লাল-হলুদের সামনে একটাই লক্ষ্য, সুপার কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া। বহু দিন ধরেই লাল-হলুদের ট্রফির খরা। আর সেই খরা কাটানোর স্বপ্ন দেখাচ্ছেন কার্লেস কুয়াদ্রাত এবং তাঁর ছেলেরা। আর তার জন্য আরও দু'টি ধাপ টপকাতে হবে ইস্টবেঙ্গলকে। সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল- এই দুই ম্যাচ জিতলেই বাজিমাত করবে লাল-হলুদ।
বুধবার জামশেদপুর এফসি-কে হারাতে পারলে, মরশুমের দ্বিতীয় ফাইনালে উঠবে লাল-হলুদ বাহিনী। ডুরান্ড কাপের ফাইনালে উঠেও খেতাব জেতা হয়নি। মোহনবাগানের কাছে হেরে, রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। এবার ট্রফি ছাড়া আর কিছু ভাবছে না লাল-হলুদ।
তবে ইস্টবেঙ্গলের জন্য কিন্তু সেমিফাইনালে লড়াইটা সহজ হবে না। লাল-হলুদের মতো জামশেদপুরও, লিগ পজ্ঞবে তিনটি ম্যাচই জিতেছে। এই তিন ম্যাচে সাত গোল দিয়ে তিন গোল খেয়েছে জামশেদপুর। অন্যদিকে আট গোল দিয়ে চার গোল খেয়েছে ইস্টবেঙ্গল।
গত ৪ নভেম্বর ইন্ডিয়ান সুপার লিগে কেরালা ব্লাস্টার্সের কাছে হারের পর থেকে, এখনও পর্যন্ত টানা আটটি ম্যাচে হারেনি ইস্টবেঙ্গল। এর মধ্যে চারটি ম্যাচ তারা ড্র করেছে এবং চারটিতে জয় পেয়েছে।
জামশেদপুর আবার আইএসএলে পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে তিনটিতে হেরে বসে থাকে। একটি ম্যাচ তারা ড্র করেছে। আর একটিতে জিতেছে। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের মতো অতটা ধারাবাহিক নয় তারা। কোচ হিসেবে খালিদ জামিল দায়িত্ব নেওয়ার পর সুপার কাপে এসে যে ধারাবাহিকতা দেখিয়েছে জামশেদপুর, তা অবশ্যই উল্লেখযোগ্য।
আরও পড়ুন: ধারাবাহিকতা ধরে রাখাটাই আসল, গত মরশুমে ইস্টবেঙ্গলে এটা মিসিং ছিল- ট্রফিই পাখির চোখ কুয়াদ্রাতের
ইস্টবেঙ্গল শেষ ম্যাচে মোহনবাগানকে হারিয়ে বাড়তি মোটিভেশন পেয়ে গিয়েছে। তবে ডার্বি জয়ের উচ্ছ্বাস যাতে সেমিফাইনাল ম্যাচে না পড়ে, সেদিকে কড়া দৃষ্টি রয়েছে কুয়াদ্রাতের। লাল-হলুদের স্প্যানিশ কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত বলেছেন, ‘মোহনবাগান দেশের অন্যতম সেরা দল। গ্রুপে ওরাই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দী ছিল। তাই ওদের হারানোটা আমাদের কাছে বড় ব্যাপার। ড্রেসিংরুমে এখন দারুণ মেজাজে রয়েছে ছেলেরা। আমাদের পরিকল্পনাও তৈরি। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতিও খুবই ভালো হচ্ছে। তবে আমাদের কাছে ট্রফি জয়টাই কিন্তু আসল।’
ডুরান্ডের পরে ফের ফাইনালে ওঠার সুযোগটাকে যে ভরপুর কাজে লাগাতে চান তাঁর দলের খেলোয়াড়রা, তা জানিয়ে কুয়াদ্রাত বলেন, ‘দলের ছেলেরা ডুরান্ড কাপের পর আবার ফাইনালে উঠতে চায়। তাই ওরা সেমিফাইনাল জেতার ব্যাপারে মরিয়া। ভালো খেলছে। ভালো প্রস্তুতি নিচ্ছে, পরিশ্রম করছে। এই ম্যাচটা জেতা খুবই জরুরি। সেমিফাইনাল সব সময়েই বড় ম্যাচ ও কঠিন ম্যাচ। এই ম্যাচে আমাদের সেরাটা দিতেই হবে।’
গত আট ম্যাচে অপরাজিত থাকা প্রসঙ্গে কুয়াদ্রাত বলেছেন, ‘ধারাবাহিকতা আসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যা গত কয়েক বছরে ইস্টবেঙ্গলের ছিল না। আমাদের মুম্বই সিটি এফসি, বেঙ্গালুরু এফসি-র মতো দলের বিরুদ্ধে ভালো ফল রয়েছে। গত কয়েকটি ম্যাচে আমরা বেশি গোল খাইনি। এটা খুবই জরুরি। কারণ, বেশি গোল খেলে জেতা কঠিন হয়ে যায়। দলের ছেলেদের সেটা বোঝানোর পর থেকে আমাদের গোল খাওয়া অনেক কমেছে। এই টুর্নামেন্টে তিন ম্যাচে দু’গোল খেয়েছি আমরা। তার আগে আইএসএলের তিনটি ম্যাচে কোনও গোল খাইনি। এগুলো খুব ভালো ইঙ্গিত।’
কার্ড সমস্যার জন্য এই ম্যাচে দলের স্প্যানিশ আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার বোরহাকে পাবে না ইস্টবেঙ্গল। দলের আক্রমণের ক্ষেত্রে তিনি যথেষ্ট কার্যকরী ভূমিকা পালন করেন। কুয়াদ্রাত বলছিলেন, ‘বোরহাকে ছাড়াই আমাদের খেলতে হবে। এটা আমাদের পক্ষে ভালো খবর নয়। যেখানে ছ’জন বিদেশিকে নিয়ে খেলতে পারছিলাম, সেখানে একজন কম নিয়ে খেলতে হবে আমাদের। তবে এটা রেফারির ভুলে হয়েছে। তার খেসারত আমাদের এ ভাবে দিতে হচ্ছে। এটা ঠিক নয়।’
জামশেদপুরের পারফরম্যান্স নিয়ে স্প্যানিশ কোচের দাবি, ‘এখন আগের চেয়ে ভালো খেলছে। ধারাবাহিক ভাবে ম্যাচ জিতছে। শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। যার ফলে ওদের হারাতে গেলে আমাদের সেরাটা উজাড় করে দিতে হবে। তবে শেষ তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষের উপর আধিপত্য করেই জিতেছি আমরা। এই ম্যাচেও সেটাই করার চেষ্টা করব। তবে শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে হবে আমাদের।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।