বিগত বেশ কয়েকদিম ধরেই আধার নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে রাজ্য জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে। এরই মাঝে আবার তৃণমূল কংগ্রেস এর নেপথ্যে 'বিজেপির ষড়যন্ত্র' রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে। এমনকী খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, ভোটার তালিকা থেকে নাম কাটতেই নাকি এই আধার নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। পরে তিনি সংযোজন করেন, ভোটের মুখে যাতে সাধারণ মানুষ রাজ্য সরকারি প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা না পান, তার জন্যেই কেন্দ্রীয় সরকার এই 'ষড়যন্ত্র' করেছে। এই সবের মাঝে আতঙ্কিত রাজ্যের মতুয়ারা। এহেন পরিস্থিতিতে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয়েছেন খোদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। তাঁর লোকসভা কেন্দ্রেও অনেকের আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়েছিল। এই আবহে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর এবং ইমেল আইডি প্রকাশ করেছিলেন শান্তনু ঠাকুর। বলেছিলেন, সেখানে যোগাযোগ করলেই নিষ্ক্রিয় আধার সংক্রান্ত সমস্যা মিটে যাবে। (আরও পড়ুন: বাড়িতে ঢুকে তরুণীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে, 'ক্লোজ' ওসি)
আরও পড়ুন: 'দোষীকে না ধরে…', সন্দেশখালিতে সাংবাদিক গ্রেফতারিতে সরব অনুরাগ ঠাকুর
এই পরিস্থিতি এবার ঠাকুরবাড়িতেই খোলা হল আধার সহায়তা কেন্দ্র। বনগাঁর সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর আশ্বাস দিয়েছেন, যাঁদের আধার নিষ্ক্রিয় হয়েছে, তাঁদের আধার আবার সক্রিয় করা হবে। তাঁর দাবি, সম্পূর্ণ প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণেই আধার নিষ্ক্রিয় হয়েছে। আধার ইস্যুতে মতুয়া ভোট যাতে বিজেপি থেকে সরে না যায়, তার জন্য তৎপর হয়েছেন শান্তনু নিজে। মঙ্গলবার থেকে গাইঘাটার ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে শান্তনুর উদ্যোগে সাংসদ অফিসে আধার সহায়তা ক্যাম্প খোলা হয়েছে। সাংসদের অফিসের সূত্রে জানানো হয়েছে, গতকাল অন্তত ২০০ জন অভিযোগ জানিয়ে গিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে অনেকে ফের সক্রিয় হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে।
যদিও তৃণমূল নেত্রী মমতা ঠাকুর পালটা অভিযোগ করেছেন, শান্তনুর অফিস মিথ্য়া বলছে। তাঁর দাবি, বনগাঁ মহকুমায় এখনও পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার মতুয়া ভক্তের আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় হওয়ার চিঠি এসেছে। আরও প্রায় ২৫ হাজার চিঠি পোস্ট অফিসে এসেছে। ধীরে ধীরে তা বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যের প্রায় ১০ লক্ষ মতুয়া ভক্তের আধার কার্ড বাতিল করার চক্রান্ত করেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।
এই আবহে এবার আধার ইস্যুতে মতুয়া ভোট নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছে। আর তা নিয়ে সরাসরি মোদীর দ্বারস্থ হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এর আগে মমতা দাবি করেছিলেন, আধার নিষ্ক্রিয় হলেও রাজ্য সরকারের কোনও পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবেন না কেউ। প্রয়োজনে রাজ্য 'আলাদা কার্ড' দেবে বলেও ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আবহে মোদীকে লেখা চিঠিতে শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, 'আধার নিয়ে নাক গলানোর অধিকার নেই রাজ্য সরকারের। মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের দায়রায় হস্তক্ষেপ করছেন।' শুভেন্দুর দাবি, এই ঘটনায় মমতাকে তীব্র তিরস্কার করা উচিত কেন্দ্রের। এর জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি করেন তিনি।