রেকর্ড অষ্টমবারের মতো ব্যালন ডি’অর জিতলেন আর্জেন্তিনার ফরোয়ার্ড লিওনেল মেসি। মেসির ব্যালন ডি'অর জেতার অন্যতম কারণ হল তিনি আর্জেন্তিনাকে ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপ জয়ে নেতৃত্ব দেন। মেসি ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপে সাতটি গোল এবং তিনটি অ্যাসিস্ট করার জন্য গোল্ডেন বল জিতেছিলেন। মেসি এর আগে ২০০৯, ২০১০, ২০১১, ২০১২, ২০১৫, ২০১৯ এবং ২০২১ সালে ব্যালন ডি'অর জিতেছিলেন।
এবারে আর্লিং হালান্ড ও কিলিয়ান এমবাপেকে পিছনে ফেলে ব্যালন ডি’অর জিতলেন লিওনেল মেসি। ম্যাঞ্চেস্টার সিটির হয়ে গত মরশুমে ৫৩টি গোল করার পাশাপাশি ট্রেবল জিতেছিলেন তারকা ফুটবলার হালান্ড। অন্যদিকে গত কাতার বিশ্বকাপে ফ্রান্সকে ফাইনালে তোলার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন এমবাপে। হ্যাটট্রিকের পর দলকে শিরোপা জেতাতে না পারলেও টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ৮ গোল করে তিনি জিতেছিলেন গোল্ডেন বুট। এছাড়া পিএসজির হয়ে গত মরশুমে ৪৩ ম্যাচে ৪১টি গোল করেছিলেন তিনি। জিতেছিলেন লিগ শিরোপা। হালান্ড ও এমবাপেরা গত মরশুমে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করলেও তাদের ছাপিয়ে গিয়েছন মেসি এবং ফুটবলারদের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ মর্যাদার পুরস্কারটি নিজের দখলে নিয়েছেন। আসলে মেসি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আর্জেন্তিনাকে এনে দিয়েছেন ফুটবল বিশ্বকাপের ট্রফি।
উচ্চারিত হলো প্যারিসের তিয়াটর দু শাতলে। অষ্টমবারের মতো ব্যালন ডি’অর জিতেছেন লিওনেল মেসি। সাদা শার্টের ওপর কালো কোট এবং কালো বো টাই পরে অনুষ্ঠানস্থলে এসেছিলেন মেসি। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন তাঁর তিন ছেলে ও স্ত্রী। সেই সময়ে লিও লিও ধ্বনির মধ্যে প্রথমে স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে এবং পরে একক ছবিও দেন মেসি। এদিন আইভরি কোস্টের কিংবদন্তি ফুটবলার দিদিয়ের দ্রোগবার সঙ্গে পুরস্কার অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন ফরাসি সাংবাদিক ও উপস্থাপক স্যান্ডি হেরিবার্ট। ফুটবলের নক্ষত্রদের ভিড়ে আলাদাভাবে দৃষ্টি কেড়েছিলেন টেনিস মহাতারকা নোভাক জেকোভিচ। অনুষ্ঠানে সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের কোপা ট্রফি জিতেছেন রিয়াল মাদ্রিদের ইংলিশ তারকা জুড বেলিংহাম। বর্ষসেরা মহিলা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন স্প্যানিশ বিশ্বকাপজয়ী মহিলা ফুটবলার আইতানা বোনামাতি। আর অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ বর্ষসেরা পুরুষ ফুটবলারের পুরস্কার ওঠে মেসির হাতে। মেসির আট নম্বর ব্যালন ডি’অর জেতার ঘোষণা করেন ইংলিশ কিংবদন্তি ডেভিড বেকহাম।
পুরস্কার পাওয়ার পরে মেসি বলেছেন, ‘মুহূর্তটা উপভোগের জন্য এখানে উপস্থিত হতে পেরে আমি আনন্দিত।’ এ সময় বিশ্বকাপ জেতা নিয়েও নিজের অনুভূতিটা আরেকবার জানান মেসি, ‘বিশ্বকাপ জেতাটা ছিল আমার স্বপ্ন। এটা খুবই বিশেষ ব্যাপার ছিল যে, অন্য দেশের মানুষরাও চেয়েছে আর্জেন্তিনা বিশ্বকাপ জিতুক।’ নিজের প্রাপ্তি নিয়ে মেসি বলেন, ‘আমার এমন ক্যারিয়ার আমি স্বপ্নেও ভাবিনি। আমি যা অর্জন করেছি তা করার জন্য আমার ভাগ্য দারুণ সুপ্রসন্ন ছিল। আমি বিশ্বের সেরা দলে খেলেছি, ইতিহাসের সেরা দলে খেলেছি। এটা আমার জন্য ট্রফি জেতা এবং ব্যক্তিগত পুরস্কার জেতার কাজটাকে সহজ করেছে।’ পুরস্কার নিয়ে মেসি বলেন, ‘সত্যি হচ্ছে, এটা নিয়ে আমি অতটা ভাবছি না। যদি পুরস্কারটা পাই, ভালো। আর যদি না পাই, কিছুই আসে যায় না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি আমার ক্যারিয়ারে এটা অনেকবার বলেছি যে ব্যালন ডি’অর গুরুত্বপূর্ণ একটা পুরস্কার। ব্যক্তিগত পর্যায়ে এটা সবচেয়ে সুন্দর পুরস্কার। কিন্তু আমি কখনোই এটাকে অতটা গুরুত্ব দিইনি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল দলের অর্জন।’
এদিকে মহিলা বিভাগে ফুটবলারদের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ মর্যাদার পুরস্কার ব্যালন ডি’অর জিতেছেন বার্সেলোনা ও স্পেন জাতীয় দলের মিডফিল্ডার আইতানা বোনমাতি। ফরাসি সাময়িকী 'ফ্রান্স ফুটবল' প্রদত্ত বর্ষসেরা ফুটবলারের দৌড়ে তিনি পিছনে ফেলেছেন চেলসি ও অস্ট্রেলিয়ার ফরোয়ার্ড স্যাম কার এবং স্পেনের উইঙ্গার সালমা সেলেস্তেকে।
কে কোন পুরস্কার জিতছেন
বর্ষসেরা পুরুষ খেলোয়াড়- লিওনেল মেসি
বর্ষসেরা মহিলা খেলোয়াড়- আইতানা বোনামাতি
বর্ষসেরা ক্লাব (পুরুষ)- ম্যাঞ্চেস্টার সিটি
বর্ষসেরা ক্লাব (মহিলা)-বার্সেলোনা
লেভ ইয়েশিন ট্রফি (সেরা গোলরক্ষক)- এমিলিয়ানো মার্তিনেজ
জার্ড মুলার ট্রফি (সেরা স্ট্রাইকার)- আর্লিং হালান্ড
সক্রেটিস অ্যাওয়ার্ড (দাতব্য কাজে সম্পৃক্ততা)- ভিনিসিয়াস জুনিয়র
কোপা ট্রফি (অনূর্ধ্ব ২১ বছর বয়সি সেরা খেলোয়াড়)- জুড বেলিংহাম
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।