একটা লম্বা রান-আপ নিলেন হাজিয়া। সম্ভবত গুরপ্রীত সিং সান্ধুর মনে সন্দেহের বীজ বপন করতেই সেই কাজটা করেন কুয়েতের অধিনায়ক। তারপর হালকা চালে দৌড়ে এসে নিজের ডানদিকে শটটা মারেন। নিজের বাঁ-দিকে ঝাঁপিয়ে বাঁ-হাতের তালু দিয়ে দুর্দান্তভাবে সেই শটটা বাঁচিয়ে দিলে ভারতীয় গোলকিপার। তারপরই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়লেন ভারতীয় ফুটবলাররা। বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ল বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়াম। আর যে গুরপ্রীত ভারতের নবম সাফ কাপ এনে দিলেন, তিনি অবশ্য একেবারে ধীরস্থির থাকলেন। উচ্ছ্বাসের লেশমাত্র দেখা গেল না তাঁর মধ্যে। বরং ভাবখানা এমন ছিল যে তেকাঠির নীচে ‘আমিই বস, আমি তো টাইব্রেকারে শট বাঁচাব, আমি তো দলকে জেতাবই। তাতে বাড়তি উন্মাদনার কী আছে!’
আরও পড়ুন: SAFF Championships Final Live: পিছিয়ে গিয়েও ম্যাচে ফেরা, টাইব্রেকারে কুয়েতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন ভারত
ভারতীয় সমর্থকরা অবশ্য সেরকম ‘কুল’ থাকেননি। বরং মঙ্গলবার কুয়েতের বিরুদ্ধে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে তাঁদের যেন বাড়তি অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণ হচ্ছিল। আর হওয়ারই তো কথা। কারণ ১২০ মিনিটেও ম্যাচের ফয়সালা হয়নি। নির্ধারিত সময় খেলার ফল ১-১ গোল ছিল। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে বিপক্ষের গোলমুখ খুলতে পারেনি কোনও দল। স্বভাবতই টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ। সেমিফাইনালে লেবাননের বিরুদ্ধে কান্তিভারার যে প্রান্তে টাইব্রেকার হয়েছিল ভারতের, সেই প্রান্তেই সাফের চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণের পেনাল্টি শ্যুট-আউটও হয়। সাডেন ডেথে শেষ শটের আগে ভারতের পক্ষে ফল ছিল ৫-৪।
অর্থাৎ কুয়েত গোল করতে না পারলেই সাফে চ্যাম্পিয়ন হবে ভারত। সেই পরিস্থিতিতে গুরপ্রীতের উপর কিছুট চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করেন কুয়েতের অধিনায়ক। তবে ভারতীয় গোলকিপারও কম যান না। কোনওরকম আগ্রাসী ব্যবহার না করেও ঠিক গোললাইনের মাথায় দাঁড়িয়ে ‘মাইন্ড গেম’ শুরু করেন। তারইমধ্যে লম্বা রান-আপ নিয়ে এসে গুরপ্রীতের বাঁ-দিকে শট মারেন কুয়েতের অধিনায়ক। শটটা নেহাত মন্দ ছিল না। জোরালো শট ছিল। কিন্তু দুর্দান্ত অনুমান ক্ষমতায় নিজের বাঁ-দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে বলটা গোলের মধ্যে জেতে দেননি সাড়ে ছয় ফুটেরও বেশি লম্বা গুরপ্রীত। যিনি সেমিফাইনালেও টাইব্রেকারে ভারতের নায়ক হয়ে উঠেছিলেন।
তবে সেই জয়ের কোনও কৃতিত্ব নিতে চাননি গুরপ্রীত। বরং সতীর্থদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন ভারতীয় গোলকিপার। তিনি বলেন, ‘গোল হজম করার পরও হাল ছেড়ে না দেওয়ার জন্য দলের ছেলেদের যাবতীয় কৃতিত্ব প্রাপ্য। আমার মতে, পুরো ম্যাচে ওটাই আমাদের দুর্বলতম জায়গা ছিল। কুয়েত ওই গোলটাই ধরেছিল। কিন্তু পেনাল্টি যখন ম্যাচ গড়ায়, তখন যে কেউ জিততে পারে। আজ আমাদের দিন ছিল।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।