আরবের মরিয়ম খেজুর এবার বাংলায়। প্রায় তিন বছর আগে ৩০টির বেশি খেজুরের বীজ রোপণ করেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের হাসনাবাদ ব্লকের পাটুলি খানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বেনা গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হামিদ মণ্ডল। সেই গাছগুলিতে খেজুর ফলন হয়েছে। ছোট থেকেই হামিদের স্বপ্ন ছিল আরব থেকে খেজুরের বীজ এনে বাড়িতে রোপন করা। পেশায় অটো গ্যারাজের মেকানিক হামিদ কাজ করার পরিবর্তে খেজুর গাছের পরিচর্যার ওপরেই বেশি মনোনিবেশ করেছিলেন। ফলও পেলেন। অবশেষে তাঁর সেই স্বপ্ন সার্থক হল। সেই খেজুর গাছ দেখতে দুর্দান্তের মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন তাঁর বাড়িতে।
আরও পড়ুন: আপেল চাষে নাম করছে কালিম্পং, বাংলায় মিনি কাশ্মীর, পাহাড়ে কোথায় গেলে দেখতে পাবেন
হামিদ জানান, তিনি ছোট থেকে চেয়েছিলেন আরবের খেজুর গাছ লাগাতে। সেই জন্য ছোট থেকেই বাবা মা স্কুলে যাওয়ার সময় টিফিনের যে টাকা দিতেন সেই টাকা জমিয়ে রাখতেন। হামিদ জানিয়েছেন, ওই গ্রাম থেকে বেশ কিছু মানুষ আরবে হজ করতে গিয়েছিলেন। তাঁদের কাছে আরব থেকে মরিয়াম খেজুরের বীজ আনার টাকা দিয়েছিলেন। তবে বীজ হাতে পাওয়ার পরে হামিদের মনে একটাই প্রশ্ন ছিল বাংলার মাটিতে এই খেজুর গাছ হওয়া সম্ভব কি না।
হামিদ জানান, তিনি অটো গ্যারাজে কাজ করেন। গ্রামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে বীজ নিয়ে এসে চারা তৈরি করেন। এরজন্য তিনি প্রচুর পরিশ্রম করেছেন। তিনি গ্যারাজে কম সময় দিয়ে খেজুর গাছের পরিচর্যার জন্য বেশি সময় দিতেন। তাঁর স্ত্রী জানান, সংসার চালানোর টাকা থেকেই খেজুর চারার জন্য কীটনাশক,সার প্রভৃতি কিনে নিয়ে আসতেন। প্রচুর পরিশ্রম করে ৩০টির অধিক খেজুর গাছ লাগন। তিন বছর পর গাছে ফলন দেখা দেয়। এতে খুশি হামিদ ও তাঁর পরিবারের লোকজন। দূর দুরান্ত থেকে এই খেজুর দেখার জন্য ভিড় জমাচ্ছেন তাঁর বাড়িতে। গ্রামবাসীরা এই তিনি ছোট থেকে চেয়েছিলেন আরবের খেজুর গাছ লাগাতে। সেই জন্য ছোট থেকেই বাবা মা স্কুলে যাওয়ার সময় টিফিনের যে টাকা দিতেন সেই টাকা জমিয়ে রাখতেন। হামিদ জানিয়েছেন, ওই গ্রাম থেকে বেশ কিছু মানুষ আরবে হজ করতে গিয়েছিলেন। তাঁদের কাছে আরব থেকে মরিয়াম খেজুরের বীজ আনার টাকা দিয়েছিলেনখেজুর খেয়ে খুব প্রশংসা করেন।খুশি হামিদের বাড়ির সকলেই। তাঁরা বলেন, ‘গাছে খেজুর ফলন হওয়ায় আমরা সকলেই ভীষণ খুশি।’
হাসিবুর রহমান নামে এক গ্রামবাসী জানান, ‘এটা খুব ভালো উদ্যোগ। কাজ ফেলে তিনি যেভাবে খেজুর গাছগুলি বড় করেছেন তাতে আমরা খুবই খুশি হয়েছি।’ মহম্মদ আব্দুল্লাহ গাজী নামে আরেক বাসিন্দা জানান, ‘হামিদ প্রথম যখন চারা গাছ করেছিলেন তখন আমিও দুটো চারা গাছ তাঁর কাছ থেকে নিয়েছিলাম। আমরা ভেবেছিলাম হয়তো বাংলার মাটিতে এই ধরনের খেজুর গাছ সম্ভব নয়। কারণ এগুলি মরুভূমিতে হয়ে থাকে। এই খেজুরের অনেক গুনাগুন রয়েছে। আমার বাড়ির গাছ বড় হয়েছে। এতে আমি খুশি। হামিদের উদ্যোগে পুরো গ্রামবাসী খুশি।’ হামিদের মা জানান, বাড়ির ছাদেও তিনি বেশ কয়েকটি চারা রোপন করেছেন।