রাজনীতিতে এবার চরম অসৌজন্যের নজির গড়ল বিজেপি। সরাসরি বিজেপি বিধায়ক হুমকি দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রীকে। আর তা নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। কারণ তৃণমূল কংগ্রেসের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি একজন মহিলা। আর তাঁরই শরীর আস্ত থাকবে না বলে হুমকি দিলেন বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার। এখন এই নিয়ে বিতর্ক চরমে উঠেছে। জ্বালানির ভ্যাট রাজ্য সরকার কমিয়ে দিক এই দাবিতে শুক্রবার গোপালনগর থানার ন’হাটা বাজারে বিজেপি প্রতিবাদ মিছিল করছিল। সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আলোরানি সরকারকে সরাসরি প্রকাশ্যে শরীরে আঘাতের হমকি দেন বিজেপি বিধায়ক।
ঠিক কী বলেছেন বিজেপি বিধায়ক? তিনি প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘সাবধান করছি। আমাদের কোনও কার্যকর্তার গায়ে যদি হাত পড়ে বা যদি মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়, তাহলে আস্ত শরীর নিয়ে তুমি এলাকায় ফিরে যেতে পারবে না। তোমার স্বামী তোমাকে বাংলাদেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। ভারতে আসার পর যেখানে ছিলে সেখান থেকে লাথি খেয়ে বনগাঁ এসে সন্ত্রাস তৈরির চেষ্টা করছো।’ যদিও বিজেপি বিধায়কের এই মন্তব্যের পর দলের শৃঙ্খলা কমিটি এখনও কোনও পদক্ষেপ করেনি।
একুশের নির্বাচনেও প্রচারের সময় বিজেপি নেতাদের মুখ থেকে নানা কদর্য আস্ফালন করা হয়েছিল। তার ফসল হিসাবে নির্বাচনে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ বাংলার জনগণ এই ধরনের মন্তব্যকে সমর্থন করেনি। বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার এখানেই থেমে থাকেননি। তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি, ‘তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও নেতা যদি গুণ্ডাগিরি করতে আসে তাহলে তার হাত–পা গুটিয়ে দেবেন। তারপর আমার কাছে আসবেন৷ মামলা হলে আমি ছাড়াব।’ এই মন্তব্য জেলার রাজনীতির সমীকরণে রক্তপাত ঘটাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।
বিজেপি বিধায়ক এই মন্তব্য করলে তার সমালোচনা করেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী তথা জেলা সভাপতি আলোরানি দেবী। তিনি বলেন, ‘বিধায়ক একজন সোনা, গাঁজা পাচারকারী। অসমের গুয়াহাটিতে ধরা পড়ে জেলও খেটেছেন। তাঁর মুখ থেকে আর কী আশা করা যায়! নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য অষ্টম শ্রেণি পাশের নকল শংসাপত্র দিয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে আমি হাইকোর্টে মামলা করেছি। তাই বিধায়কের কথার আমি কোন উত্তর দিতে চাই না।’