ছোটবেলার স্মৃতি সততই মধুর। তবে কারো কারো সেই স্মৃতির ডায়েরিতেও কখনও অন্ধকারাচ্ছন্ন সময় চাপা পড়ে থাকে। সম্প্রতি তেমনই একটা কালো দাগ লেগে থাকা ছোটবেলার অন্ধকার স্মৃতি নিয়ে মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী মানিনী দে।
সম্প্রতি সিদ্ধার্থ কান্নানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এবিষয়ে কথা বলেন মানিনী। জানান, সেটা ছিল তাঁর জীবনের সবথেকে খারাপ একটা সময়। জানান, তার জীবনেও 'ছোট্ট একটা অন্ধকার জায়গা' রয়েছে যেটা এখনও অন্ধকারে ডুবে রয়েছে। মাত্র ৭ বছর বয়সে এক আত্মীয়ই তাঁকে একা পেয়ে শ্লীলতাহানি করেন। মানিনীর কথায়, এই যন্ত্রণার অভিজ্ঞতা থেকে বাঁচতে তিনি বইয়ের পাতার মধ্যে সান্ত্বনা খুঁজে পেয়েছিলেন। কাল্পনিক বন্ধু তৈরি করেছিলেন, এমনকি ফুটবলের মতো মূলত পুরুষকেন্দ্রিক খেলাতেও ছেলেদের সঙ্গী হয়েছিলেন। মানিনী ফের বলেন, ‘আমি এসব বলছি মানে কোনও কিছু অস্বীকার করতে চাইছি বা হালকা করতে চাইছি, এমনটা কিন্তু নয়।’
মানিনীর কথায়, ‘আমার জীবনে এটা একটা ক্ষতের মত। যদিও এই ক্ষত সারাতে আমি বাড়িতে অনেক ছায়া পেয়েছি। অনেকেই এই ক্ষত নিরাময়ের চেষ্টা করেছেন। তবে কোথাও না কোথাও সেই ক্ষত সারাতে অনেক সময় লেগে যায়। এই কারণেই আজ আমি একজন থেরাপিস্ট হয়েছি। আমার সঙ্গে যা ঘটেছে সেটা অন্য কারোর সঙ্গে হওয়া উচিত নয়’। মানিনীর কথায়, তিনি সাহসের সঙ্গে এই ট্রমাটা মোকাবিলা করেছিলেন।
তবে এই ঘটনার কথা কি মানিনীর বাবা-মা জানতেন? এই প্রশ্নে অভিনেত্রী বলেন, তিনি তাঁর বাবা-মাকে এই বিষয়টা জানিয়েছিলেন অনেক বছর পরে। তবে বিষয়টা জানার পর তাঁরা আর সেই অপরাধীর কখনও মুখোমুখি হননি। কারণ তাঁদের মনেও বিষয়টা নিয়ে গভীর ধাক্কা লেগেছিল। তবে মানিনীর কথায়, কর্মা কখনওই ঠিকানা ভুলে যায় না। মানিনী জানিয়েছেন, যে আত্মীয় ছোটবেলায় তাঁর সঙ্গে অপরাধ ঘটিয়েছিলেন, তিনি গত ৫ বছর আগে এক পারিবারিক অনুষ্ঠানে ক্ষমা চেয়ে নেন। অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি তখন একপ্রকার অসাড় হয়ে গিয়েছিলাম, সেই ক্ষমা চাওয়ার জবাব দিতে পারিনি, শুধু একটা কথাই বলেছিলাম, একবার কিছু হয়ে গেলে, সেটা হয়ে যায়।’
মানিনী বলেন,তাঁর এই ট্রমার অভিজ্ঞতাই তাঁকে একজন থেরাপিস্ট হতে অনুপ্রাণিত করেছিল। মানিনি বলেন এটা নিয়ে তিনি নিজের মেয়ের সঙ্গেও কথা বলেছেন। তিনি মেয়েকে বলেছিলেন, তাঁর সঙ্গেও এমন কখনও কিছু ঘটে থাকলে সে যেন তাঁকে সেটা জানায়।