একের পর এক নির্বাচনে হেরেছে বিজেপি। বাংলায় এখন কার্যত গোহারা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আর এখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে বিজেপির এখন নজর ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্র। এবার ঘাটাল নিয়ে নতুন স্বপ্ন ফেরি করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এমনকী ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারের উপর থেকে দায় সরিয়ে দিয়ে তা রাজ্য সরকারের ঘাড়ে চাপিয়ে দিলেন। একদিন আগেই রবিবার ঘাটালের বিদ্যাসাগর স্কুল মাঠে একটি জনসভায় বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়ও এখানের রেলপথ এবং মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। এবার তা আরও একধাপ এগিয়ে মন্তব্য করলেন শুভেন্দু।
এদিকে সদ্য নিজেদের দখলে থাকা ধূপগুড়ি আসন হাতছাড়া হয়েছে। তার মধ্যেই বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তাই এখন ঘাটাল লোকসভা আসনটির দিকে নজর পড়েছে বিজেপির। তাই রেলকে হাতিয়ার করে এই আসনটি জিততে চাইছে। রবিবার ঘাটাল বিদ্যাসাগর হাইস্কুল মাঠে বিজেপির ঘাটাল পূর্ব মণ্ডল কমিটির উদ্যোগে এক জনসভায় শুভেন্দু বলেন, ‘সম্প্রতি রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব রাজ্যের বেশ কয়েকটি রেলপথ চালুর জন্য জমি চেয়ে নবান্নকে চিঠি দিয়েছেন। তার আগে রেলমন্ত্রী রাজ্যের বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে ঘাটালের বিধায়ক রেলমন্ত্রীর কাছে ঘাটালে রেলপথ তৈরির কথা বলেছেন। ঘাটাল ইড়পালা রেলপথের কথাও বলা হয়েছে। রেলমন্ত্রী রাজ্যকে বলেছেন, আমি টাকা নিয়ে প্রস্তুত। জমি দাও।’ শুভেন্দু এই দাবি করলেও রাজ্য এখনও ১০০ দিনের টাকা পায়নি।
অন্যদিকে মহকুমার বাসিন্দাদের ট্রেনে কোথাও যেতে হলে আগে যেতে হয় ৩০ কিমি পাঁশকুড়ায়, না হলে চন্দ্রকোনা রোডে। কারণ রেলপথ না থাকায় এটাই দস্তুর। লোকসভা নির্বাচনের আগে রেল প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাজিমাত করতে চাইলেন শুভেন্দু। তবে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে দায় রাজ্যের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ‘কেন্দ্র টাকা দিয়েছে। কিন্তু রাজ্য নিজের অংশের টাকা দিচ্ছে না। তাই ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান হচ্ছে না।’ পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কো–অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, ‘বিরোধী দলনেতা অসত্য কথা বলছেন। মাস্টার প্ল্যান নিয়ে ভুল তথ্য দিচ্ছেন। বাজেটে কেন্দ্রীয় সরকার কোনও টাকা মাস্টারপ্ল্যানের জন্য বরাদ্দ করেনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের উদ্যোগে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছেন।’
আরও পড়ুন: ‘মুখ্যমন্ত্রীকে আমি নতুন করে টেনশন দিতে চাই না’, রাজভবনে বসে মন্তব্য রাজ্যপালের
আর কী জানা যাচ্ছে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ঘাটালের রেলপথ গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। অথচ বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘লোকসভা নির্বাচনে জয়ের পর ঘাটালে আগে হবে রেলপথ, তারপরে মাস্টারপ্ল্যান। কেন্দ্রীয় সরকারের সমস্ত প্রকল্প অর্ধেক মানুষের কাছে পৌঁছয় না। কারণ, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত কিছু নিজের নামে ট্রান্সফার করে দেন। তাই আমাদের একটাই লক্ষ্য, আগামী ২০২৪ নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী করতে হবে। ঘাটাল থেকে বিপুল ভোটে লিড আনতে হবে।’ ‘ইন্ডিয়া’ জোটকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেন, ‘আমাদের একটা প্রধানমন্ত্রী। আর জোটের ২৬টি প্রধানমন্ত্রী।’