এ বছর কামদা একাদশীর উপবাস পালিত হবে ১৯ এপ্রিল শুক্রবার। কামদা একাদশী উপবাসের দিনে রবি যোগ, বৃদ্ধি যোগ ও ধ্রুব যোগ গঠিত হচ্ছে। রবি যোগে কামদা একাদশীর উপবাস করা উপযুক্ত হবে। এই যোগে সকল প্রকার দোষ নাশ হয় এবং সেই সময়ে মঘা নক্ষত্র থাকবে। যাঁরা কামদা একাদশীর উপবাস করবেন, তাঁরা ভগবান বিষ্ণুর উপাসনা করতে গিয়ে কামদা একাদশীর উপবাসের ব্রত কথা অবশ্যই পাঠ করবেন। এর মাধ্যমে আপনি ব্রতর গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং এর পূর্ণ ফলও পাবেন। জেনে নিন কামদা একাদশীর কাহিনি, পুজোর শুভ সময় ও পারণের সময়।
কামদা একাদশী ২০২৪ মুহূর্ত: চৈত্র শুক্লা একাদশী তিথি শুরু ১৮ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার, বিকেল ০৫ টা ৩১ মিনিট থেকে, চৈত্র শুক্লা একাদশী তিথির সমাপ্তি: ১৯ এপ্রিল, শুক্রবার, রাত ০৮ টা ০৪ মিনিটে।
কামদা একাদশীর উপবাস ভাঙার সময়: ২০ এপ্রিল, সকাল ০৫ টা ৫০ মিনিট থেকে ০৮ টা ২৬ মিনিট পর্যন্ত।
কামদা একাদশীর কাহিনি: একবার যুধিষ্ঠির ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে অনুরোধ করলেন চৈত্র শুক্ল একাদশীর মহিমা জানাতে। তখন ভগবান শ্রী কৃষ্ণ তাঁকে বললেন চৈত্র শুক্ল একাদশী কামদা একাদশী নামে পরিচিত। একবার রাজা দিলীপ ঋষি বশিষ্ঠকে একই প্রশ্ন করেছিলেন, তিনি তখন একটি কাহিনি বলেছিলেন।
ভোগীপুরে পুণ্ডরিক নামে এক রাজা রাজত্ব করতেন। সেই শহরে গন্ধর্ব, অপ্সরা ও কিন্নর বাস করত। সেই রাজ্যে ললিত ও ললিতা নামে এক নারী-পুরুষ বাস করতেন। একবার ললিত পুণ্ডরিকের সমাবেশে গন্ধর্বদের সঙ্গে গান গাইছিলেন। তখন তার মনোযোগ ললিতার দিকে যায় এবং তার কণ্ঠস্বর খারাপ হয়ে যায়। গানটাও নষ্ট হয়ে গেল।
তখন পুণ্ডরীক তার উপর রেগে যান। তিনি ললিতকে দানব হয়ে তার অপরাধের ফল ভোগ করার অভিশাপ দেন। তার প্রভাবে ললিত বিশাল দানব হয়ে যন্ত্রণা ভোগ করতে থাকে। ললিতা বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি দুঃখ পেয়েছিলেন এবং একদিন শ্রৃঙ্গী ঋষির আশ্রমে গিয়ে তাঁর দুঃখের কথা জানালেন।
তখন শৃঙ্গী ঋষি বললেন, তুমি চিন্তা করো না। চৈত্র শুক্লা একাদশী আসতে চলেছে। কামদা একাদশীর উপবাস কর এবং এর পুণ্য আপনার স্বামী ললিতকে দান করুন, এতে তিনি অসুর রূপ থেকে মুক্তি পাবেন এবং রাজার অভিশাপও অকার্যকর হবে।
ঋষির পরামর্শে ললিতা কামদা একাদশীতে উপবাস করেন এবং রীতি অনুযায়ী ভগবান বিষ্ণুর পুজো করেন। দ্বাদশীর দিনে, তিনি ভগবান বিষ্ণুর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন যে তাঁর স্বামী যেন এই উপবাসের আশীর্বাদ লাভ করেন এবং তিনি যেন অসুর রূপ থেকে মুক্ত হন। ভগবান বিষ্ণুর কৃপায় ললিত অসুর রূপ থেকে মুক্ত হন।
বশিষ্ঠ ঋষি রাজা দিলীপকে বলেছিলেন যে যে এই উপবাস পালন করে সে পাপমুক্ত হয়। এই কাহিনি শুনলে এবং পড়লে বাজপেয়ী যজ্ঞের ফল পাওয়া যায়।