ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ ধারাকে মহিলারা 'অপব্যবহার' করছেন ‘আিনি সন্ত্রাস’ দিয়ে, এমনই বক্তব্য উঠে এসেছে এক মামলা ঘিরে কলকাতা হাইকোরর্টের এক পর্যবেক্ষণে। সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট এক মামলার রায় দিতে গিয়ে একথা জানিয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শুভেন্দু সামন্তের সিঙ্গল বেঞ্চে মামলা ওঠে। সেই মামলার শুনানির সময় বিচারপতি বলেন, 'আইনসভা সমাজ থেকে পণের ভয় দূর করার জন্য ধারা ৪৯৮এ এর বিধান প্রণয়ন করেছে। কিন্তু বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় যে উক্ত বিধানের অপব্যবহার করে নতুন আইনি সন্ত্রাসের রাস্তা উন্মোচিত হচ্ছে।' প্রসঙ্গত, ভারতীয় দণ্ডবিধির এই ধারায় কোনও মহিলার ওপর অত্যাচারের ক্ষেত্রে তাঁর স্বামী ও স্বামীর পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা যায়। এই অত্যাচার ও নৃশংসতা যা এই ধারার আওতায় তুলে ধরা হয়েছে, তা শুধুমাত্র স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে প্রমাণিত হয় না। যে মামলা নিয়ে এই সওয়াল জবাব চলছিল, সেখানে এক স্বামী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে ৪৯৮এ ধারায় মামলা রুজু ছিল। যে অভিযোগ নস্যাতের আর্জি ওই স্বামী জানান হাইকোর্টের কাছে। সেই ধারায় অভিযোগ খারিজ করেছে কোর্ট। কোর্ট বলছে, ‘ যদি ফৌজদারি আইন একজন অভিযোগকারীকে একটি ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করার অনুমতি দেয়, তাহলে এটিকে যৌক্তিক প্রমাণ প্রতিপন্য করে, তাকে ন্যায়সঙ্গত করতে হবে।’
যে মামলা কোর্টে চলছিল সেখানে ২০১৭ সালের একটি অভিযোগ ঘিরে মামলা দায়ের হয়েছে। সেখানে স্বামী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের অক্টোবর ও ডিসেম্বরে অভিযোগ দায়ের করেন স্ত্রী। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের কাছে রয়েছে পড়শিদের বয়ান। যে বয়ান আপাতভাবে সাধারণ বলে ধার্য হয়েছে। এরপর ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ওই মহিলা, তাঁর স্বামী ও স্বামীর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচারের অভিযোগ করেন। কোর্ট বলছে, সেই সমস্ত অভিযোগের কোনওটিই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে টিকছেনা প্রমাণের দিক থেকে। উল্লেখ্য, এই মামলায় তাঁর ও তাঁর পরিবারের উপর থেকে স্ত্রীর দায়ের করা সমস্ত অভিযোগ সরিয়ে নেওয়ার আবেদন জানান মহিলার স্বামী। সেই আর্জি নিয়ে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। বিচারপতি বলেন,'আমি মনে করি যে, স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে (এই মামলায়) অভিযোগকারীর দায়ের করা তাত্ক্ষণিক ফৌজদারি মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে কোনও অভিযোগ দাঁড়াচ্ছে না।' কোর্ট বলছে, ‘এই উদ্যোগ কেবলমাত্র ব্যক্তিগত রাগ নিয়ে দায়ের করা হয়েছে।’ আর তার সূত্র ধরেই ওই ধারায় মামলা খারিজ হয় কোর্টের ওই পর্যবেক্ষণকে সঙ্গে নিয়ে।