প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভোট প্রচারে বেরিয়ে দেশের উন্নয়ন নিয়ে কথা না বলে মেরুকরণে ব্যস্ত রয়েছেন বলে বারবার অভিযোগ তুলে আসছে বিরোধীরা। সেরকমই রাজস্থানের বাঁশওয়াড়ায় রবিবার বিজেপির সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্তব্য ঘিরে বিতর্কের ঝড় উঠেছে দেশের রাজনীতিতে। কংগ্রেসসহ অন্যান্য বিরোধী নেতারা ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এবার প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিবাদ করায় দলেরই এক নেতাকে বহিষ্কার করল বিজেপি। রাজস্থানে বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার নেতা উসমান গণি প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য অসন্তোষ প্রকাশ করায় শাস্তি হিসেবে বুধবার দলের তরফ থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মোদীর 'মুসলিমদের সম্পদ পুনর্বণ্টন' অভিযোগের জের, পুলিশে এফআইআর করল সিপিএম
রাজস্থানের বাঁশওয়াড়ায় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘কংগ্রেস মা-বোনেদের কষ্টার্জিত সম্পত্তি মুসলমান এবং অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে ভাগ করে দিতে চাই।’ প্রধানমন্ত্রীর সেই মন্তব্য নিয়ে পালটা আক্রমণ করেছে বিরোধীরা। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, ‘৫৫ বছরের শাসনকালে কংগ্রেস কত জনের সম্পত্তি মুসলিমদের হাতে তুলে দিয়েছে। সেটা কি জোর গলায় জবাব দিতে পারবেন মোদীজি। উনি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন।’
তবে শুধু বিরোধীরাই নয় দলের অন্দরেও প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে ঘিরে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। উসমান গণি দিল্লিতে একটি সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি একজন মুসলিম হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য তাঁকে হতাশ করেছে। একইসঙ্গে বহিষ্কৃত বিজেপি নেতা জানান, তিনি যখন বিজেপির জন্য ভোট চাইতে মুসলমানদের কাছে যান তখন সম্প্রদায়ের লোকেরা প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের বিষয়ে কথা বলেন। তাঁর কাছ থেকে উত্তর জানতে চান।
উসমান গণি দলের বিরুদ্ধে আরও বিস্ফোরক মন্তব্য করে দাবি করেন, বিজেপি রাজস্থানের ২৫ টি আসনের মধ্যে তিন-চারটি লোকসভা আসন হারাতে চলেছে। তিনি আরও বলেন, রাজ্যের জাঠ সম্প্রদায়ের মানুষজন বিজেপির উপর ক্ষুব্ধ। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেই উসমান গণি মন্তব্য করেছিলেন, এর জন্য দল তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিলে তিনি ভয় পান না।
এরপরেই দল থেকে উসমানকে বহিষ্কার করে দিল বিজেপি। যদিও বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে। দলকে কলঙ্কিত করার চেষ্টার জন্য তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এবিষয়ে বিজেপির রাজ্যের শৃঙ্খলা কমিটির চেয়ারম্যান ওঙ্কার সিং লাখাওয়াত বলেছেন, উসমান গণি মিডিয়াতে দলের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করার চেষ্টা করেছিলেন। তাই শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে ৬ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।