নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা! ইডেনের পিচ নিয়ে নাঁক সিঁটকানো নিন্দুকদের কথায় কান দিতে রাজি নন কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়। কেনই বা কান দেবেন? ইডেনের পিচ নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষজ্ঞদের প্রশংসা শুনতে অভ্যস্ত তিনি। প্রায় প্রতি মরশুমেই আইপিএলের শেষে অন্যতম সেরা পিচের পুরস্কার ঘোষণার সময় ইডেনের নাম শোনা যায়। যদি ইডেনের বাইশগজ নিয়ে কোনও অভিযোগ ওঠে তো সেটা একমাত্র নাইট শিবির থেকে।
গতবছর নাইট রাইডার্সকে নেতৃত্ব দিতে নেমে নীতীশ রানা ইডেনের বাইশগজ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। ঘরের মাঠে পছন্দের পিচ না পাওয়া নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। এবছর মরশুম শুরুর আগেই কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে, পিচ নিয়ে নাইট শিবিরের তরফে কোনও অনুরোধ আসেনি তাঁর কাছে। বিসিসিআই ছাড়া পিচ নিয়ে অনুরোধ করা বা নির্দেশ দেওয়ার কোনও এক্তিয়ার নেই কারও। সুতরাং, নাইট রাইডার্স কোনও অনুরোধ করলে তা রাখতে বাধ্য নন তিনি।
সুজন মুখোপাধ্যায় সঙ্গে এটাও জানিয়েছিলেন যে ইডেনে স্পোর্টিং পিচ তৈরি করেছেন তিনি এবং এই মাঠে আইপিএলে ২০০ রান ওঠা অতি স্বাভাবিক বিষয় হতে চলেছে। কিউরেটর যে ভুল বলেননি, তার প্রমাণ মিলছে হাতেনাতে। ইডেনে ২০০ রানের গণ্ডি টপকেও ম্যাচ জয়ের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। কেকেআর রাজস্থান রয়্যালস ও পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে ২টি ম্যাচে বিরাট ইনিংস গড়েও হেরে বসে। অন্য মাঠে হলে অনায়াসে জয় তুলে নেওয়া যেত। আরসিবির বিরুদ্ধে ২০০ টপকেও কোনও রকমে জেতে কেকেআর।
প্রথমত, ইডেনে রাজস্থানের বিরুদ্ধে কেকেআর ২২৩ রান তুলেও ম্যাচ হারে। সব থেকে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়ে রাজস্থান। পরে আরসিবির বিরুদ্ধে ২২২ রান তুলে ম্যাচে ১ রানে ম্যাচ জেতে কলকাতা। আরসিবি পালটা ব্যাট করতে নেমে ২২১ রানে পৌঁছে যায়। শেষে পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ২৬১ রান তুলে কেকেআর ম্যাচ হারে। রান তাড়া করে টি-২০ জয়ের নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়ে পঞ্জাব।
কেকেআর বনাম পঞ্জাব ম্যাচের পরে ইডেনের পিচ নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়ে যায়। ইডেনের বাইশগজকে ব্যাটিং স্বর্গ আখ্যা দেওয়া হতে থাকে। তবে নাইট সমর্থকরা ক্ষুব্ধ ইডেনের পিচে স্পিনাররা সাহায্য না পাওয়ায়। তবে সুজন মুখোপাধ্যায় সেই সমালোচনায় কান দিতে রাজি নন। তিনি সুনীল নারিনের উদাহরণ দিয়ে যাবতীয় অভিযোগ নস্যাৎ করেন।
সংবাদ প্রতিদিনের সাক্ষাৎকারে ইডেনের কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘লোকে কী বলল, তাতে কান দিয়ে লাভ নেই। (পঞ্জাব ম্যাচে) এই পিচেই তো সুনীল নারিন বল করেছে। সে তো আর অন্য পিচ ব্যবহার করেনি। নারিন ৪ ওভারে মাত্র ২৪ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছে। পিচে বল ঘুরেওছে আবার কাঁধের উপর দিয়েও গিয়েছে। সুতরাং, বাইশগজে স্পিন ও বাউন্স দুইই ছিল। আপনি যদি ঠিকঠাক বল করতে না পারেন, তাহলে বিশ্বের কোনও পিচই আপনার জন্য উপযুক্ত নয়।'
সুজন মুখোপাধ্যায় আরও বলেন, 'আমি তো ইডেনের পিচকে একশোয় একশো দেব। লোকে ভালো খেলা দেখতে মাঠে আসে। ভালো খেলা হচ্ছে বলেই এই গরমেও ইডেনে নিয়মিত প্রায় ৬০ হাজার লোক খেলা দেখতে আসছে। যদি স্লো পিচ তৈরি করতাম, তাহলে একটা দল দেড়শো রান তুলত আর অন্য দল ১২০ রানে অল-আউট হয়ে যেত। সেটা কি ক্রিকেটের পক্ষে ভালো?’