মোহনবাগানের লক্ষ্য আইএসএল লিগ টেবলের শীর্ষস্থান। শনিবার ওড়িশা এফসি-কে তাদের ঘরের মাঠে হারাতে পারলেই একে উঠে আসবে বাগান ব্রিগেড। সেই লক্ষ্যেই কলিঙ্গ জয়ে নামবে আন্তোনিও হাবাসের দল।
হাবাসের হাতে পড়ে যেন পুরো বদলেই গিয়েছে মোহনবাগান। বছর শেষের হারের গ্লানি ভুলে জয়ের হ্যাটট্রিকে ফিরেছে তারা। তারা আপাতত পয়েন্ট টেবলের তিনে আছে। এখন অপেক্ষা শীর্ষে ওঠার। ১৪ ম্যাচে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে তিনে রয়েছে সবুজ-মেরুন বাহিনী। এক ম্যাচ বেশি খেলে ৩১ পয়েন্টে এক নম্বর স্থানের দখল রেখা ওড়িশা এফসি। শনিবার ভুবনেশ্বরে এক বনাম তিনের লড়াই। জিতলেই টেবলের মগডালে ওঠার সুযোগ থাকবে বাগানের সামনে।
দুই, তিন বা চার নয়, এক নম্বরে থেকেই লিগ শেষ করতে চান মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের হেড কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। শনিবার বিকেলে ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে নামার আগে এই কথাই স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন তিনি।
কোনও বারই শীর্ষে থেকে শেষ করতে পারেনি বাগান। এ বার সেই লক্ষ্যেই তারা এগোচ্ছেন বলে দাবি হাবাসের। ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে নামার আগে হাবাস বলে দিলেন, ‘সম্প্রতি অনুশীলনের সময় দলের ছেলেদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। সেখানে আমি ছেলেদের কখনও বলিনি যে, আমরা তৃতীয় হতে চাই। এ অসম্ভব। খেলোয়াড়দের সেরা হওয়ার মানসিকতা এবং লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামা উচিত। প্রতি দিনই এই লক্ষ্যের দিকে তাকিয়েই লড়াই করতে হবে আমাদের।’
তবে ওড়িশার মতো শক্তিশালী দলকে হারানো যে মোটেই সোজা নয়, তা খুব ভালো করেই জানেন হাবাস। গত পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে চারটিতে জেতা এবং একটিতে ড্র করা ওড়িশার প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাও রয়েছে তাঁর। প্রতিপক্ষ সম্পর্কে কোচ বলেছেন, ‘ওড়িশা দলে যেমন ভালো ভালো ফুটবলার আছে, তেমনই ওদের একজন ভালো কোচও আছেন। খুব ভালো দল ওরা। এই ম্যাচটা জেতাই আমাদের লক্ষ্য। কিন্তু প্রতিপক্ষের প্রতি আমরা যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল। সারা মরশুমেই ওরা ভালো খেলেছে।’
অতীতে তাঁর কোচিংয়ে বাগানে ফুল ফোটাতেন রয় কৃষ্ণ। এবার প্রাক্তন ছাত্রকে রোখার চ্যালেঞ্জ। একদা প্রিয় শিষ্য রয় কৃষ্ণের আলাদা উল্লেখ করলেও, জানিয়ে রাখলেন, বিপক্ষের কোনও প্লেয়ারকে নিয়ে অতিরিক্ত ভাবতে রাজি নন তিনি। হাবাস বলেন, ‘রয় কৃষ্ণ যদি আমার দলে খেলত, তা হলে না হয় ওকে নিয়ে আলদা করে কোনও পরিকল্পনা করা যেত। রয় অসাধারণ খেলোয়াড়। ওর সঙ্গে কাজ করে খুবই আনন্দ পেয়েছি আমি। এখন ও আমার প্রতিপক্ষ। কিন্তু ফুটবলে এ রকমই হয়। ওকে আটকানোর জন্য বিশেষ কোনও পরিকল্পনা নেই। আমরা কোনও খেলোয়াড়কে নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা করি না। রয় এবং পুরো ওড়িশা দলটাই যথেষ্ট ভালো অবস্থায় আছে।’
সার্জিও লোবেরোর সঙ্গে হাবাসের চলবে মগজাস্ত্রের লড়াই। লিগের দুই অন্যতম সেরা কোচের স্ট্র্যাটেজির উপর নির্ভর করবে ম্যাচের ভাগ্য। তবে ওড়িশার মাঝমাঠের অন্যতম সেরা অস্ত্র আহমেদ জাহু কার্ড সমস্যার জন্য শনিবার খেলতে পারবেন না। এটা নিঃসন্দেহে বাগানের কাছে প্লাস পয়েন্ট। তবে হাবাসের দাবি, ‘প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের নিয়ে আলাদা করে কথা বলতে আমি পছন্দ করি না। ওদের সেন্ট্রাল মিডফিল্ড খুবই ভালো অবস্থায় রয়েছে। এখানে কোনও দল এক দিন তাদের সেরা খেলোয়াড়কে খেলাতে পারলেও, পরের দিন হয়তো কোনও কারণে তাকে খেলাতে পারে না। এ চলতেই থাকে। তা সত্ত্বেও যারা ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারবে, তারাই লিগে চ্যাম্পিয়ন হবে। প্রত্যেক দলের কাছেই বিভিন্ন বিকল্প পরিকল্পনা থাকাটা খুবই জরুরি। ওদেরও নিশ্চয়ই আছে।’
এ পর্যন্ত ২৮টি গোল করেছে দুই দলই। কিন্তু ওড়িশা এফসি যেখানে ১৪টি গোল খেয়েছে, সেখানে মোহনবাগান ১৮টি গোল হজম করেছে। রয় কৃষ্ণাদের বিপজ্জনক আক্রমণ বিভাগ নিয়েও আলাদা করে চিন্তিত নন হাবাস। হাবাস বলেন, ‘প্রতিপক্ষের আক্রমণ বিভাগ নিয়ে আমার কোনও সমস্যা নেই। কারণ, গত ম্যাচে প্রতিপক্ষের দু'গোলের জবাবে আমরা চার গোল দিয়েছি। যদি ওদের দু'গোলের জবাবে আমাদের ছেলেরা কোনও গোল দিতে না পারত, তা হলে আমার উদ্বেগের কারণ ছিল। এটাই ফুটবল। ওড়িশা কতটা শক্তিশালী দল, তা আমরা জানি। আমাদের কঠিন প্রতিপক্ষ হয়ে উঠতে হবে এবং তার পরে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করতে হবে।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।