গতকাল সন্দেশখালি যাওয়ার পথে বিজেপি নেতারা আইপিএস জসপ্রীত সিংয়ের সঙ্গে বচসায় জড়িয়েছিলেন। সেই সময়ই নাকি তাঁকে 'খলিস্তানি' বলে আখ্যা দিয়েছিলেন কোনও এক বিজেপি নেতা। পরবর্তীতে আইপিএস অফিসার নিজে দাবি করেন, শুভেন্দু অধিকারী নিজেই নাকি 'খলিস্তানি' আক্রমণ শানিয়েছিলেন তাঁকে। এই আবহে এবার মুখ খুললেন বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিংহ আহলুওয়ালিয়া। বাংলা থেকে বিজেপির একমাত্র শিখ সাংসদ তিনি। এহেন সুরিন্দর নাকি আনন্দবাজার পত্রিকাকে এই ইস্যুতে বলেন, 'মূর্খের কথায় এত বিচলিত হওয়া উচিত নয়।' (আরও পড়ুন: আধার নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে রাজ্যের কাছে একদিনে জমা পড়ল কত অভিযোগ? সামনে এল তথ্য)
আরও পড়ুন: আঁধার ঘুচল আশার! আধার বিতর্কে অনিশ্চিত হয়েছিল পরীক্ষায় বসা, অবশেষে মিটল সমস্যা
সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের মুখে বিজেপি নেতা বলেন, 'এক জন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষকে কখনও খলিস্তানি তকমা দেওয়া যায় না। এটা অনুচিত। যে এই কথা বলেছে, তিনি মূর্খ। ভারতের স্বাধীনতা থেকে দেশের উন্নয়নে শিখ সম্প্রদায়ের অবদান নিশ্চিত ভাবে তার জানা নেই। কোনও মূর্খের কথায় তাই এত বিচলিত হওয়া উচিত না। শিখদের প্রতি বিজেপির সম্মান ছিল, আছে, থাকবে।' এরপর সুরিন্দর আরও দাবি করেন, অগ্নিমিত্রা পাল বা শুভেন্দু অধিকারী আইপিএস অফিসারকে 'খলিস্তানি' তকমা দিয়েছেন বলে তিনি মনে করেন না। তিনি বলেন, 'দেশের জন্য শিখদের অবদান তাঁরা জানেন। তাঁরা দু’জনেই অভিজ্ঞ রাজনীতিক এবং শিক্ষিত মানুষ। রেগে গিয়েও তাঁরা ওই কথা বলতে পারেন বলে মনে করি না।' এদিকে দলের তরফ থেকে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ বা রাজ্যের শিক্ষ সম্প্রদায়ের মানভঞ্জনের দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হয়নি বলে জানান সুরিন্দর। তবে দল বললে, বাংলায় বসবাসরত শিখ সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান তিনি।
এদিকে সুরিন্দরের আরও বক্তব্য, কে এই কথা বলেছে, তা কেউ দেখেননি। তবে তাঁর দলের কেউ যদি এই কথা বলে থাকেন, তাহলে তাঁর ক্ষমা চেয়ে নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে সুরিন্দর বলেন, 'এই স্পর্শকাতর ঘটনার ভিডিয়ো রাজ্যবাসীর সামনে এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। প্রশাসক হিসেবে এটা তাঁর করা উচিত হয়নি। এই ঘটনার তদন্তের দাবি জানাচ্ছি আমি। এই ঘটনায় দোষীর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি আমি।'
উল্লেখ্য, গতকাল সন্দেশখালি যাওয়ার পথে পুলিশি বাধার মুখে পড়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপি নেতারা। এক শিখ আইপিএস অফিসার সেখানে শুভেন্দুদের আটকেছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় বিজেপি নেতারা সেই আইপিএস অফিসারকে 'খলিস্তানি' আখ্যা দিয়েছিলেন। পরে সেই বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামেন শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি নেতা দাবি করেন, তারা অন্য ধর্মকে আঘাত করে কিছু বলেননি। তবে এবার অভিযোগ, শুভেন্দু অধিকারী নিজেও নাকি আইপিএস জসপ্রীত সিংকে 'খলিস্তানি' আখ্যা দিয়েছিলেন। এক পঞ্জাবি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আইপিএস অফিসার নিজেই শুভেন্দুর নামে এই অভিযোগ করেছেন। আর সেই সাক্ষাৎকারের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন সাংবাদিক মহম্মদ জুবায়ের। জুবায়েরের সেই পোস্ট শেয়ার করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ।
এই বিতর্কের মাঝেই অবশ্য শুভেন্দু অধিকারী পালটা দাবি করেছেন, 'এই ধরনের মন্তব্য করি না। এই ধরনের কথা বলাকে আমরা কোনওভাবেই সমর্থন করি না। তিনি নিজের নম্বর বাড়ানোর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অসত্য তথ্য পরিবেশন করেছেন। আমরা কোনও ধর্মকে আক্রমণ করে কোনও দিন কিছু বলিনি, কোনওদিন কিছু বলবও না।'