বাংলার ফুটবলে ফের শোকের ছায়া। প্রয়াত হলেন ইস্টবেঙ্গলের স্বর্ণযুগের ফুটবল সচিব অজয় শ্রীমানি। বার্ধক্য জনিত রোগে বহু দিন ধরেই ভুগছিলেন। বুধবার তিনি প্রয়াত হন। তাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া কলকাতা ময়দানে। মৃত্যুকালে অজয় শ্রীমানির বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।
সুধীর কর্মকার-পিকে বন্দ্যোপাধ্যাকে ইস্টবেঙ্গলে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন অজয় শ্রীমানি। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। ক্লাবের তরফে শোকবার্তায় লেখা হয়েছে, ‘আমরা তাঁর বিদেহি আত্মার শান্তি কামনা করি। তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সমবেদনা জানাই।’
ইস্টবেঙ্গলের প্রবাদপ্রতিম কর্তা জ্যোতিষ গুহর স্নেহধন্য ছিলেন অজয় শ্রীমানী। তাঁর হাত ধরেই কাজ শেখা শ্রীমানির। ১৯৭২-১৯৭৪ সালে লাল-হলুদের ফুটবল সচিব হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন। সেই সময়ে ইস্টবেঙ্গলের সাফল্য ছিল একেবারে নজর কাড়া। এই সময়টাই লাল-হলুদের স্বর্ণযুগ হিসেবে পরিচিত। পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে সুধীর কর্মকার, পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফেরানো হয় ইস্টবেঙ্গলে। সেবারই মজিদ বিসকর, জামশেদ নাসিরি, মাহমুদ খাবাজিকেও দলে নিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল।
অজয় শ্রীমাণির সময়েই ইস্টবেঙ্গলে সই করেছিলেন সুভাষ ভৌমিক, সুধীর কর্মকার, গৌতম সরকারের মতো বিখ্যাত ফুটবলাররা। ১৯৭৫ সালে ৫ গোলে ইস্টবেঙ্গলকে জেতানো দলের সদস্যদের বিশেষ উপহার দিয়েছিলেন উচ্ছ্বসিত অজয় শ্রীমানী। তাঁর বাড়িতে দুর্গাপুজো হত। সেই পুজোয় ইস্টবেঙ্গলের তৎকালীন সমস্ত ফুটবলারকেই একটি করে সোনার আংটি উপহার দিয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ডালহৌসিকে হারিয়ে কলকাতা লিগের সুপার সিক্সে জায়গা পাকা করে ফেলল মহমেডান
নিজে আদ্যন্ত ঘটিবাড়ির ছেলে ছিলেন অজয় শ্রীমানি। অথচ ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে পাগলের মতো ভালোবাসতেন। যদিও এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি মোহনবাগানি নই, পুরোপুরি ইস্টবেঙ্গল। আমি এই ক্লাবের সমর্থক হয়েই পৃথিবীতে এসেছি। চলে যাব এই ক্লাবের সমর্থক হয়ে।’
১৬ বছর বয়সে তিনি প্রথম বার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সদস্য হন। সালটা ১৯৪৯। সেই বছর ক্লাবের বারপুজো দেখে বেরনোর সময় জ্যোতিষ গুহ তাঁকে ডেকে ক্লাবের সাব কমিটিতে জায়গা করে দেন। একে তিনি উত্তর কলকাতার বনেদি বাড়ির ছেলে, তার উপর এদেশীয়, সব মিলিয়ে ইস্টবেঙ্গলে জায়গা পাওয়ার কোনও রাস্তাই ছিল না তাঁর পক্ষে। তবে এই সমস্যা থাকলেও, ইস্টবেঙ্গলের প্রতি তাঁর ভালোবাসাই তাঁকে বাঙাল ক্লাবে আলাদা জায়গা করে দিয়েছিল।
ইস্টবেঙ্গলের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ফুটবল সচিবের নাম অজয় শ্রীমাণি। ফুটবলারদের সঙ্গে তাঁর দারুণ সম্পর্ক ছিল। পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গা থেকে ফুটবলার তুলে আনার কাজটাও দারুণ ভাবে করতেন তিনি।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।