ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার অ্যান্ডি রবার্টস বিশ্বাস করেন যে ভাগ্যের জোরে ভারত ১৯৮৩ বিশ্বকাপ জিতেছিল। কপিল দেবের নেতৃত্বে দুর্বল ভারত লর্ডসে ফাইনালে শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পরাজিত করে তাদের প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল। বিশ্বকাপের শেষ দুই সংস্করণে জয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলও টানা তৃতীয়বারের মতো শিরোপা জয়ের দাবিদার ছিল, কিন্তু ভারত সকলকে অবাক করে দিয়েছিল এবং বিশ্বকাপ ঘরে তুলেছিল।
এমনকি মানুষ বিশ্বাস করতে পারেনি যে কপিল দেবের সেই ভারতীয় দল ১৯৮৩ -র বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে। কিন্তু কপিল দেবের নেতৃত্বে দল ইতিহাস তৈরি করেছিল। ভারতের দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া এবং জিম্বাবোয়ের সঙ্গে একই গ্রুপে ছিল। ভারতকে তিনটি দলের সঙ্গেই দুবার মুখোমুখি হতে হয়েছে। র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দুই দল সেমিফাইনালে উঠতে চলেছে এটাই সকলে ভেবেছিল। প্রথম ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছিল ভারত। এটাই প্রথম ছিল যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল বিশ্বকাপের প্রথম কোনও ম্যাচ হেরেছিল।
তবে দ্বিতীয় লেগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরেছিল ভারত। ভারত গ্রুপ লিগে দুইবার জিম্বাবোয়েকে এবং একবার অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিল। এইভাবে ভারত সেমিফাইনালে পৌঁছে ছিল। যেখানে ভারত ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল এবং একটি কম স্কোরিং ফাইনাল ম্যাচে ভারত দুইবারের চ্যাম্পিয়ন দল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছিল। ডেসমন্ড হেইন্স, গর্ডন গ্রিনিজ, ক্লাইভ লয়েড এবং ভিভ রিচার্ডসের মতো তারকা খচিত দলের বিরুদ্ধে জেতাটা অনেক বড় বিষয় ছিল।
১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপে ভারত এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ তিনটি ম্যাচ খেলেছিল এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ভারত ফাইনাল সহ দুবার জিতেছিল। কিন্তু অ্যান্ডি রবার্টস এই ভারতের জয়কে ভাগ্যের জয় বলে মনে করেন। অ্যান্ডি রবার্টস, ১৯৮৩ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের অংশ ছিলেন এবং তখনকার ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভয়ঙ্কর পেস আক্রমণকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। অ্যান্ডি রবার্টস বিশ্বাস করে যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সেই টুর্নামেন্ট স্পষ্টতই ভালো দল ছিল। ভারতীয় দল শিরোপা জিতেছিল ভাগ্যের জোরে।
অ্যান্ডি রবার্টস স্পোর্টস্টারকে বলেছেন, ‘হ্যাঁ, আমরা ভারতের কাছে হেরেছি। আমরা সবাই জানি ক্রিকেট হল অনিশ্চয়তার খেলা। আপনি কিছু ম্যাচ জিতেন এবং আপনি কিছু ম্যাচ হারেন। আমরা সবসময় হারতে প্রস্তুত। আমরা জয়ের জন্য খেলতে নামতাম। কোনও মূল্য দিয়ে জেতা নয়, সুষ্ঠুভাবে এবং পরিষ্কারভাবে জিততে নামতাম। আমরা একটি ভালো দলের কাছে হারিনি। কিন্তু আমরা সকলেই জানি, ক্রিকেট এমন একটি খেলা যেখানে ম্যাচ চলাকালীন আপনাকে শীর্ষে থাকতে হয়। সেই ম্যাচে ভারতের ইনিংস শেষ হওয়া পর্যন্ত আমরা ভারতকে চাপে রেখেছিলাম। এবং আপনি দেখুন, লোকেরা ক্রিকেটকে ভাগ্য এবং সুযোগের খেলা হিসাবে দেখে না। ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত আমরা বিশ্বকাপের কোনও ম্যাচে হারিনি, কিন্তু ১৯৮৩ সালে আমরা দুবার হেরেছিলাম। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপে মাত্র দুটি পরাজয় হয়েছিল এবং ভারত দুইবারই আমাদের পরাজিত করেছিল।’
ক্যারিবিয়ান দলের হয়ে ৪৭টি টেস্ট এবং ৫৬টি ওয়ানডেতে ২৮৯ উইকেট নেওয়া রবার্টস আরও বলেছেন, ‘আমরা ফর্মে ছিলাম, কিন্তু খারাপ ম্যাচের কারণে আমরা টুর্নামেন্ট হেরেছিলাম। ১৯৮৩ সালে ভারতের জন্য এটা ভাগ্যের ব্যাপার ছিল। আমাদের কাছে দুর্দান্ত দল ছিল। তা সত্ত্বেও, আমরা ১৯৮৩ সালে দুটি ম্যাচ হেরেছিলাম এবং দুটিই ভারতের কাছে। এবং তারপর, পাঁচ বা ছয় মাস পরে, আমরা ভারতকে ৬-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছিলাম। সুতরাং, এটি ঠিক একই ম্যাচ ছিল। ১৮০ রানে আউট হওয়ার পরে ভাগ্য ভারতের পক্ষে ছিল। আমরা একতরফা ভাবে হারিনি।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।