খেলাধুলার ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার সাক্ষী ছিল জাভা প্রদেশের মালাং শহরের কাঞ্জুরুহান স্টেডিয়াম। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলের মধ্যে ফুটবল ম্যাচ ঘিরেই উত্তেজনা ছড়ায়। বেধে যায় দাঙ্গা। তাতে নিহত হয়েছিলেন ১৩৫ জন। আর বৃহস্পতিবার সেই ঘটনায় বড় রায় দিল ইন্দোনেশিয়ার আদালত। স্টেডিয়ামের এই দাঙ্গা আটকাতে সে ভাবে তৎপর না হওয়ার জন্য এবং অবহেলার কারণে দুই কর্মকর্তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।।
গত অক্টোবরে মালাং শহরের কাঞ্জুরুহান স্টেডিয়ামে ইন্দোনেশিয়ার লিগের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পার্সেবায়া সুরাবায়া এবং আরেমা ফুটবল ক্লাব। পার্সেবায়া তার ঘরের মাঠে আরেমাকে হারিয়ে দেয়। আর এর পরেই শত শত বিক্ষুব্ধ সমর্থক মাঠে নেমে পড়ে। শুরু হয় ঝামেলা। সেটা দাঙ্গার আকার নেয়। তাতেই প্রাণ হারান প্রায় ১৩৫ জন। মূলত শত শত লোক সংকীর্ণ পথ দিয়ে স্টেডিয়াম ছেড়ে বের হওয়ার সময়ে পদদলিত হয়। যার ফলে ৪০-এরও বেশি শিশুর পাশাপাশি অনেকেই শ্বাসরোধ হয়ে মারা যান।
আরও পড়ুন: এই ধরনের ম্যাচে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে ঠাণ্ডা মাথায় ভালো খেলা কঠিন- সাবধানী ফেরান্দো
আব্দুল হারিস, যিনি ম্যাচ সংগঠক ছিলেন, অবহেলার জন্য দোষী সাব্যস্ত হন তিনি এবং তাঁকে ১৮ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বিপক্ষের আইনজীবীরা ছয় বছর আট মাসের কারাদণ্ডের আবেদন চেয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত সুরাবায়া শহরের আদালতে প্রিসাইডিং বিচারক আবু আছমাদ সিদকি আমস্যা বলেন,‘আমি আসামিকে দেড় বছরের কারাদণ্ড দিচ্ছি।’
সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে ইন্দোনেশিয়ার এটিই প্রথম রায়। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সুকো সুত্রিসনোকেও অবহেলার জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারক এবং তাঁকে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিচারকের দাবি, ‘আসামির কাছে বিশৃঙ্খলার পূর্বাভাস ছিল না। কারণ এর আগে কখনও কোনও জরুরি পরিস্থিতি ঘটেনি। তবে আসামিও একজন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্তা হিসেবে নিদের কাজ ভালো ভাবে করেননি।’ এই রায়ের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য দু'জনের কাছে সাত দিন সময় রয়েছে।
এর বাইরে এই ঘটনায় আরও তিন জন স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং তাঁরা রায়ের অপেক্ষায় রয়েছেন। ইন্দোনেশিয়ার প্রিমিয়ার লিগ পরিচালনাকারী সংস্থার প্রাক্তন পরিচালককে সন্দেহভাজন হিসেবে তালিকায় রাখা হয়েছে এবং পুলিশ তদন্তের অধীনে রয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ATKMB-র কাছে বদলার ম্যাচ, হায়দরাবাদ মরিয়া গত বারের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে
পুলিশ ১ অক্টোবরের সেই ঘটনাকে দাঙ্গার তকমাই দিয়েছে। এবং বলেছে যে, পুলিশের দুই কর্মীও নিহত হয়েছেন। তবে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করেছে। স্ট্যান্ডে নির্বিচারে টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ার আগে অফিসারদের মাঠে সমর্থকদের লাথি মারতে এবং মারধর করতেও দেখা গিয়েছে।
ফুটবলের বিশ্ব নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা স্টেডিয়ামের অভ্যন্তরে এই ধরনের দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিকে বেআইনি বলেছে। এই ট্র্যাজেডিটি ইন্দোনেশিয়ার কর্মকর্তাদের কাছেও বড় ধাক্কা। ঘরোয়া ফুটবলে বিভিন্ন বিষয়ে ব্যর্থতাকেই তুলে ধরেছে। এবং বছরের পর বছর ধরে নড়বড়ে পরিকাঠামো, অব্যবস্থাপনা এবং হিংসার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘরোয়া ফুটবল।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।