রাজস্থানের জনসভা থেকে বিরোধীদের তোপ দাগতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছিলেন, ক্ষমতায় এলে কংগ্রেস এবং বিরোধীরা সাধারণ মানুষের সম্পত্তি নিয়ে তা মুসলিমদের মধ্যে পুনর্বণ্টন করবে। তাঁর সেই মন্তব্যে 'ঘূণা ভাষণ' বলে আখ্যা দিয়ে এবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করল সিপিএম। দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এই বিষয়ে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য ভয়াবহ। তবে তার থেকেও খারাপ বিষয় হল, নির্বাচন কমিশন এই নিয়ে নীরব রয়েছে।' এদিকে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন মোদীর এই মন্তব্যকে 'দেশ বিরোধী' আখ্যা দিয়েছেন। (আরও পড়ুন: শিলিগুড়িতে BJP নেতার গাড়ি থেকে উদ্ধার নগদ টাকার বান্ডিল, উঠল গুরুতর অভিযোগ)
আরও পড়ুন: সামরিক বাজেটে চিন থেকে বহু হস্ত পিছিয়ে ভারত, পাকিস্তান কত নম্বরে জানেন?
উল্লেখ্য, রাজস্থানের বাঁশওয়ারায় এক নির্বাচনী জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছিলেন, কংগ্রেস তাদের ইস্তাহারে দাবি করেছে যে দেশের সম্পদ মুসলিমদের মধ্যে পুনর্বণ্টন করবে। তিনি মনমোহন সিংয়ের ২০০৬ সালের এক মন্তব্যকেও হাতিয়ার করেন কংগ্রেস তোপ দাগতে। কিন্তু মোদীর কোন মন্তব্য ঘিরে এত বিতর্ক? কংগ্রেসকে তোপ দেগে মোদী দাবি করেছিলেন, 'ক্ষমতায় এলে কংগ্রেস সাধারণ মানুষের সম্পদ ছিনিয়ে নিয়ে তা মুসলিমদের মধ্যে বণ্টন করবে।' মোদী বলেন, 'এই শহুরে নকশাল মানসিকতায় মা-বোনদের মঙ্গলসূত্রকেও ছাড়বে না ওরা। কংগ্রেস যে কোনও পর্যায়ে নীচে নামতে পারে। কংগ্রেসের ইস্তাহারে বলা হয়েছে, তারা মা-বোনদের সোনার গয়নার পরিমাণ খতিয়ে দেখে সেই সম্পদ পুনর্বণ্টন করবে। আর তারা কাকে সেই সম্পদ দেবে? মনমোহন সিংয়ের সরকারই বলেছিল, দেশের সম্পদের ওপ রপ্রথম অধিকার আছে মুসলিমদের। তাহলে ওরা এই সম্পদ অনুপ্রবেশকারীদের দেবে? আপনাদের কষ্টার্জিত টাকা কি অনুপ্রবেশারীদের দেওয়া উচিত? আপনারা কি এটাই চান? কারও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অধিকার কি সরকারের আছে? আমাদের মা-বোনেদের কাছে যে সোনার গয়না আছে, সেটা আত্মসম্মানের প্রতীক। মঙ্গলসূত্রের দাম এর সোনার ওজনে নির্ধারণ করা যাবে না। এটা একজন স্ত্রীর স্বপ্নের সঙ্গে জড়িয়ে।' (আরও পড়ুন: 'আকাশের রানি'-কে বিদায় জানাল এয়ার ইন্ডিয়া, শেষ যত্রায় কিংবদন্তি বিমান)
আরও পড়ুন: 'মুখ্যমন্ত্রীর জলে ডুবে মরা উচিত', মমতার 'মৃত্যু কামনা' করে ফের বিতর্কে দিলীপ
কিন্তু আসলে কী বলেছিলেন মনমোহন সিং? ২০০৬ সালের ৯ ডিসেম্বর মনমোহন সিং জাতীয় উন্নয়ন কাউন্সিলের সভায় বলেছিলেন, 'তফসিলি জাতি এবং উপজাতিদের উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনাগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। সংখ্যালঘুরা, বিশেষ করে মুসলিম সংখ্যালঘুরা যাতে উন্নয়নের ফল সুষমভাবে ভাগ করে নিতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের উদ্ভাবনী পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। সম্পদের উপর তাদের প্রথম অধিকার থাকা উচিত। কেন্দ্রের অগণিত অন্যান্য দায়িত্ব রয়েছে। এই সব আমাদের কছে সামগ্রিক ভাবে যে সম্পদ আছে, তার মধ্যে থেকেই এই সব চাহিদা মেটাতে হবে।' ২০০৬ সালে মনমোহে রসেই ভাষণের পরও রাজনৈতিক তরজ শুরু হয়েছিল। সেই সময় প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছিল, মনমোহন সিং বলেছেন, তফসিলি জাতি এবং উপজাতি, ওবিসি, নারী, শিশু, সংখ্যালঘুদের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।