ক্রিকেট অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে না পারার আফসোসটা নিঃসন্দেহে রয়ে গিয়েছে ইংল্যান্ডের। কিন্তু সেই যন্ত্রণায় কিছুটা হলেও মলম দিল ইংল্যান্ডের মহিলা ফুটবলাররা। মহিলা বিশ্বকাপের সেমিতে অস্ট্রেলিয়াকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথম বারের জন্য ফাইনালে উঠল ইংল্যান্ড।
২০১৫–এর পর ২০১৯- পরপর দু'টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল ইংল্যান্ড। তবে টানা তৃতীয় সেমিফাইনালে আর আক্ষেপের গল্প নয়। ইংল্যান্ডের মেয়েরা লিখল নতুন ইতিহাস।
বুধবার সিডনির অলিম্পিক স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে তাদের ঘরের মাঠেই দাপটের সঙ্গে হারিয়ে দিল ব্রিটিশ মহিলা ব্রিগেড। আগামী রবিবার বিশ্বকাপের শিরোপার লড়াইয়ে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে স্পেন।
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের চার নম্বরে থাকা ইংল্যান্ড ইউরোপীয় ফুটবলের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে অস্ট্রেলিয়া প্রথম বার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছিল। তবে অজিদের জন্য সহায়ক শক্তি হিসেবে ছিল পুরো স্টেডিয়ানের গ্যালারি। তবে এদিন ইংল্যান্ডের জয়ের খিদেটা এতটা বেশি ছিল যে, অজিরা টিকতে পারেনি লড়াইয়ে।
আরও পড়ুন: ১৬ অগস্ট- কলকাতা ময়দানের ‘কালো দিন’, ইডেনে ডার্বি দেখতে এসে অকালে ঝরেছিল ১৬টি প্রাণ
বুধবারের ম্যাচ শুরু থেকেই দাপটের সঙ্গে শুরু করেছিলেন ইংল্যান্ডের মেয়েরা। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথমার্ধেই ১-০ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। খেলার একেবারে শুরুতে অজিরা কিছুটা লড়াই করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তার পরেই ইংল্যান্ড খেলার রাশ নিজেদের হাতে নিয়ে নেয়।
ম্যাচের ৩৬ মিনিটে গোল করে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে দেন দলের ১০ নম্বর এলা টুনে। বাঁদিক থেকে বলটি টুনের কাছে পাঠান লরেন হেম্প। গোলের ১০ গজের মধ্যে থাকা টুনে দেরি করেননি। বলটি ধরেই দ্বিতীয় পোস্টে জোরালো শট নেন। গোলরক্ষকের পক্ষে সেই বল আটকানো সম্ভব হয়নি। বিরতিতে ১-০ এগিয়ে থেকে মাঠ ছাড়ে ইংল্যান্ড। এবারের বিশ্বকাপে যে তিনটি ম্যাচে ইংল্যান্ড প্রথমার্ধে এগিয়ে ছিল, তার কোনওটিতেই তারা হারেনি।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য গোল করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন অজি মেয়েরাও। অধিনায়ক স্যাম কের নিজের কাঁধে সেই দায়িত্ব তুলে নেন। যদিও চোটের কারণে কেরের খেলা নিয়ে সংশয় ছিল, তবে এদিন তিনি শুরু থেকেই মাঠে নামেন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে পুরো ম্যাচটাই খেললেন। তবে দলকে জেতাতে পারলেন না।
আরও পড়ুন: কঠিন বাস্তবের সামনে ফের স্বপ্ন বিসর্জন, চাকরির জন্য বাংলা ছাড়লেন দুই তারকা ফুটবলার
কিন্তু কেরে চেষ্টা করেছিলেন। গোলও করেছিলেন ৬৩ মিনিটের মাথায় মাঝমাঠ থেকে বল তুলে এনে দুই ডিফেন্ডারকে ঘাড়ের উপর নিয়ে পরাস্ত করেন ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক ম্যারি আর্পসকে। ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া জোরালো শটে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সমতা ফেরান কের। এই নিয়ে ইংরেজ গোলরক্ষকের বিরুদ্ধে ১০টি গোল করে ফেললেন অজিদের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল করা স্ট্রাইকার।
এর ৮ মিনিট পরেই অস্ট্রেলিয়ার উজ্জীবিত গ্যালারিকে স্তব্ধ করিয়ে দেন লরেন হেম্প। এই গোলে অবশ্য অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্ডার এলি কার্পেন্টারেরই দায় বেশি। ইংলিশ ডিফেন্ডার মিলি ব্রাইট লম্বা বল বাড়ান হেম্পের দিকে, তবে বল ক্লিয়ার করার সুযোগ ছিল কার্পেন্টারের কাছে। কিন্তু বল বিপদ মুক্ত করতে পারেননি। আর সেই সুযোগেই বল নিয়ন্ত্রণে নেন হেম্প। এর পর দূরের পোস্ট লক্ষ্য করে জোরালো শট নেন হেম্প, শট রুখতে অজি গোলরক্ষ চেষ্টা করেও রুখতে পারেননি। তাঁর হাতে বল লাগলেও দিক পাল্টায়নি। বল যায় জালে।
ম্যাচে দ্বিতীয়বার পিছিয়ে পড়ার পর অস্ট্রেলিয়া মনোযোগ বাড়ায় আক্রমণে। আর সেটি করতে গিয়ে ইংল্যান্ডের প্রতি-আক্রমণ আরও ধারালো হয়ে ওঠে। তেমনই এক আক্রমণে ৮৬ মিনিটে ইংল্যান্ডকে তৃতীয় গোল এনে দেন রুশো। যোগ করা ৬ মিনিট সহ ম্যাচের বাকি ১০ মিনিটে আর দুই গোলের ব্যবধান কমাতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। তাদের প্রথম ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন গুঁড়িয়ে নিজেরা ইতিহাস লিখে ফেলল ইংল্যান্ড।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।