আদিবাসীদের স্বীকৃতিদান নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সেই ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আজ, বৃহস্পতিবার ১২ ঘন্টার বাংলা বনধের ডাক দিয়েছে ২৫টি আদিবাসী সংগঠন। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ চলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। আর সেই অবরোধ এদিন সকাল থেকে শুরু হয়েছে রাজ্যের একের পর এক জেলায়। এদিন পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলে অল ইণ্ডিয়া আদিবাসী কো–অর্ডিনেশনের পক্ষ থেকে আসানসোলের সালানপুর ব্লকের আল্লাডি মোড়ে ধামসা মাদল বাজিয়ে পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড সমৃদ্ধ এক জমায়েত করা হয়।
এই বনধের জেরে চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছেন আমজনতা। অবরোধ রাজ্যের হাতে থাকা সড়কে করা হয়েছে। এই আদিবাসী সমাজের পক্ষ থেকে সুশীল হেমব্রম বলেন, ‘মূলত দুটি দাবি রয়েছে আমাদের। আদিবাসী ক্ষত্রিয় কুড়মিদের দ্বারা আদিবাসীদের ইতিহাস বিকৃত হচ্ছে। অনৈতিকভাবে সরকারি মদতে সিআরআই রিপোর্ট পরিবর্তনের মাধ্যমে এসটি তালিকায় অন্তভূক্তিকরণের ষড়যন্ত্র চলছে।’ তারই প্রতিবাদে তাঁরা ১২ ঘন্টার বাংলা বনধ পালন করছেন। রাজনৈতিক দলগুলিকেও সচেতন করতে চাইছেন এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে তাঁরা যেন শামিল না হন।
এদিকে এই বনধের প্রভাব পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জঙ্গলমহল–সহ গড়বেতা তিন নম্বর ব্লকের চন্দ্রকোনা রোডে। বনধের সমর্থনে সকাল থেকেই পথে নেমেছে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। বন্ধ রয়েছে যান চলাচল, দোকান–বাজার সব বন্ধ রয়েছে। তবে এককথায় বলা যায়, আদিবাসীদের ডাকা এই বনধের যথেষ্ট সারা পড়েছে জঙ্গলমহল–সহ বিভিন্ন এলাকায়। এদিন সকাল থেকে পুরুলিয়া জেলা জুড়ে আদিবাসী একতা মঞ্চের ডাকা বনধে প্রভাব পড়ল। তবে বনধের সমর্থনে একতা মঞ্চের সদস্যরা জেলার বেশ কয়েকটি জায়গায় রোড জ্যাম করে। রঘুনাথপুর মহকুমার পুরুলিয়া বরাকর রাজ্য সড়ক, বাঁকুড়া পুরুলিয়া রাজ্য সড়কের লালপুর মোড় এবং পুরুলিয়া টাটা ৩২ নম্বর জাতীয় সড়কে কাঁটাডি মোড়–সহ বান্দোয়ান ব্লকের কয়েকটি জায়গায় জনজীবন থমকে গিয়েছে। বেসরকারি বাস ও অন্যান্য যানবাহন একেবারেই চলাচল করেনি। তবে বেশ কয়েকটি রুটে সরকারি বাস চলাচল করছে। বনধের প্রভাব পুরুলিয়া শহরে দোকান বাজারে সে অর্থে প্রভাব না পড়লেও জেলার প্রত্যন্ত ব্লক এলাকাগুলিতে বাজারহাট সমস্ত কিছুই বন্ধ রয়েছে।
আর কী দেখা যাচ্ছে? বর্ধমান–আরামবাগ সাত নম্বর রাজ্য সড়কে মোগলমারী বাজারে পথ অবরোধ চলছে। বৃহস্পতিবার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন পথ অবরোধ করেন। তাঁদের ডাকা বনধকে সফল করতে ১২ ঘন্টা ধরে চলবে এই অবরোধ। চারিদিকে পুলিশ মোতায়েন করা রয়েছে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে। কুড়মি সমাজকে আদিবাসী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার যে চক্রান্ত চলছে তার প্রতিবাদে এই বাংলা বনধের ডাক দিয়েছে আদিবাসী একতা মঞ্চ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কালচিনি ব্লকের হ্যমিল্টনগঞ্জে বনধের সমর্থনে পথে নামে মাঝি পরগনা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সদস্যরা। সংগঠনের জেলা নেতৃত্ব জানান, আমরা এই বনধকে সমর্থন জানিয়েছি। ফাঁসিদেওয়াতেও একাধিক দাবিদাওয়া নিয়ে পথ অবরোধ করল ইউনাইটেড ফোরাম অব অল আদিবাসী অর্গানাইজেশন। এদিন আদিবাসীদের ডাকা ১২ ঘণ্টার পথ অবরোধ ফাঁসিদেওয়ায় ঘোষপুকুরের ৩১ডি জাতীয় সড়কে আটকে পড়ে যানবাহন চলাচল।