রাজ্য সরকার ২০২৪ সালেই দেউচা পাঁচামি কয়লা খনি প্রকল্পের খননকাজ শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছে। প্রায় ৩৪০০ একর জায়গায় অবস্থিত দেউচা–পাঁচামি কয়লা খনি। এই কয়লা খনি খননের প্রথম পর্যায়ের কাজ হয়েছিল এক বছর আগে। আর এবার দ্বিতীয় পর্যায়ের খননের কাজ দ্রুত শুরু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। এবার রাজ্য সরকার ব্যাসল্ট খনির জন্য শীঘ্রই গ্লোবাল টেন্ডার ডাকতে চলেছে। বীরভূমে এই কয়লা খনি রয়েছে। এবার এই গ্লোবাল টেন্ডারের কথা প্রকাশ্যে বলেছেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
এদিকে দেউচা পাঁচামি প্রস্তাবিত খনি প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বেশিরভাগ সমীক্ষা এবং নমুনা পরীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। ভূতাত্ত্বিক সমীক্ষার চূড়ান্ত রিপোর্ট আগামী মে মাসে হাতে চলে আসবে। তারপরই সেখানে কয়লা উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলে সূত্রের খবর। বীরভূমে বিপুল কয়লার ভাণ্ডার আছে জানার পরেই জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু করেছিল রাজ্য সরকার। তার জন্য জমিদাতাদের পুনর্বাসন এবং চাকরির ব্যবস্থা করে রাজ্য সরকার। এবার দ্বিতীয় পর্যায়ের খননের কাজ শুরু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। এই জমির উপরের স্তরে রয়েছে ব্যাসল্টের স্তর। সেগুলি তুলতে গিয়ে প্রচুর কাদা, মাটি, রাবিশ এবং ধুলো উঠে আসবে।
আরও পড়ুন: অঞ্চল সভাপতির পদ থেকে অপসারিত শাহজাহানের ভাই সিরাজ, দায়িত্বে এলেন অজিত
অন্যদিকে এই ব্যাসল্ট স্তরের জন্যই গ্লোবাল টেন্ডার ডাকা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী যখন পোলিশ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কথা বলছিলেন তখনই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এদিন অরূপ বিশ্বাস পোল্যান্ডের এই প্রতিনিধি দলের প্রধান জেকুব চেলসটোস্কি সঙ্গে বৈঠক করেন। তাঁরা কলকাতায় এসেছেন। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ সচিব শান্তনু বোস। সূত্রের খবর, এই বেসাল্ট স্তরের জন্য গ্লোবাল টেন্ডার মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে ডাকা হতে পারে। এই কাজ সুচারুভাবে হলে রাজ্যের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির উন্নয়ন ঘটবে। কয়লা উৎপাদনের ক্ষেত্রে রাজ্য পুরোপুরি স্বনির্ভর হয়ে উঠবে। রাজ্যের কয়লা খনিগুলি থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে কয়লা জোগানো সম্ভব হবে।
এছাড়া ব্যাসল্ট খনির কাজ প্রথম ধাপ কয়লা খনি উত্তোলনের ক্ষেত্রে। দেউচা পাঁচামি কয়লা খনি থেকে ডব্লুবিপিডিসিএল কয়লা নেবে। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই ৪২০ একর জায়গা চিহ্নিত করেছে ব্যাসল্ট খনির। বেসাল্ট স্তরের নীচে প্রায় ১০০–২০০ মিটার তলায় কয়লা মিলেছে। এখানে যে পরিমাণ কয়লা আছে তাতে রাজ্যের আয় হতে পারে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। যা বাংলার অর্থনীতিকে একটি সুনির্দিষ্ট দিকে পরিচালনা করবে। দেউচা পাঁচামি কয়লা খনি থেকে যে কয়লা পাওয়া যাবে তার মান অত্যন্ত উন্নত।