবিতে হাজার-হাজার মানুষ শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান। যা পরবর্তীতে হিংসাত্মক রূপ নেয়। দুটি সামরিক গাড়ি, পুলিশের জিপ, দুটি প্যাট্রোলিং মোটরসাইকে এবং একটি তিনচাকার গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। কমপক্ষে দু'জন বিক্ষোভকারী আহত হন। পুলিশ জানিয়েছিল, ৫৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, পাঁচজন সাংবাদিককে গ্রেফতার করে অত্যাচার চালিয়েছে পুলিশ এবং সেনা। যে অভিযোগ তদন্ত করে দেখবে বলে দাবি করে সরকার। তাতে অবশ্য বিক্ষোভে লাগাম পড়েনি। শুক্রবারও চলতে থাকে বিক্ষোভ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শুক্রবার রাতের দিকে জরুরি অবস্থার ঘোষণা করেন শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি। জরুরি অবস্থার ঘোষণার পাশাপাশি শ্রীলঙ্কায় কড়া আইন কার্যকর করেছেন গোতাবায়া, যে আইনের আওতায় বিচার ছাড়াই যে কোনও ‘সন্দেহভাজন’ ব্যক্তিকে দীর্ঘদিন আটকে বা গ্রেফতার করে রাখার ছাড়পত্র দেওয়া হয় সেনাকে। সেইসঙ্গে কার্ফু দেশজুড়ে জারি করা হয়েছিল কার্ফু। বিক্ষোভ ঠেকাতে ৩৬ ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া।