রাজ্যে বাজ পড়ে মৃত্যুর ঘটনা বাংলায় বাড়ছে। গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান সেটাই বলছে। বাজ পড়ে দুর্ঘটনা এড়াতে কলকাতার পার্কগুলিতে লাইটিং কন্ডাক্টর বা বজ্রপাত নিরোধক যন্ত্র আগে বসানো হয়েছে। এবার দমদমের পার্ক এবং খেলার মাঠগুলিতে এই বিশেষ যন্ত্র বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে দমদম পুরসভা। এই যন্ত্রের ফলে বাজ পড়া থেকে দুর্ঘটনা অনেকটাই এড়ানো যাবে বলে মনে করছে দমদম পুরসভার কর্তারা। সাধারণত খেলার মাঠ এবং পার্কগুলি ফাঁকা জায়গায় অবস্থিত হওয়ায় সেখানে এই যন্ত্র বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মাটি থেকে ৩০ মিটার উঁচুতে এই যন্ত্র বসানো হবে। বাজ পড়লেই এই যন্ত্রটি দ্রুত বিদ্যুতের তরঙ্গ মাটিতে টেনে নেবে। ফলে পার্কে বা মাঠে থাকা কোনও শিশু বা ব্যক্তি দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে যাবেন এবং বিপদ এড়ানো সম্ভব হবে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এক একটি যন্ত্র বসাতে খরচ হবে ৫০ হাজার টাকা। যদিও কবে এই যন্ত্র বসানো হবে সে বিষয়ে এখনও নির্দিষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি। তবে দ্রুতই এই যন্ত্র বসানো হবে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন:বাজ পড়ল এক ব্যক্তির উপর! পুরোটাই ধরা পড়ল ভিডিয়োয়, দেখে নিন সেটি
প্রসঙ্গত, কলকাতার পার্কগুলিতে এই যন্ত্র অনেক আগেই বসিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। তা সত্ত্বেও সপ্তাহ দুয়েক আগেই কলকাতায় বাজ পড়ে দুই মহিলার মৃত্যু হয়েছে। ধাপার মাঠে এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল। তবে এই যন্ত্র বসানোর পর পার্কগুলিতে বজ্রপাত সেইভাবে ঘটেনি। তাই কলকাতা পুরসভার পথে হেঁটে পার্ক এবং মাঠগুলিতে বর্জ্য নিরোধক যন্ত্র বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দমদম পুরসভা। যদিও বাজ যে শুধু পার্কেই পড়বে তা নয়, যেকোনও জায়গাতেই পড়তে পারে। এবিষয়ে পুরসভা জানিয়েছে, ধীরে ধীরে জনবহুল এলাকাতে এই যন্ত্র বসানো হবে।
প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যাবে বাংলায় বাজ পড়ে মৃত্যু ঘটনা অন্যান্য রাজ্যের থেকে অনেকটাই বেশি। পুনের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটেরিওলজির বিজ্ঞানী পার্থসারথি মুখোপাধ্যায় সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা ও বাংলা এই তিন রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায় অনেকটাই বেড়েছে বাজ পড়ার হার। তারফলে বাড়ছে মৃত্যু। বজ্রপাত বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছিলেন। যার প্রধান কারণ হিসেবে তিনি বনাঞ্চল হ্রাস পাওয়াকে চিহ্নিত করেছিলেন। তাছাড়া, বিশ্ব উষ্ণায়ন, জলাভূমির সংখ্যা হ্রাস পাওয়া এই সবের কারণে বাতাসে দূষিত অ্যারোসলের পরিমাণও। আর এতেই বজ্রপাতের হার বাড়ছে বলে তিনি দাবি করেছিলেন।