কথায় আছে কুম্ভকর্ণের মতো ঘুম। মানে, যিনি একটু বেশি ঘুমোন, তাঁকে বলা হয় কুম্ভকর্ণের মতো ঘুমোচ্ছেন। কিন্তু কেন এই ঘটনা ঘটেছিল জানেন কি? মানুষের কাছে হাসির পাত্র হয়ে ওঠা রামায়ণের এই চরিত্রটি তাঁর নামের কারণে নয়, তাঁর কর্ম এবং কঠোর তপস্যার কারণে বিখ্যাত হয়েছেন। রামায়ণ অনুসারে, কুম্ভকর্ণ ছিলেন রাবণের ছোট ভাই এবং ঋষি বিশ্রব ও রাক্ষস কৈকসীর পুত্র।
কুম্ভকর্ণ নামের অর্থ যে অনেক ঘুমোয়— তা কিন্তু মোটেই নয়, আসলে এর অর্থ হল, কুম্ভ মানে কলস আর কর্ণ মানে কান। বড় কান থাকার কারণে ছোটবেলা থেকেই তাঁর নাম কুম্ভকর্ণ রাখা হয়েছিল।
পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, কুম্ভকর্ণ শৈশব থেকেই অত্যন্ত শক্তিশালী ছিলেন এবং তাঁর বড় ভাই রাবণের মতো একজন তপস্বীও ছিলেন। তাছাড়া তিনি এত বেশি খাবার খেতেন যে সারা শহরের খাবারও তার জন্য কম পড়ে যেত।
কুম্ভকর্ণের পিতা ঋষি বিশ্ব তার তিন পুত্র রাবণ, কুম্ভকর্ণ এবং বিভীষণকে তপস্যা করতে বলেছিলেন। তাঁর তপস্যায় খুশি হয়ে ব্রহ্মা তাঁর সামনে হাজির হন এবং তাঁদের একটি করে বর দিতে চান। তবে কুম্ভকর্ণ বর ছাড়াও ইন্দ্রের আসন চাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।
দেবরাজ ইন্দ্র একথাটি জানতে পেরে তিনি দেবী সরস্বতীকে এমন বর চাওয়া থেকে আটকাতে বলেন। তাই কুম্ভকর্ণের বর চাওয়ার সময় সরস্বতী তাঁর জিভ টেনে ধরেন। কুম্ভকর্ণ তখন ইন্দ্রাসন (ইন্দ্রের আসন) উচ্চারণের বদলে নিদ্রাসন উচ্চারণ করে বসেন।
ব্রহ্মাও কুম্ভকর্ণকে বর দেওয়া নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। কারণ তিনি ভেবেছিলেন যদি কুম্ভকর্ণ নিয়মিত পেটভরে ভোজন করেন তাহলে শীঘ্রই সব কিছু শেষ হয়ে যাবে। আর সেই কারণে ব্রহ্মা তাকে টানা ছয় মাস ঘুমিয়ে থাকার বর দিয়েছিলেন। এরপর থেকে কুম্ভকর্ণ টানা ছয় মাস ঘুমিয়ে কাটাতেন।