পশ্চিমবঙ্গে বহু মানুষের কাছেই সাম্প্রতিককালে এসেছিল আধার নিষ্ক্রিয়তার চিঠি। ইউআইডিএআই থেকে সেই সব চিঠি পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন অনেকেই। এরই মাঝে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, আধার নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ জানানোর জন্য রাজ্য সরকার একটি পোর্টাল চালু করবে। এহেন পরিস্থিতিতে এই ইস্যুর সমাধানে মঙ্গলবার থেকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি চ্যাটবট (৯০৮৮৮৮৫৫৪৪) চালু করে রাজ্য সরকার। সেই চ্যাটবটের মাধ্যমে নাকি অন্তত ১৫০ জন মানুষ তাদের আধার নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ জানিয়েছে রাজ্য সরকারের কাছে। (আরও পড়ুন: 'আধার নিষ্ক্রিয়তায় BJP-র বিরুদ্ধে চলে যেতে পারে বাংলা', শঙ্কিত শুভেন্দুর চিঠি মোদীকে)
আরও পড়ুন: 'খলিস্তানি' তকমা পাওয়া নিয়ে মুখ খুললেন IPS নিজে, কুণালের খোঁচা, 'মোদীও কি তবে…'
জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের নির্দেশে আধার নিষ্ক্রিয়তার সমস্যায় ভুক্তভোগী সব নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। যাতে কোনও নাগরিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হন, সেই চেষ্টাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এদিকে অভিযোগ উঠেছে, দেশজুড়ে নাকি সাম্প্রতিক সময়ে ৩২ কোটি আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করা হয়। এর মধ্যে এই রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, জলপাইগুড়ি, হুগলি ও মালদার বহু মানুষের আধার কার্ড রয়েছে। এই আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় হওয়ার জেরে নাকি ব্যাঙ্কে লেনদেন করা যাচ্ছে না। মিলছে না কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা বা রেশন।
উল্লেখ্য, আধার নিষ্ক্রিয় হওয়ার ঘটনায় বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই বাংলার সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। জেলায় জেলায় বহু মানুষের কাছে ইউআইডিএআই-এর তরফ থেকে চিঠি যাচ্ছে। তাতে বলা হচ্ছে, আধার আইনের ২৮এ ধারার অধীনে আধার নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে। এই বিতর্কের আবহে ময়দানে নামেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দাবি করেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে 'ভোট কাটতে' বিজেপি ইচ্ছে করে আধার নিষ্ক্রিয় করছে বহু মানুষের। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার আলাদা পদক্ষেপ করেছে। এই সবের মাঝেই 'সিএএ'-কে হাতিয়ার করা বিজেপি শঙ্কিত হয়। শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, শান্তনু ঠাকুররা ময়দানে নামেন। শুভেন্দু দাবি করেন, চক্রান্ত হচ্ছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নাকি নিষ্ক্রিয় হয়েছে কিছু আধার। অপরদিকে শান্তনু ঠাকুর গোটা ঘটনায় ক্ষমা চেয়ে নেন। সঙ্গে নিজের ফোন ও ইমেল আইডি দিয়ে আধার নিষ্ক্রিয় হওয়া ব্যক্তিদের যোগাযোগ করতে বলেন। আর গত সোমবার সুকান্ত বলেছিলেন, মঙ্গল সকালের মধ্যে সবার আধার আবার সক্রিয় হবে। তবে মঙ্গলে বাংলার আরও বহু মানুষ আধার নিষ্ক্রিয়তার চিঠি পান। আর মঙ্গলেই বাংলার সরকারের তরফে চালু করা হয়েছে আধার নিষ্ক্রিয়ার অভিযোগ জানানোর পোর্টাল।
এর আগে মমতা দাবি করেছিলেন, আধার নিষ্ক্রিয় হলেও রাজ্য সরকারের কোনও পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবেন না কেউ। প্রয়োজনে রাজ্য 'আলাদা কার্ড' দেবে বলেও ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আবহে মোদীকে একটি চিঠি লিখে শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, 'আধার নিয়ে নাক গলানোর অধিকার নেই রাজ্য সরকারের। মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের দায়রায় হস্তক্ষেপ করছেন।' শুভেন্দুর দাবি, এই ঘটনায় মমতাকে তীব্র তিরস্কার করা উচিত কেন্দ্রের। এর জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি করেন তিনি।