বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > অন্যান্য জেলা > চলে গেল আরও একটা জগদ্ধাত্রী পুজো, কবে কাটবে আলো শিল্পের অন্ধকার?

চলে গেল আরও একটা জগদ্ধাত্রী পুজো, কবে কাটবে আলো শিল্পের অন্ধকার?

পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার চন্দননগরের আলোকসজ্জার খ্যাতি জগৎজোড়া৷ (ছবি সৌজন্য পায়েল সামন্ত/ডয়চে ভেলে)

বহু ব্যয়ে রাজ্য সরকারের তৈরি আলোর হাব এখনও চালু হয়নি৷

পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার চন্দননগরের আলোকসজ্জার খ্যাতি জগৎজোড়া৷ কিন্তু করোনার জেরে আলোকশিল্পীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন৷ বহু ব্যয়ে রাজ্য সরকারের তৈরি আলোর হাব এখনও চালু হয়নি৷ প্রশ্ন উঠেছে, কবে কাটবে আলোক শিল্পের অন্ধকার?

চন্দননগরের আলোর কাজ নিয়ে দেশ-বিদেশের মানুষেরা উৎসাহী৷ লকডাউন এবং কোভিড পেরিয়ে এ বছর কিছুটা হাল ফিরেছে আলোর শহরে৷ এই শহরের প্রধান উৎসব জগদ্ধাত্রী পুজো সদ্য শেষ হয়েছে৷ এই পুজোতেই শহরের শিল্পীরা শ্রেষ্ঠ আলোর প্রদর্শনী করেন৷ স্থানীয় বাসিন্দা ও বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব তুষার ভট্টাচার্য বলেন, ‘এটা চন্দননগরের ঐতিহ্য ও পরম্পরা৷ শ্রীধর দাসের হাত ধরে চন্দননগরে আলোকসজ্জা শিল্পে পরিণত হয়েছে৷ টুনি থেকে আজকের এলইডি বালব, সবেতেই তারা স্বচ্ছন্দ৷'

আলো শিল্পীদের কথা ভেবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলোর হাব তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিলেন৷ এতে ব্যবসায়ীদের দোকানঘর দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল৷ পরিকল্পনা ছিল প্রশিক্ষণ দেওয়ারও৷ গত ৮ ফেব্রুয়ারি আলোর হাব প্রকল্পের উদ্বোধন হয়৷ কী অবস্থা সেই হাবের?

২০১৯ সালে কারিগরি শিক্ষা দফতরের উদ্যোগে ১৫ কোটি টাকায় চন্দননগর স্টেশন সংলগ্ন কেএমডিএ পার্কের দু'বিঘা জমিতে হাব তৈরির কাজ শুরু হয়৷ এখানে ৬০টি দোকানে প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা ব্যবস্থার পাশাপাশি শিল্পকর্ম প্রদর্শনের সুযোগ রয়েছে৷ এমন সুযোগ পেয়েও কেন দূরে রয়েছেন শিল্পীরা? আদতে কোভিডকালে আর্থিক সংকটে রয়েছেন তাঁরা৷ উৎসবে সংক্রমণের ভ্রূকুটি থাকায় ব্যবসার হাল খারাপ৷ তাই বাগবাজার থেকে বিদ্যালঙ্কার পর্যন্ত রাস্তার পাশে নানা সামগ্রীর বিক্রেতা হয়ে উঠেছেন শিল্পীরা৷ কারও মুদি দোকান, কেউ মাছ-মাংস-আনাজ বিক্রি করছেন৷ কেউ খুলেছেন আটাকল৷

ফটকগোড়ার পিন্টু ইলেকট্রিকের কর্ণধার পিন্টু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘লকডাউনের জন্য কাজ-কারবার ভালো হয়নি৷ আর্থিক অবস্থা ভালো নেই৷ সবাইকে দোকান নিতে বলা হয়েছিল, কিন্তু সবার পক্ষে টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি৷' বিদ্যালঙ্কার কলুপুকুর রোডের সাহা ইলেকট্রনিকসের কর্ণধার মনোজ সাহার আলোর দোকানে এখন মুদিখানার পসরা৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘উদ্বোধনের আগের দিন জানতে পারি, আলোর হাবে টাকা দিয়ে ঘর নিতে হবে৷ প্রথমে আড়াই লাখ টাকা ও মাসে সাড়ে তিন হাজার টাকা দিতে বলা হয়৷ এত টাকা কী করে দেব? আমাদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের অনেকবার বৈঠক হয়েছে৷ কয়েকজন শিল্পী কিছু টাকা দিয়েছেন৷ কিন্তু আমরা প্রায় শদেড়েক শিল্পী বলেছি, টাকা দিতে পারব না৷'

মনোজের বক্তব্য, ‘আমাদের নিজস্ব কারখানা ও গুদাম আছে৷ তার পাশাপাশি আলোর হাবে লোক রাখা ও আলোর খরচ আছে৷ কোভিডের জেরে ব্যবসারই অবস্থা খারাপ, তার উপর এত খরচ সামলাব কী করে!' আলোকশিল্পীদের সংগঠন ‘চন্দননগর লাইট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন'-এর সম্পাদক বাবু পাল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘প্রথমে ঘরের জন্য লক্ষাধিক টাকা চাওয়া হয়েছিল৷ আলোকশিল্পীদের অনুরোধে সেটা ৫০ হাজারে নামে৷ কিন্তু তাতেও ১৬-১৭ জন হাজার দশেক টাকা করে জমা দিয়েছেন৷ ডিপোজিটের অঙ্ক আরও কমানোর জন্য আমরা ফের চিঠি দিয়েছি৷'

ফলে বিপুল টাকা ব্যয়ে নির্মিত হাব কবে আলোকিত হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে৷ চন্দননগরে তেমন সাড়া না মেলায় রাজ্য সরকার বিকল্প পথ নিচ্ছে বলে জানান বাবু পাল৷ তিনি বলেন, ‘টেন্ডারের মাধ্যমে চন্দননগরের বাইরের আলোকশিল্পীদেরও হাবে ঠাঁই দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার৷ কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া-সহ হুগলির অন্যান্য এলাকার শিল্পীরাও টেন্ডারে অংশ নিতে পারবেন৷ বাইরের শিল্পীরা এলে চন্দননগরের নিজস্বতা থাকবে কিনা সন্দেহ আছে৷'

যদিও এই আশঙ্কাকে গুজব বলেই মনে করছেন চন্দননগর পুর কমিশনার স্বপন কুণ্ডু৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘প্রক্রিয়া চলার সময় এ ধরনের গুজব ছড়ায়৷ তাতে গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই৷ চন্দননগরের শিল্পীদের জন্যই মূলত আলোর হাব৷ আলোর উৎকর্ষ ও বিপণন দুই ক্ষেত্রেই এই হাব দিশা দেখাবে৷ তবে কারিগরি শিক্ষা দপ্তর এই বিষয়টা দেখছে৷'

এই ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে রাজ্যের কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী হুমায়ুন কবীরকে ফোন করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি৷

(বিশেষ দ্রষ্টব্য : প্রতিবেদনটি ডয়চে ভেলে থেকে নেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিবেদনই তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কোনও প্রতিনিধি এই প্রতিবেদন লেখেননি।)

বাংলার মুখ খবর

Latest News

ভিনেশ ফোগাট চাননি আমরা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করি: আইনজীবী হরিশ সালভের দাবি কালীঘাটের বাড়িতে জুনিয়র ডাক্তারদের ডাকলেন মমতা! তবে মানা হল না ১টা শর্ত ‘একদিকে অসুরপালক…’,নীল-সাদা হাওয়াই চটির উপর দেবীর পা! ছবি পোস্ট BJP-র রুদ্রনীলের ‘‌যে যা খাবার দিচ্ছে খাবেন না’‌, ধরনা মঞ্চে দিদির সতর্কবার্তা জুনিয়র ডাক্তারদের দলীপে পরপর উইকেট হারালেও বুক চিতিয়ে লড়লেন অভিমন্যু!দলের লজ্জা ঢাকলেন শতরানে… 'মানুষের মধ্যেই দেবতা খুঁজে পাই', ডাক্তারদের জন্য সিদ্ধ ডিম বিতরণ মহিলার ভর দুপুরে কলকাতায় ব্যস্ত রাস্তার পাশে পরিত্যক্ত ব্যাগে বিস্ফোরণ, উড়ে গেল হাত 'হাতটা ক্রমেই শরীরের নিচের দিকে…' অরিন্দম শীলের বিরুদ্ধে সরব আরও এক অভিনেত্রী 'ত্রিপলগুলো গুনে নেবেন', ডাক্তারদের কাছে মমতা যাওয়ার পরে বললেন ‘বং গাই’, শতরূপরা তাজমহলের প্রধান গম্বুজ ফুটো হয়ে জল পড়ছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়ো ভাইরাল

Copyright © 2024 HT Digital Streams Limited. All RightsReserved.