আজ অষ্টনাগ পুজো। এই অষ্ট নাগের সঙ্গে কিন্তু দেবী মনসাও পূজিত হবেন। দেবী মনসাকে সর্পের দেবী হিসেবে মনে করা হয়। পুরানে তার সেই রূপেরই উল্লেখ রয়েছে। বাংলার প্রায় প্রত্যেক ঘরেই মনসা পুজো বহুল প্রচলিত। গ্রামবাংলা মূলত আগে চাষবাসের উপর নির্ভরশীল ছিল। সেই সময় মাঠে-ঘাটে সাপের খুব উপাদ্র থাকার জন্য বাংলার ঘরে ঘরে সাপের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মা মনসার পুজো করা হতো।
আজ মা মনসার সঙ্গে সঙ্গে অষ্ট নাগেরও পুজো হবে। এই অষ্টনাগ হল অনন্ত বাসুকী পদ্ম মহাপদ্ম তক্ষক কুলির কর্কট ও শঙ্খ। অষ্টনাগ অষ্টবিধ সিদ্ধির কথা বোঝায়।
আজকে মা মনসার পুজোর প্রধান উপাচার হবে সাবু দুধ কলা। এছাড়াও একাধিক উপাচারে দেবী মনসা পূজিত হলেও এই তিনটে জিনিস হল তার পুজোর প্রথম ও প্রধান উপাচার। কারণ তিনি সর্পের দেবী আর সর্পকে দুধ ও কলা দিয়ে পুজো করা হয় যা বহু প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে।
অনেকে ঘট পেতে মনসার পুজো করে থাকে। কিন্তু কোন কোন জায়গায় ফনিমনসা গাছে মা মনসার পুজো করা হয়। ফনিমনসা একটি ক্যাকটাস জাতীয় গাছ। এই গাছটি সবুজ রঙের হয় ও সারা গায়ে কাঁটা বিশিষ্ট থাকে। অনেক জায়গায় এই গাছকেই মা মনসার রূপে পুজো করা হয়।
মা মনসা কে অনেকে ইচ্ছেধারী দেবী ও বলে থাকে। কোথাও তিনি পূজিত হন কামরূপা নামে। মা মনসা শিবের কন্যা রূপে পরিচিত। মনসামঙ্গল কাব্যগ্রন্থ থেকে আমরা মা মনসার অনেক কাহিনি জানতে পারি।
অনেক মেয়ে উপবাস করে এই ব্রত পালন করে। এই দিন সাপের গর্তে দুধ ঢালার প্রচলিত রীতি রয়েছে গ্রাম বাংলায়। মনে করা হয় মা মনসা তুষ্ট হলে মানুষ সর্প থেকে বিপদ মুক্ত থাকবে। মা মনসার জন্ম শোনা যায় পদ্ম পাতায় হয়েছিল তাই দেবীর অপর নাম পদ্মাবতী। কোন কোন জায়গায় মা মনসার আট রুপের পুজো করা হয়। এই পুজো উপলক্ষে অনেক জায়গায় মনসামঙ্গল কাব্যগ্রন্থও পাঠ করা হয়। পুরুলিয়াতে খুব ধুমধাম করে মনসা পুজো অনুষ্ঠিত হয়।