বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > শুনানি বিলম্বিত হলে জামিন পাবে UAPA-তে অভিযুক্ত, জানাল সুপ্রিম কোর্ট

শুনানি বিলম্বিত হলে জামিন পাবে UAPA-তে অভিযুক্ত, জানাল সুপ্রিম কোর্ট

সুপ্রিম কোর্ট। (ফাইল ছবি, সৌজন্য সোনু মেহতা/হিন্দুস্তান টাইমস)

ইউএপিএয়ের ৪৩ডি (৫) ধারার আওতায় অভিযুক্তদের জামিন প্রদানের ক্ষেত্রে বাধা আছে।

আব্রাহাম থমাস

সংবিধান প্রদত্ত দ্রুত বিচারের অধিকার লঙ্ঘিত হলে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে (ইউএপিএ) জামিন পাবে অভিযুক্ত। সোমবার এমনই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট।

ইউএপিএয়ের ৪৩ডি (৫) ধারার আওতায় অভিযুক্তদের জামিন প্রদানের ক্ষেত্রে বাধা আছে। সেই ধারার ব্যাখ্যার মাধ্যমে ওই ধারায় অভিযুক্তদের জামিনের আর্জি নাকচ করে দেওয়া হত। কিন্তু সোমবার সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, শীর্ষ আদালতের কাছে এটা স্পষ্ট যে ইউএপিএয়ের ৪৩ডি (৫) ধারার মতো বিধিবদ্ধ সীমাবদ্ধতা মোটেও সংবিধানের তৃতীয় খণ্ডের (মৌলিক অধিকার) লঙ্ঘনের ভিত্তিতে আদালতের জামিন মঞ্জুরের ক্ষমতাকে অবলুপ্ত করতে পারে না।

২০১০ সালের জুলাইয়ে কেরালায় এক অধ্যাপক হাত কেটে নেওয়ার মামলায় ওই অভিযুক্তকে জামিন মঞ্জুর করেছিল হাইকোর্ট। ইউএপিএয়ের ৪৩ডি (৫) ধারা  দর্শিয়ে সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানায় কেন্দ্র। সেই ঘটনায় আরও যে ১৩ জন অভিযুক্ত হয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে শুনানি শেষ হয়ে গিয়েছে। অনেকের সাজাও ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু ওই অভিযুক্ত কেএ নাজিব প্রথমে পলাতক ছিল। যে কট্টরপন্থী মুসলিম সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার (পিএফআই) সদস্য ছিল। পরীক্ষার একটি প্রশ্নে একটি ধর্মের ভাবাবেগে ‘আঘাত’ দেওয়ার জন্য ওই অধ্যাপককে ‘শিক্ষা’ দিতে চেয়েছিল। ২০১৫ সালে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গত বছর নভেম্বরে তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। বয়ান রেকর্ডের জন্য এখনও ২৭০ জনের বেশি সাক্ষীর তালিকা আছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) হাতে।

তবে হাইকোর্টের রায়ে হস্তক্ষেপ করতে অস্বীকার করে সুপ্রিম কোর্ট। তিন সদস্যের বেঞ্চ জানিয়েছে, শুনানির শুরুতে আইনের ধারা (এক্ষেত্রে ইউএপিএয়ের ৪৩ডি (৫) ধারা) মেনেই এগিয়ে যাবে আদালত। কিন্তু একটি যুক্তিযুক্ত সময়ের মধ্যে শুনানি শেষ না হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে সেই ধারার কঠোরতা কমতে থাকবে। সংশ্লিষ্ট ধারার আওতায় সাজার যে মেয়াদ হতে পারে, তার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ পেরিয়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে ইউএপিএয়ের ৪৩ডি (৫) ধারায় যে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে, তা দ্রুত শুনানির সাংবিধানিক অধিকারকে লঙ্ঘন করতে পারে না। ভারতীয় সংবিধানের ২১ ধারায় দ্রুত শুনানির অধিকার আছে। একইসঙ্গে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, যে ঘটনায় অভিযুক্ত নাজিব, তা অত্যন্ত ‘ঘৃণ্য’ অপরাধ।

এনআইএ অবশ্য আদালতে আশ্বাস দিয়েছিল, রোজ শুনানি চলবে। কিন্তু শীর্ষ আদালতের মতে, দু'বার সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও ২৭৬ জন সাক্ষীর পরীক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে এনআইএ। একইসঙ্গে যে ধারায় নাজিবকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, তাতে সর্বোচ্চ আট বছরের জেলের সাজা হতে পারে। ইতিমধ্যে প্রায় সাড়ে পাঁচ বছরে জেলে কাটিয়ে ফেলেছে সে। তবে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, নাজিবকে একাধিক শর্ত মেনে চলতে হবে। সঙ্গে কেরালা হাইকোর্টের জামিনের শর্তও পালন করতে বাধ্য নাজিব। কোনও শর্ত ভঙ্গ হলে বিশেষ আদালতকে নাজিবের জামিন খারিজ করে দেওয়ার অধিকারও দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

বন্ধ করুন