দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের নিকারিঘাটা অঞ্চলের যুব তৃণমূলের সভাপতি মহরম শেখকে গুলি করে খুন করা হয়েছিল ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে। পরানিখেকোয় সেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছিল সইফুল লস্কর, রফিক শেখ, রহমত গাজি, মিয়ারেব মণ্ডল, মনিরুল শেখ, মামুদ আলি সর্দারের নামে। এই মামলাতেই এবার সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্য সরকার। অভিযুক্তদের মধ্যে থেকে সাইফুল জামিনের আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। সেখানে সাইফুলের আইনজীবী দাবি করেন, শীর্ষ আদালতে রাজ্য সরকার যে হলফনামা পেশ করেছে, তাতে সাইফুলের জামিনের বিরুদ্ধে যুক্তি হিসেবে পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দির উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও, আইনত পুলিশের কাছে অভিযুক্তের জবানবন্দি আদালতে প্রমাণ হিসেবে গণ্য হয় না। এমনকী নিম্ন আদালতে এই মামলার শুনানি চলাকালীন সাক্ষীকে পালটা প্রশ্ন করার সুযোগ দেওয়া হয়নি সাইফুলের আইনজীবীদের। (আরও পড়ুন: আধার সমস্যা মেটাতে পৃথক কেন্দ্রের পরিকল্পনা বাংলায়, বিনামূল্যে মিলবে পরিষেবা)
আরও পড়ুন: 'রামমন্দির উদ্বোধনে শুভেচ্ছা...', বললেন ফিরহাদ, ২২ তারিখ বাংলাতেও থাকবে ছুটি?
এই আবহে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অভয় এস ওকা ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়া পর্যবেক্ষণে বলেন, 'পুলিশের কাছে অভিযুক্ত যে জবানবন্দি দিয়েছেন, তার ওপর নির্ভর করে হলফনামা পেশ করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আমরা এতে স্তম্ভিত।' পাশাপাশি অভিযুক্তের আইনজীবীকে সাক্ষীদের পালটা প্রশ্ন কার সুযোগ না দেওয়ার বিষয়টিকেও 'অগ্রহণযোগ্য' বলে আখ্যা দিয়েছেন শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা। এই আবহে নিম্ন আদালতে দুই সাক্ষীকে যাতে অভিযুক্তের আইনজীবী পালটা প্রশ্ন করতে পারেন, তার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ২০২৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ফের সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি হবে।
আরও পড়ুন: 'কমেছে বেতন, মিলছে না বর্ধিত DA', আস্তিনে 'অস্ত্র' লুকিয়ে বিস্ফোরক আন্দোলনকারীরা
উল্লেখ্য, নিকারিঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের যুব তৃণমূল সভাপতি ছিলেন মহরম শেখ। ২০২১ সালের ২০ নভেম্বর নিজের এলাকাতে রাস্তার পাশে বসে ছিলেন মহরম। তখন অটোয় করে এসে গুলি চালিয়ে দ্রুত গতিতে বেরিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। অটোয় চার জন ছিলেন বলে জানা যায়। গুরুতর আহত মহরম শেখকে প্রথমে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় এসএসকেএম হসপাতালে। পরে মৃত্যু হয় মহরমের। এই ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ। ঘটনায় ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে মহরমের পরিবার। স্থানীয় সূত্রে দাবি করা হয়েছিল, তৃণমূলের ঘরোয়া কোন্দলের জেরে খুন হতে হয় মহরমকে। এর আগেও তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল অভিযুক্তরা। তবে সেবার বরাতজোরে রক্ষা পান তিনি। তবে ২০২১ সালের নভেম্বরের সন্ধ্যায় তিনি রক্ষা পাননি।