রবিবারই সম্পর্কের মেরামতি হয়েছিল দু’জনের। তাঁরা হলেন, তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ শতাব্দী রায় এবং জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এবার কেষ্টর জেলায় বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলকে মাথায় রেখে নেতৃত্বে রদবদল করা হল। তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। এই রদবদলে কার লাভ হল? কার লোকসান হল? তাই নিয়ে চর্চা তুঙ্গে উঠেছে।
বিধানসভা নির্বাচনে এই জেলায় ভাল ফল হয়েছে। কেষ্টর ভাষায় যাকে বলা যায় ‘ভয়ঙ্কর খেলা হয়েছে’। তবে কয়েকটি এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের ফল খারাপও হয়েছে। সেই ফলাফলের বিশ্লেষণে এবার বীরভূম জেলা নেতৃত্বে রদবদল করল দল। এই জেলার ১১টি আসনের মধ্যে ১০টিতেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ১টি আসন পেয়েছে বিজেপি। পাশাপাশি ৬টি পুরসভার মধ্যে পাঁচটিতেই খারাপ ফল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সুতরাং নেতৃত্ব বদল নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছিল।
এবার জেলা কমিটির বৈঠকে বড়সড় রদবদল করা হল জেলা নেতৃত্বের। বোলপুরে জেলার দলীয় কার্যালয়ে কমিটির বৈঠকের ডাকা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, সাংসদ শতাব্দী রায়–সহ জেলার বিধায়ক এবং নেতা–কর্মীরা। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে প্রায় ৪০টি অঞ্চল সভাপতির বদল করা হয়েছে। প্রত্যেক ব্লক সভাপতির সঙ্গে একজন করে কার্যকরী ব্লক সভাপতি রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেখানে হিন্দু ব্লক সভাপতি আছে সেখানে একজন মুসলিম ব্লক কার্যকরী সভাপতি রাখা হয়েছে, আর যেখানে মুসলিম ব্লক সভাপতি রয়েছেন সেখানে হিন্দু কার্যকরী সভাপতি রাখা হয়েছে। বিজেপির হিন্দুত্বের লাইনকে জবাব দিতেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। আবার কয়েকটি পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ ও বুথ সভাপতিদেরও বদল করা হয়েছে বলেও সূত্রের খবর।
কিন্তু কেন জেলা নেতৃত্বে এভাবে বদল করা হল? এই নিয়ে কথা বলতে চাননি অনুব্রত মণ্ডল। তবে সাংসদ শতাব্দী রায় বলেন, ‘এটা পরীক্ষার মতো বিষয়। বারবার ফেল করলে কিছু পরিবর্তন দরকার হয়৷ সেই মতোই নেতৃত্ব বদলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। যা আগামী দিনের জন্য যথেষ্ট ভাল।’ আর জেলা সভাপতির সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি নিয়ে শতাব্দী বলেছেন, ‘আমি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে নাম করে কিছু বলিনি। আমার বক্তব্য ছিল সিস্টেমের বিরুদ্ধে। তাতে দরকারি রদবদল হয়েছে। আজকের বৈঠকে যে সব এলাকায় দল পিছিয়ে সেখানে হারের কারণ খতিয়ে দেখা হয়েছে। পরে ব্লক সভাপতিদের সঙ্গেও বসবো। কোনও এলাকায় বারবার হারলে বদলে দেওয়া হবে নেতৃত্বকে।’