স্কুল শিক্ষকদের বদলি সমস্যা নিয়ে অভিযোগ নতুন নয়। আর সেই সমস্যার সুরাহা করতেই 'উত্সশ্রী' পোর্টাল চালু করে রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই পোর্টাল নিয়েই এবার শুরু নতুন বিভ্রান্তি। পোর্টালে অনেক প্রশ্নেরই উত্তর মিলছে না, অভিযোগ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।
কী নিয়ে বিভ্রান্তি?
শিক্ষকদের অভিযোগ, পোর্টালের ভাষা, নিয়মাবলীর অধিকাংশই অস্পষ্ট। নিয়ম অনুযায়ী ৬ মাসে কোনও স্কুলের মোট শিক্ষকের ১০%-এর বেশি বদলি করা যাবে না। এদিকে এই ১০% শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী দুটি মিলিয়েই, নাকি শুধু শিক্ষক, তার কোনও স্পষ্ট উত্তর নেই। প্রতিবন্ধী শিক্ষকরাও এর মধ্যেই পড়ছেন কিনা, সেই উল্লেখও নেই।
এদিকে নিয়মাবলীর আরও বেশ কিছু বিভ্রান্তি তুলে ধরেছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁদের প্রশ্ন, কোনও স্কুলের একই বিষয়ের দুই জন শিক্ষকই যদি বদলি হয়ে যান এবং সেই বিষয়ের আর কোনও শিক্ষক না থাকে, সেক্ষেত্রে কী করা হবে? অর্থাত্, ধরুন কোনও স্কুলে ইতিহাসের দুই জন শিক্ষিকা আছেন। তাঁদের দু'জনেরই বদলির আবেদনের অধিকার আছে। কিন্তু তাঁরা দু'জনেই বদলি হয়ে গেলে সেই স্কুলে ইতিহাস কে পড়াবেন? এর কোনও উত্তর নেই পোর্টালে।
আবার গ্রামের দিকের স্কুলে এমনিতেই বেশিরভাগ শিক্ষক-শিক্ষিকারা থাকতে চান না। যাতায়াতের সমস্যা, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার অভাবের কারণে মফস্বল বা শহরের স্কুলে আসতে চান তাঁরা। সেক্ষেত্রে গ্রাম থেকে সব শিক্ষকরা চলে গেলে স্কুলগুলির যে আরও বেহাল দশা হবে, তা বলাই বাহুল্য।
এর মধ্যে সবচেয়ে বড় দিকটি হল, যে কারণে বদলি নিয়ে এত দাবি, সেটাকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এমনটাই অভিযোগ শিক্ষকদের একাংশের। সেই মূল কারণটি হল বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব। অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাই দিনে ৬-৭ ঘণ্টা পর্যন্ত ট্রেনে-বাসে করে পড়াতে যান। সেই কারণেই কাছের স্কুলে বদলি চান তাঁরা।
কিন্তু পোর্টালে দেখা যাচ্ছে, কোনও শিক্ষকের সিনিয়রিটিকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্বকে নয়। ফলে আখেরে কোনও লাভই হচ্ছে না, দাবি শিক্ষক সংগঠনগুলির।
গত ৩১ জুলাই উত্সশ্রী পোর্টালের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তবে সেদিনই তিনি জানিয়েছিলেন, 'পোর্টাল চালু করা হচ্ছে। তবে আগামী ৩১ অগস্ট পর্যন্ত ফিডব্যাক নেওয়া হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী আপডেট করা হবে।' শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আর্জি মেনে সেই আপডেট হয় কিনা, এখন সেটাই দেখার।