কার্তিক কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশীর দিনে নরক চতুর্দশী পালিত হয়। এ বছর ১৩ ও ১৪ নভেম্বর নরক চতুর্দশী বা রূপ চতুর্দশী পালিত হবে। একে আবার ছোট দীপাবলীও বলা হয়। এদিন সকালে স্নানের পর যম তর্পণ ও সন্ধেবেলা দীপ দানের গুরুত্ব রয়েছে।
প্রচলিত গল্প অনুযায়ী, নরকাসুর নামক এক অসুর ১৬ হাজার ১০০ কন্যাকে বন্ধক বানিয়ে রেখেছিল। কার্তিক কৃষ্ণ চতুর্দশীর দিনে নরকাসুরের বধ করে তাঁদের বন্দিদশা থেকে মুক্ত করেন কৃষ্ণ। পরে সমাজে তাঁদের সম্মান প্রতিষ্ঠার জন্য সত্যভামার সহযোগিতায় কৃষ্ণ সকল কন্যাদের সঙ্গে বিবাহ করেন। নরকাসুর বধ ও ১৬ হাজার কন্যাকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করানোর উপলক্ষে নরক চতুর্দশীর দিনে দীপদানের প্রথা শুরু হয়।
আবার অন্য এক প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, রন্তী দেব নামক রাজার মৃত্যুকাল নিকট এলে যমদূত সেখানে উপস্থিত হয়। যমদূতকে দেখে রাজা বলেন, তিনি জীবনে কখনও কোনও পাপ করেননি। তা সত্ত্বেও কেন তাঁকে স্বর্গের পরিবর্তে নরকে যেতে বলা হচ্ছে। তখন যমদূত তাঁকে জানান, তিনি তাঁর দরজা থেকে একবার এক ক্ষুধার্ত ব্রাহ্মণকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। এটি সেই পাপেরই ফল।
এর পর নিজের পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য যমদূতের কাছ থেকে এক বছরের সময় চেয়ে নেন ওই রাজা। এর পর ঋষিদের কাছ থেকে পাপমুক্তির উপায় জিগ্যেস করেন। নরক চতুর্দশীর দিনের ব্রত পালন করে ব্রাহ্মণদের ভোজন করানোর উপায় জানান ঋষিরা। এমন করার পর রাজা বিষ্ণুলোকে নিজের স্থান নিশ্চিত করেন।
নরক চতুর্দশীর দিনে সকালে স্নান করে যমরাজের পুজো ও সন্ধের সময় দীপদান করলে নরকের যাতনা ও অকালমৃত্যুর ভয় থাকে না। এ কারণেও নরক চতুর্দশীর দিনে দীপদান ও পুজোর গুরুত্ব রয়েছে।