কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একাধিবার বহু প্রকল্পের টাকা আটকে রাখার অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। যার মধ্যে রয়েছে ১০০ দিনের কাজের টাকা থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী যোজনার টাকা। এ নিয়ে কেন্দ্রের কাছে একাধিবার চিঠিও দিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু, তাতে কোনও সুরাহা মেলেনি। পঞ্চায়েত ভোট মিটে গিয়েছে। তাতে গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে। এবার ভোটের সাফল্যকে সামনে রেখেই কেন্দ্রের উপর চাপ তৈরি করতে চাইছে রাজ্য সরকার। এর জন্য কেন্দ্রের উপর দ্বিমুখী চাপ তৈরি করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: আবাসের টাকা হাতে পেতেই স্বামীর ঘর ছেড়ে প্রেমিকের সঙ্গে পালালেন ৪ গৃহবধূ
কীভাবে কেন্দ্রের উপর চাপ তৈরি করবে রাজ্য সরকার?
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, যেহেতু অধিকাংশ পঞ্চায়েতই শাসক দলের দখলে এসেছে। তাই এখন পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের অপেক্ষায় রয়েছে রাজ্য সরকার। সেক্ষেত্রে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন হলে লিখিতভাবে আর্জি জানিয়ে কেন্দ্রের কাছে বকেয়া টাকা দাবি করবে পঞ্চায়েত দফতর। এছাড়াও, জাতীয় স্তরে রাজনৈতিকভাবে কেন্দ্রের কাছে বকেয়া টাকা দাবি করবে শাসক দল। সে ক্ষেত্রে সংসদে এ নিয়ে আওয়াজ তুলতে পারেন শাসকদলের সাংসদরা। পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আর্থিকভাবে অনগ্রসর বহু মানুষের মাথায় পাকা ছাদ নিশ্চিত করার জন্য আবাস যোজনার টাকা প্রয়োজন। সেই টাকা পেলে তবেই দরিদ্র মানুষকে বাড়ি করে দেওয়া সম্ভব হবে।
পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের এপ্রিল মে মাসে আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির জন্য কোটা পেয়েছিল রাজ্য সরকার। তবে ডিসেম্বরে বরাদ্দ আসলেও আবাস যোজনায় দুর্নীতি সামনে আসার পর কেন্দ্রের নির্দেশে রাজ্যে আসে কেন্দ্রীয় দল। সেইমতো রাজ্য সরকার ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তালিকা সংশোধন করে ১০ লক্ষ উপভোক্তার নাম পাঠিয়েছিল কেন্দ্রের কাছে। তারপরেও কেন্দ্র প্রথম কিস্তির টাকা রাজ্যকে দেয়নি বলে অভিযোগ। এদিকে, রাজ্যে আবাস দুর্নীতি সামনে আসার পরেই একের পর এক কেন্দ্রীয় দল এসে তালিকা খতিয়ে দেখে। কিন্তু, তারপরে টাকা পাঠানো হয়নি বলে রাজ্যের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে। এ বিষয়ে পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের অভিযোগ, দফতরের তরদে কেন্দ্রের কাছে অনেক চিঠি দেওয়া হয়েছে কিন্তু তাতে কোনও ফল হয়নি। এ নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘পঞ্চায়েত ভোটের ফল ওদের হজম করতে সময় লাগবে। এবার ওরা বুঝতে পারছে যে মানুষের রায় ওদের বিরুদ্ধে গিয়েছে। ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনার বকেয়া পাওনা নিয়ে আন্দোলনের প্রস্তুতি চলছে।’
পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৮৬ জনের মধ্যে প্রায় ৯৭% উপভোক্তার অনুমোদন সম্পন্ন হয়েছিল। বাকি উপভোক্তাকে অনুমোদন দেওয়ার জন্য মে মাসে কেন্দ্র বার্তা পাঠায়। কিন্তু, পঞ্চায়েত ভোট পেরিয়ে হওয়ার পরেও টাকা দেওয়া হয়নি।