কোচবিহার জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের মেখলিগঞ্জের রানিরহাট এলাকায় শোলমারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত বিষ্ণু রায়। পড়াশোনাতে ভালোই ছিল বিষ্ণু। কিন্তু কোথা থেকে যেন সবকিছু ওলটপালট হয়ে গেল। সেই মেধাবী বিষ্ণুকেই এখন শেকল দিয়ে বেঁধে রাখেন তার পরিজনরা। পরিবারের দাবি, বিষ্ণুর মানসিক সমস্যা রয়েছে। বহু জায়গায় চিকিৎসা করানো হয়েছে। এজন্য জমি জায়গা বিক্রি করেও চিকিৎসা করাতে হয়েছে। তবুও সুস্থ হয়নি ছেলে।
অগত্যা আর কোনও উপায় না পেয়ে ছেলেকে শেকল দিয়ে বেঁধে রেখেছেন বাবা- মা। ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছিলেন গরীব বাবা মা। বড় হয়ে ছেলে পরিবারের দুঃখ ঘোচাবে। কিন্তু সেদিন আর এল না। সকাল হলেই বাড়ির সামনে বাঁশের মাচার সঙ্গে ছেলেকে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখেন অভিভাবকরা।
বিষ্ণুর বাবা নবীন রায় বলেন,পয়সাকড়ি নেই। কী করে ছেলের চিকিৎসা করাব। ছেলে লোকের সঙ্গে মারপিট করে।বহু চিকিৎসা করিয়েছি। কিছুতেই কিছু হয় না। ছেলের পড়াশোনাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রধান, পঞ্চায়েত সবাইকে জানিয়েছি। ওরা বলেন, সরকারি জায়গায় চিকিৎসা করাও। কিন্তু কোথাও কিছু হচ্ছে না।
তার এক আত্মীয় রাহুল রায় বলেন, প্রায় ৬ বছর ধরে এই অবস্থা। স্কুলে পড়ত একটা সময়। বহু জায়গায় চিকিৎসা করানো হয়েছে। জায়গা জমি বিক্রি করেও চিকিৎসা করানো হয়েছে। কিন্তু কিছু হচ্ছে না। এদিকে প্রশ্ন উঠছে, তুফানগঞ্জেই মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্র আছে। সরকারি হাসপাতালেও মানসিক চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। তারপরেও কেন বিষ্ণুর উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে না প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর কিংবা জনপ্রতিনিধিরা? প্রসঙ্গত এর আগে কোচবিহারে খাঁচার ভেতরে মানসিক ভারসাম্যহীন কন্যাকে রেখে দিয়েছিলেন অভিভাবকরা।